আটকে গেল নতুন কারিকুলামের বই

Dhaka Post Desk

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক

৩০ এপ্রিল ২০২১, ০২:৪৩ এএম


আটকে গেল নতুন কারিকুলামের বই

অবশেষে আটকে গেল ২০২২ সালের জন্য নতুন কারিকুলামে চারটি শ্রেণির বই ছাপার কার্যক্রম। বিশেষজ্ঞদের বাদ দিয়ে দেশি-বিদেশি বেসরকারি সংস্থার মাধ্যমে নতুন কারিকুলাম তৈরি করায় প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণি এবং মাধ্যমিকের ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির বই ছাপার কার্যক্রম আটকে দিয়েছে শিক্ষা এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।

এতে ২০২২ সালে নতুন কারিকুলামে বই পাবে না শিক্ষার্থীরা। ফলে ২০২২ সালে পুরাতন সিলেবাসেই বই ছাপাতে হবে। এ নিয়ে  ঢাকা পোস্ট একাধিক প্রতিবেদন প্রকাশ করে। 

নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রস্তাবিত নতুন শিক্ষাক্রমে ২০২২ সালে মাধ্যমিক স্তরের ১০০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণিতে পাইলটিং (পরীক্ষামূলকভাবে) নতুন শিক্ষাক্রমের কাজ হবে। এরপর ২০২৩ সালে গিয়ে এই দুটি শ্রেণির শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন শিক্ষাক্রমের বই দেওয়া হবে। একই ভাবে প্রাথমিক স্তরের ১০০টি প্রতিষ্ঠানে পাইলটিং করে ২০২৩ সালে নতুন কারিকুলামে বই দেওয়া হবে।

বৃহস্পতিবার (২৯ এপ্রিল) শিক্ষা এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এ সংক্রান্ত এক সভায় এসব সিদ্ধান্ত নেয়। সভায় শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেনসহ জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি), মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতর, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর এবং শিক্ষা বোর্ডের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অংশ নেন।

জানতে চাইলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. মাহবুব হোসেন বলেন, যেহেতু প্রাথমিক মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সমন্বয়ের একটু সমস্যা ছিল তাই আগামী শিক্ষাবর্ষ ২০২২ সালের পরিবর্তে ২০২৩ সাল থেকে নতুন কারিকুলামে বই দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। আগামী শিক্ষাবর্ষে দুই স্তরে ১০০টি প্রতিষ্ঠানে নতুন কারিকুলাম নিয়ে পাইলটিং করা হবে। তারপর তা বাস্তবায়ন করা হবে।

এর আগে গত ১৮ এপ্রিল এনসিটিবিকে বিদ্যমান কারিকুলামে প্রাথমিকের বই ছাপাতে চিঠি দিয়েছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। চিঠিতে বলা হয়েছে, এখনও আপনারা (এনসিটিবি) কারিকুলাম চূড়ান্ত করতে পারেননি, ফ্রেমওয়ার্ক অনুমোদন নেননি। ফ্রেমওয়ার্ক অনুমোদনের পরে কারিকুলামের অনুমোদন নিতে হবে। অনুমোদন প্রক্রিয়া শেষ করে পাঠ্যপুস্তক লেখা জুন মাসের মধ্যে শেষ করতে পারবেন না। টেন্ডার শিডিউল পিছিয়ে যাবে। বছরের প্রথম দিন বই দেওয়া সম্ভব হবে না। এসব কারণ দেখিয়ে পুরাতন কারিকুলামে প্রাথমিকের বই ছাপাতে বলা হয়েছে।

কারিকুলাম বিশেষজ্ঞদের বাদ দিয়ে বিদেশি এনজিওদের তৈরি করা কারিকুলামের বই প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় বাস্তবায়ন করবে না। তাই গত রোববারের সভায়ও তাদের আগের সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দিয়েছে।

উল্লেখ্য, শ্রেণিকক্ষে পরীক্ষা নির্ভরতা কমাতে কারিকুলাম যুগোপযোগী করার উদ্যোগ নেয় সরকার। লক্ষ্য ছিল ২০২১ সাল থেকে ধাপে ধাপে নতুন কারিকুলামে বই শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দেওয়া হবে। কিন্তু করোনার কারণে এক বছর পিছিয়ে আগামী ২০২২ শিক্ষাবর্ষ থেকে প্রাথমিকে ১ম, ২য় এবং মাধ্যমিকে ৬ষ্ঠ, ৭ম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের নতুন কারিকুলামে বই তুলে দেওয়া হবে। সেজন্য জোরেশোরে কাজ করছিল জাতীয় পাঠ্যক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। বিশেষজ্ঞদের বাদ দিয়ে দেশি-বিদেশি বেসরকারি সংস্থার মাধ্যমে নতুন কারিকুলাম তৈরি করায় এ জটিলতা তৈরি হলো, যাতে শেষ পর্যন্ত নতুন কারিকুলামে বই ছাপার থেকে সরে আসতে হলো। 

এনএম/এইচকে

Link copied