উচ্চশিক্ষা ও চাকরিতে কওমি শিক্ষার্থীদের সুযোগ চায় আল-হাইআতুল উলয়া

কওমি মাদরাসা শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষা ও কর্মসংস্থানের সুযোগ প্রদানের লক্ষ্যে মাননীয় ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ.ফ.ম. খালিদ হোসেনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন কওমি মাদরাসার সর্বোচ্চ অথরিটি আল-হাইআতুল উলয়া লিল-জামি‘আতিল কওমিয়া বাংলাদেশ-এর একটি উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধি দল।
আজ সোমবার(৫ মে) দুপুর ২টায় সংস্থাটির কো-চেয়ারম্যান আল্লামা শেখ সাজিদুর রহমানের নেতৃত্বে নয় সদস্যবিশিষ্ট একটি প্রতিনিধিদল ধর্ম উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাত করেন। বৈঠকে কওমি মাদরাসার ‘দাওরায়ে হাদীস’ (তাকমীল) সনদের স্বীকৃতি বাস্তবায়নের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা হয়।
আল-হাইআতুল উলয়া’র অফিস ব্যবস্থাপক মু. অছিউর রহমান সাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়।
প্রতিনিধি দলটি সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে কওমি সনদধারীদের চাকরি ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ প্রসারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য সরকারকে আহ্বান জানায়।
এর আগে সকাল ১১টায় বোর্ডের চেয়ারম্যান মুহিউস সুন্নাহ আল্লামা মাহমুদুল হাসানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ‘দাওরায়ে হাদীস সনদ কার্যকরকরণ-সংক্রান্ত সাবকমিটি’র সভায় প্রস্তাবনা তৈরি করা হয়।
প্রস্তাবনায় আল্লামা মাহমুদুল হাসান বলেন, কওমি মাদরাসা থেকে দাওরায়ে হাদীস সম্পন্নকারী ছাত্ররা দেশের আদর্শ ও চরিত্রবান নাগরিক। তাদেরকে রাষ্ট্রীয় সুযোগ-সুবিধার আওতায় আনা ন্যায়সঙ্গত দাবি।
সভায় কওমি সনদধারীদের জন্য যেসব কর্মক্ষেত্রকে অগ্রাধিকারভিত্তিতে বিবেচনার প্রস্তাব দেওয়া হয়, তা হলো— ক. শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ধর্মীয় ও নৈতিক শিক্ষক পদে নিয়োগদান; খ. ইসলামিক ফাউন্ডেশন ও বিভিন্ন ইসলামী গবেষণা প্রতিষ্ঠানে নিয়োগদান; গ. মডেল মসজিদসহ সরকারি মসজিদ এবং সরকারি ও স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠানসমূহের মসজিদের ইমাম ও খতিব পদে নিয়োগদান; ঘ. সামরিক, আধাসামরিক বাহিনীসহ বিভিন্ন বাহিনীতে ধর্মীয় শিক্ষক পদে নিয়োগদান;ঙ. জেলখানার ধর্মীয় শিক্ষক পদে নিয়োগদান; চ. মুসলিম নিকাহ রেজিস্ট্রার (কাজি) পদে নিয়োগদান।
আরও পড়ুন
সভায় সিদ্ধান্ত হয়, দাওরায়ে হাদীসধারীদের ‘ইসলামিক স্টাডিজ’ ও ‘আরবি’ বিষয়ে এমফিল ও পিএইচডি করার সুযোগ এবং অন্যান্য বিষয়ে মাস্টার্সে ভর্তির সুযোগ সৃষ্টি করা জরুরি।
প্রাথমিক পর্যায়ে ধর্ম উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক এবং পরবর্তী সময়ে শিক্ষা উপদেষ্টা ও প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাতের পরিকল্পনার কথাও সভায় জানানো হয়।
বৈঠকে ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ.ফ.ম. খালিদ হোসেন প্রস্তাবিত দাবিগুলো মনোযোগ দিয়ে শোনেন এবং তা বিবেচনার আশ্বাস দেন। তিনি বলেন,ধর্মীয় শিক্ষায় শিক্ষিত নাগরিকগণ রাষ্ট্রের জন্য আশীর্বাদস্বরূপ। তাদের প্রাপ্য মর্যাদা ও সুযোগ নিশ্চিত করা সরকারের দায়িত্ব।
সভায় কওমি মাদরাসাগুলোর স্বাধীনতা ও স্বকীয়তা রক্ষায় দৃঢ় অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করা হয়। বিশেষভাবে দারুল উলূম দেওবন্দের ঐতিহাসিক আট মূলনীতির প্রতি অনুগত থেকে সরকারের কোনো হস্তক্ষেপ ছাড়া চলার গুরুত্ব তুলে ধরা হয়।
সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন মাওলানা মুফতি আরশাদ রাহমানী, মাওলানা মুছলেহ উদ্দিন রাজু, মাওলানা মাহফুজুল হক, মাওলানা বাহাউদ্দিন জাকারিয়া, মাওলানা আব্দুল বছীর, মুফতি মোহাম্মদ আলী এবং মাওলানা নেয়ামাতুল্লাহ আল-ফরীদী।
এনটি
