শিক্ষা আনন্দময় না হলে টেকসই হয় না : দেবব্রত চক্রবর্তী

জাতীয় উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরোর (বিএনএফই) ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক দেবব্রত চক্রবর্তী বলেছেন, শিক্ষা আনন্দময় না হলে টেকসই হয় না৷ আর শুধু লিখতে-পড়তে জানলেই সাক্ষরতা পূর্ণ হয় না। কার্যকর সাক্ষরতা বলতে বোঝায় জীবনদক্ষতা অর্জন। এজন্য ঝরে পড়া শিশু, কর্মজীবী কিশোর-কিশোরী, প্রান্তিক জনগোষ্ঠী ও নারীদের জন্য ব্যুরো এখন কর্মমুখী শিক্ষা ও দক্ষতা উন্নয়নে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে।
শনিবার (৬ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবে নিমো লার্নিং এর আয়োজনে ‘স্বাক্ষরতায় বাংলাদেশের অর্জন এবং আগামীর পরিকল্পনা’ শীর্ষক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন।
দেবব্রত চক্রবর্তী বলেন, দেশে সরকারি হিসাবে সাক্ষরতার হার ৭৭ দশমিক ৯ শতাংশ হলেও, পড়ার দক্ষতায় ঘাটতি রয়েছে। প্রাথমিক স্তরে ১৬ শতাংশ এবং মাস্টার্স পর্যায়ে ৩৫ শতাংশ শিক্ষার্থী যথাযথভাবে পড়তে পারে না। এই বাস্তবতায় কেবল সাক্ষরতা নয়, দক্ষতা ও জীবনমুখী শিক্ষা নিশ্চিত করতে হবে।
আরও পড়ুন
তিনি জানান, আনুষ্ঠানিক বিদ্যালয় থেকে নানা কারণে ঝরে পড়া শিশুদের আবারো প্রচলিত স্কুলে ফেরানো কঠিন। তাই তাদের জন্য প্রাকৃতিমূলক বা নমনীয় শিক্ষার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এর অংশ হিসেবে ‘১০০ ঘণ্টার সাক্ষরতা শিক্ষা’ এবং ‘৩৬০ ঘণ্টার কারিগরি প্রশিক্ষণ’ বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। বর্তমানে মোটর মেকানিক্স, ফ্রিজ-এসি মেরামত, সেলুনকর্মীসহ বিভিন্ন ট্রেডে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।
সম্প্রতি কক্সবাজারে একটি পাইলট প্রকল্পের মাধ্যমে ৬ হাজারের বেশি শিক্ষার্থীকে কর্মসংস্থানের সাথে যুক্ত করা সম্ভব হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, এই অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে ৬৪ জেলায় কর্মসূচি বিস্তৃত করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। সাক্ষরতার ধারাবাহিকতা রক্ষায় ‘পোস্ট লিটারেসি’ ও ‘কন্টিনিউয়াস লার্নিং’ খুব জরুরি। এজন্য জীবনব্যাপী শিক্ষা এবং লোকশিক্ষা গ্রন্থমালা পুনরুজ্জীবনের ওপর গুরুত্বারোপ করা হচ্ছে। পাশাপাশি নৈতিক শিক্ষার প্রয়োজনীয়তাও তুলে ধরেন তিনি।
তিনি বলেন, আমরা চাই শিক্ষা যেন আনন্দময় হয়। আনন্দ ছাড়া কোনো শিক্ষা টেকসই হতে পারে না। এজন্য প্রযুক্তি নির্ভর শিক্ষার প্রসার, ই-লার্নিং প্ল্যাটফর্ম, ভিডিও-কনটেন্ট ব্যবহার এবং স্থানীয় বাস্তবতার আলোকে কাস্টমাইজড ট্রেড চালুর পরিকল্পনা রয়েছে বলেও জানান তিনি।
সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার। বিশেষ অতিথি হিসেবে আলোচনা করেন গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব সোহরাব হাসান, সাবেক শিক্ষিকা ও অভিনেত্রী দিলারা জামান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. কুতুবউদ্দিন, বিএনসিসির সাবেক মহাপরিচালক অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাহিদুল ইসলাম খান।
আরএইচটি/এমএসএ