সাত কলেজ : দ্রুত সেশন শেষ করতে নেওয়া পরিকল্পনার অগ্রগতি নেই

Dhaka Post Desk

ঢাকা কলেজ প্রতিবেদক 

০৪ আগস্ট ২০২১, ০২:০২ পিএম


সাত কলেজ : দ্রুত সেশন শেষ করতে নেওয়া পরিকল্পনার অগ্রগতি নেই

সেশনজট নিরসনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) অধিভুক্ত সাত কলেজের স্নাতকের এক বছরের সেশন আট মাসে শেষ করার কথা থাকলেও এখন পর্যন্ত এই পরিকল্পনার অগ্রগতি নেই। 

আদৌ পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হবে কি না বা হলে কিভাবে সময় সংক্ষিপ্ত করে সেশন সম্পন্ন করা হবে সে বিষয়েও সাধারণ শিক্ষার্থীরা জানে না কিছুই। 

২০১৭ সালে রাজধানীর সরকারি সাতটি কলেজকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত করা হয়। অনেকটা প্রস্তুতিবিহীন অধিভুক্তি কার্যক্রমের ফলে সাতটি কলেজের বিশালসংখ্যক শিক্ষার্থীদের শিক্ষা কার্যক্রম গুছিয়ে নিতে বেশ বেগ পোহাতে হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও সাত কলেজ প্রশাসনকে। নানা সীমাবদ্ধতার ফলে সেশনজট, ঠিক সময়ে পরীক্ষা নিতে না পারা, ফলাফল প্রকাশে দীর্ঘসূত্রিতা, ভুল ফলাফল প্রকাশ, গণহারে ফেলসহ বিভিন্ন সমস্যার ফলে সাত কলেজের শিক্ষা কার্যক্রম নিয়ে কিছুটা অনিশ্চয়তা তৈরি হয়। এরপর পরিস্থিতি সামলে নিলেও এখন আবারও করোনার সংক্রমণের কারণে দীর্ঘদিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় সেশনজট আগের অবস্থায় ফিরেছে। 

তাই সেশনজট নিরসনে শিক্ষাবর্ষ নির্দিষ্ট সময়ের আগেই শেষ করার পরিকল্পনার কথা গত এপ্রিল মাসে জানিয়েছিলেন ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষ ও সাত কলেজের সমন্বয়ক অধ্যাপক আই কে সেলিম উল্লাহ খোন্দকার। তিনি বলেছিলেন, ‘পূর্ব থেকেই বিদ্যমান সেশনজট ও করোনার ক্ষতি কমাতে সেশন সংক্ষিপ্ত করার বিষয়টি আমরা ভাবছি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের বছরভিত্তিক সেশনকে আট মাস করার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হলে সাত কলেজেও আমরা সেটা কার্যকর করবো। এছাড়াও আমাদের আগে থেকেই কোর্সের সময় কমিয়ে আনার বিষয়ে পরিকল্পনা ছিল। আমরা সাত কলেজ কো-অর্ডিনেশন করে আট মাসের মধ্যে কোর্স শেষ করার চেষ্টা করবো। শিক্ষার্থীদের কোর্স শেষের বিষয়ে আপত্তি না থাকলে আট-নয় মাসের মধ্যে পরীক্ষাও নিয়ে নেব।’

তবে এমন পরিকল্পনার কথা জানানোর পর থেকে এখন পর্যন্ত দীর্ঘ সময় পার হলেও এটি বাস্তবায়নে কোনো রূপরেখা বা দৃশ্যমান কার্যক্রম দেখা যায়নি।

তাই শিক্ষার্থীদের দাবি, ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে সময় ও সিলেবাস সংক্ষিপ্ত করে দ্রুততম সময়ের মধ্যে চূড়ান্ত পরীক্ষা নিতে হবে ও ফলাফল প্রকাশ করে সেশনজট নিরসনে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। 

ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী সোহেল রানা বলেন, করোনার কারণে আমাদের অনেক সময় নষ্ট হয়েছে। তাই আমরা চাই করোনা পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হলেই যেন দ্রুততম সময়ের মধ্যে সিলেবাস ও সেশন সংক্ষিপ্ত করে চূড়ান্ত পরীক্ষা নিয়ে নেওয়া হয়। একই সাথে যেন অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ফলাফল দ্রুততম সময়ের মধ্যে প্রকাশিত হয় সেটিও নিশ্চিত করতে হবে। এতে করে আমাদের ক্ষতি কিছুটা হলেও কমবে।

ইডেন মহিলা কলেজের শিক্ষার্থী সুমাইয়া মীম বলেন, সময় ও সিলেবাস সংক্ষিপ্তকরণের মাধ্যমে দ্রুত যদি সেশন সম্পন্ন করা হয়, তবে আমাদের অনেক উপকার হবে। কেননা করোনার কারণে এমনিতেই অনেক সময় নষ্ট হয়েছে। আমরা চাই দ্রুতই যেন এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের রূপরেখা ও বিস্তারিত তথ্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে সাধারণ শিক্ষার্থীদের জানানো হয়। 

এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) ও সাত কলেজের প্রধান সমন্বয়ক অধ্যাপক ড. এএসএম মাকসুদ কামাল ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘সাত কলেজের প্রিন্সিপালদের কাছ থেকে রিকুইজিশনটা (দাবিপত্র) এলে আমরা নিশ্চিত হতে পারবো যে তারা এটি বাস্তবায়ন করতে পারবেন কি না। তবে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিকল্পনার রয়েছে।’

এছাড়াও আগামী ৫ আগস্টের পর সাত কলেজের অধ্যক্ষদের নিয়ে মিটিংয়ের সার্বিক বিষয়ে বিস্তারিত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।  

তবে সরকারি সাত কলেজের সমন্বয়ক ও  ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক আই কে সেলিম উল্লাহ খোন্দকার বলেন, সেশন সংক্ষিপ্ত করার সিদ্ধান্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিলের। যদি বিশ্ববিদ্যালয়ে এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হয় তাহলে আমাদের ক্ষেত্রেও সেটা হবে। তবে আমরা চাইছি পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হলেই অগ্রাধিকার ভিত্তিতে শিক্ষার্থীদের চূড়ান্ত পরীক্ষা দ্রুততম সময়ের মধ্যে নিতে।  

এছাড়াও সেশনজট নিরসনে আটকে থাকা চূড়ান্ত পরীক্ষা নেওয়ার জন্য অনলাইনে পরীক্ষা নিতে শিক্ষার্থীদের সক্ষমতা যাচাইয়ের জন্য ইতোমধ্যেই কার্যক্রম শুরু হয়েছে বলেও জানান অধ্যক্ষ। 

আরএইচটি/এনএফ

Link copied