কবে খুলছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জানা যেতে পারে আজ

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের চলমান ছুটি শেষ হচ্ছে ১১ আগস্ট। এরপর স্কুল কলেজ খোলার সিদ্ধান্ত নিতে পারে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। ইতোমধ্যে এমন ইঙ্গিত দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। তবে আজকের বৈঠকে দেশের করোনা পরিস্থিতি নিয়ে আন্তঃমন্ত্রণালয় ও করোনা মোকাবিলায় সরকারের গঠিত পরামর্শক কমিটির মতামত নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
জানা গেছে, দ্রুত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলতে আজ বুধবার (১ সেপ্টেম্বর) যৌথ সভায় বসতে যাচ্ছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। এরপর তা গণমাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হবে। বৈঠকে শিক্ষা, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী-উপমন্ত্রী, সচিব, মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ বিভিন্ন অধিদফতর ও বিভাগের প্রধানরা উপস্থিত থাকবেন। এছাড়াও স্বাস্থ্য অধিদফতরের প্রতিনিধি, করোনা মোকাবিলায় সরকার গঠিত জাতীয় পরামর্শক কমিটির সদস্যসহ সংশ্লিষ্ট দফতর প্রধান উপস্থিত থাকবেন।
গত বৃহস্পতিবার (২৬ আগস্ট) করোনা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার বিষয়ে আন্তঃমন্ত্রণালয়ের বৈঠক শেষে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের থেকে জানানো হয়, করোনা মহামারির কারণে বন্ধ থাকা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের চলমান ছুটি আগামী ১১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। করোনা পরিস্থিতি সন্তোষজনক থাকলে এরপর ধাপে ধাপে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হবে।
ওই বৈঠকে বিশ্ববিদ্যালয় খোলার বিষয়ে আলোচনা হলেও স্কুল কলেজ খোলার ব্যাপারে পরবর্তী বৈঠকে বসে সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা জানানো হয়। বৈঠকে শিক্ষামন্ত্রী জানান, স্বাস্থ্যবিধি মেনে আগামী ১৫ অক্টোবরের মধ্যে শর্ত সাপেক্ষে ধাপে ধাপে বিশ্ববিদ্যালয় খোলা যেতে পারে। এ জন্য কোন বিশ্ববিদ্যালয় কতজন শিক্ষক-শিক্ষার্থী টিকা নিয়েছেন (প্রথম-দ্বিতীয় ডোজসহ বিস্তারিত) তার তথ্য ছক আকারে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনে (ইউজিসি) পাঠাতে হবে।
গত কয়েকদিন ধরে করোনা সংক্রমণের হার নিম্নমুখী। মঙ্গলবার (৩১ আগস্ট) পরীক্ষার তুলনায় সংক্রমণের হার ছিল ১৪ দশমিক ৭৬ শতাংশ। মঙ্গলবার ১৫.১২ আর সোমবার ১৫.৫৪ শতাংশ ছিল সংক্রমণের হার।
বিশেষজ্ঞদের ধারণা, সেপ্টেম্বরের মধ্যে সংক্রমণের হার অনেক নেমে যেতে পারে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) মানদণ্ড অনুযায়ী, কোনো দেশ বা এলাকার সংক্রমণ ৫ শতাংশে নেমে এলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া যায়।
এদিকে দ্রুত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলার ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। এ জন্য বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষে পুনরায় পাঠদান দেওয়ার জন্য সব রকমের পূর্ব প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে সরকার। মঙ্গলবার (৩১ আগস্ট) প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে এ সংক্রান্ত আদেশ জারি করা হয়েছে।
আদেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ থেকে শিক্ষার্থীদের সুরক্ষার জন্য আগামী ১১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সব ধরনের সরকারি/বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও কিন্ডারগার্টেনে শ্রেণিকক্ষে পাঠদান বন্ধ রাখার নির্দেশনার কথাও উল্লেখ করা হয়েছে।
আজকে বৈঠকে যেসব সিদ্ধান্ত আসতে পারে
সংক্রমণের হার কত শতাংশ হলে প্রাথমিক থেকে মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হবে এবং ১২ বছরের নিচের শিক্ষার্থীদের মাস্ক না ফেসশিল্ড পরবে- এই দুটি বিষয় চূড়ান্ত হবে আজকের সভায়।
কোভিড-১৯ বিষয়ক জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ডা. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ বলেন, গত বৈঠকে এ প্রস্তাব আমাদের কাছে লিখিতভাবে জানানো জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে বলা হয়। তখন শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আগামী রবি অথবা সোমবারের মধ্যে আমরা লিখিতভাবে জানাবো। ১২ বছর পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের ফেসশিল্ডের পরিবর্তে মাস্ক ব্যবহার করা যায় কি না এসব বিষয়ে আজকের সভায় সিদ্ধান্ত নেব।
উল্লেখ্য, ২০২০ সালে ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হওয়ার পর ১৭ মার্চ থেকে এখনো পর্যন্ত বন্ধ রয়েছে দেশের সব স্তরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এরপর গত ১৭ মাসে মোট ২২ দফা ছুটি বাড়ানো হয়েছে। এর মধ্যে ২৪ মে ও ১৩ জুন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েও করোনার ঊর্ধ্বগতির কারণে তা সম্ভব হয়নি।
এনএম/এসকেডি