গ্রিন ইউনিভার্সিটির ছাত্রের মৃত্যু : ঘটনাস্থল পরিদর্শনে তদন্ত দল

Dhaka Post Desk

ঢাকা পোস্ট ডেস্ক

২৪ জানুয়ারি ২০২১, ০৩:১৭ পিএম


গ্রিন ইউনিভার্সিটির ছাত্রের মৃত্যু : ঘটনাস্থল পরিদর্শনে তদন্ত দল

রিপন আহমেদের মৃত্যুর ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের দাবিতে কেরানীগঞ্জের আব্দুল্লাহপুর ভাওয়ারভিটি এলাকায় মানববন্ধন

গ্রিন ইউনিভার্সিটির ফিল্ম, টেলিভিশন অ্যান্ড ডিজিটাল মিডিয়া (এফটিডিএম) বিভাগের শেষবর্ষের শিক্ষার্থী রিপন আহমেদ নিহতের ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। শনিবার (২৩ জানুয়ারি) সকালে কমিটি কেরানীগঞ্জে রিপনের লাশ উদ্ধারের ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। পরে নিহতের পরিবার ও দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা পুলিশের সঙ্গে কথা বলেন কমিটির সদস্যরা।

তদন্ত কমিটিতে আছেন গ্রিন ইউনিভার্সিটির প্রক্টর ও ইংরেজি বিভাগের চেয়ারম্যান ওয়াজেদ কবির, এফটিডিএম বিভাগের চেয়ারপারসন ড. ওলিউর রহমান ও আইন বিভাগের অধ্যাপক আরিফুল হক।

• ১১ জানুয়ারি রাতে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জে আবর্জনার স্তুপ থেকে লাশ উদ্ধার
• রিপনের পরিবারের দাবি, তাকে ব্যবসায়িক কারণে হত্যা করা হয়েছে
• এ ঘটনায় ১৩ জানুয়ারি কেরানীগঞ্জ থানায় মামলা হয়েছে

গত ১১ জানুয়ারি রাতে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার করেরগাও রোডের পাশে আবর্জনার স্তুপ থেকে রিপন আহমেদের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে ময়নাতদন্তের জন্য লাশ মিটফোর্ড হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়। রিপনের মৃতদেহে অনেক আঘাতে চিহ্ন ছিল। প্রাথমিকভাবে পুলিশের ধারণা, সড়ক দুর্ঘটনায় এ মৃত্যু হয়েছে। তবে রিপনের পরিবারের দাবি, তাকে ব্যবসায়িক কারণে হত্যা করে কে বা কারা ফেলে রেখে গেছে।

আমার ভাইকে যারা হত্যা করেছে, তাদের আইনের আওতায় আনা হোক।

নিহত রিপনের ভাই মো. রায়হান

এ ঘটনায় ১৩ জানুয়ারি ইদ্রিস আলী দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় মামলা করেন। রিপনের ভাই মো. রায়হান বলেন, ‘রিপনকে হত্যা করা হয়েছে। আমাদের দাবি, ঘটনাটির সুষ্ঠু তদন্ত করা হোক। আমার ভাইকে যারা হত্যা করেছে, তাদের আইনের আওতায় আনা হোক।’

বিশ্ববিদ্যালয়টির সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম বিভাগের চেয়ারম্যান ও তদন্ত কমিটির সদস্য অলিউর রহমান বলেন, ‘রিপনের মৃত্যুর ঘটনা তদন্ত করতে গ্রিন ইউনিভার্সিটির পক্ষ থেকে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের চেয়ারম্যান ও প্রক্টর ওয়াজেদ কবির এ কমিটির প্রধান। আরেকজন সদস্য আইন বিভাগের অধ্যাপক আরিফুল হক।’

রিপনের মৃত্যুর বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করছি। আমরা এখনও বিষয়টি নিয়ে সংশয়ে আছি।

তদন্ত কমিটির প্রধান ওয়াজেদ কবির

তদন্ত কমিটির প্রধান ওয়াজেদ কবির বলেন, ‘রিপনের মৃত্যুর বিষয়ে আমরা তথ্য সংগ্রহ করছি। আমরা এখনও বিষয়টি নিয়ে সংশয়ে আছি। 

তিনি বলেন, ‘আমাদের ইউনিভার্সিটির তদন্ত কমিটি রিপনের মৃত্যুর বিষয়ে সত্যে উপনীত হতে চায়। আমাদের, পুলিশ ও সংবাদকর্মীদের উদ্দেশ্য একই। আমরা সবাই সত্য জানতে চাই।’

এফটিডিএম বিভাগের শিক্ষার্থী নাট্য অভিনেতা ঝুনা চৌধুরী বলেন, ‘রিপনের মৃত্যুর ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্ত হোক। রিপনের পরিবার যেন ন্যায়বিচার পায়।’

এদিকে রিপন আহমেদ নিহতের ঘটনায় গত ১৩ জানুয়ারি দুপুর ১টায় রাজধানীর বেগম রোকেয়া সরণিতে গ্রিন ইউনিভার্সিটির সিটি ক্যাম্পাসে মানববন্ধন ও প্রতিবাদসভা করেন বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। ‘সড়ক দুর্ঘটনা না-কি পরিকল্পিত হত্যা’ ব্যানারে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধনে রিপনের মৃত্যুর সুষ্ঠু তদন্ত করে জড়িতদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনার দাবি জানান শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।

এফটিডিএম ও সাংবাদিকতা বিভাগের চেয়ারপারসন ড. অলিউর রহমান বলেন, ‘পুলিশ সড়ক দুর্ঘটনার কথা বললেও পরিবারের দাবি রিপনকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যায়ের লেখাপড়া শেষ করে রিপন যখন সফল উদ্যোক্তার জীবন শুরু করতে যাচ্ছে সেসময়ই তার জীবন গেল। এই মৃত্যু মেনে নেওয়া কষ্টকর।’

বিভাগের শিক্ষক ও স্টুডেন্ট অ্যাফেয়ার্সের সহকারী পরিচালক ড. আফজাল হোসেন খান এবং সহকারী প্রক্টর ড. মেহেদী হাসান এই মৃত্যুর দ্রুততম তদন্ত ও সুষ্ঠু বিচার দাবি করেন।

বিভাগীয় শিক্ষক মনিরা শরমিন বলেন, ‘পুলিশের ভাষ্য অনুযায়ী রিপনের মৃত্যুর কারণ সড়ক দুর্ঘটনা। এ ধরনের দুর্ঘটনাগুলো আসলে একপ্রকার পরিকল্পিত হত্যা। এরকম দুর্ঘটনা যেন ভবিষ্যতে আর না ঘটে সে লক্ষ্যে এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার অত্যন্ত জরুরি।’

এইচকে

Link copied