চলতি শিক্ষাবর্ষ জুলাই পর্যন্ত বাড়ানোর দাবি

Dhaka Post Desk

নিজস্ব প্রতিবেদক

২২ ডিসেম্বর ২০২১, ০৮:২৫ পিএম


চলতি শিক্ষাবর্ষ জুলাই পর্যন্ত বাড়ানোর দাবি

করোনা মহামারির কারণে দীর্ঘদিন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে শিক্ষার্থীরা। তাই চলতি শিক্ষাবর্ষ আগামী বছরের জুলাই পর্যন্ত বাড়ানোর দাবি জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

বুধবার (২২ ডিসেম্বর) সিএমপিই, আহসানিয়া মিশন এবং সিভিল সোসাইটি অরগানাইজেশন (সিএসও) অ্যালায়েন্সের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত ‘বাংলাদেশের সুবর্ণজয়ন্তীতে শিক্ষাখাতের অর্জন, চ্যালেঞ্জ ও করণীয়’ শীর্ষক এক ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে এমন দাবি জানানো হয়।

ওয়েবিনারের সভাপতি এডুকেশন ওয়াচের চেয়ারপারসন ও শিক্ষাবিদ ড. কাজী খলিকুজ্জামান বলেন, করোনা পরিস্থিতিতে প্রায় দুই বছর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ছিল। এর ফলে শিক্ষার্থীরা তাদের সিলেবাস থেকে পিছিয়ে পড়েছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা হলেও ক্লাস অনুযায়ী শিক্ষার্থীর জ্ঞানের মূল্যায়ন হচ্ছে না।

তিনি বলেন, বর্তমানে অটোপাস দিয়ে সব শিক্ষার্থীকে পরবর্তী ক্লাসে তুলে দেওয়া হচ্ছে। এতে শিক্ষার্থীরা আরও পিছিয়ে থাকবে। নতুবা পরবর্তী ক্লাসে গেলে তারা নানা ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হবে।

ড. কাজী খলিকুজ্জামান বলেন, শিক্ষার্থীদের অটোপাসের বদলে প্রয়োজনে চলতি শিক্ষাবর্ষ বৃদ্ধি করে তা জুলাই পর্যন্ত নিতে হবে। শিক্ষার্থীদের ক্ষতি কীভাবে পূরণ করা সম্ভব সে বিষয়ে শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ ও এ সংক্রান্ত নির্দেশনা তৈরি করে দিতে হবে। তার আলোকে ক্লাসে পড়াতে হবে।

অনুষ্ঠানের সঞ্চালক গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে চৌধুরী বলেন, মাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে জাতীয়করণের আওতায় আনতে হবে। প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের এগিয়ে নিতে একীভূত শিক্ষা বাস্তবায়ন করতে হবে।

তিনি বলেন, আমাদের নীতি আছে, আইন আছে তারপরও তা বাস্তবায়ন হচ্ছে না। সরকারকে তা বাস্তবায়ন করতে হবে।

করোনায় প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীরা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে উল্লেখ করে আলোচকরা বলেন, প্রতিবন্ধীরা হচ্ছে সমাজের মানুষের একটি বৈচিত্র্য। এমনিতেই প্রতিবন্ধী শিক্ষাকে অবহেলার চোখে দেখা হয়ে থাকে, তার ওপরে করোনার কারণে এ স্তরের অধিকাংশ শিক্ষার্থী ঝড়ে গেছে।

তারা বলেন, উচ্চ মাধ্যমিক পর্যন্ত প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের জন্য একীভূত শিক্ষা বাস্তবায়ন করতে হবে। এ শিক্ষাকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আওতায় এনে প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের উপযোগী করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অবকাঠামো তৈরি করার দাবি জানান তারা।

প্রধান অতিথি জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, বেকারত্ব নিরসনে কর্মমুখী শিক্ষাকে গুরুত্ব দিচ্ছে সরকার। একইসঙ্গে দেশের উন্নয়নধারাকে অব্যাহত রাখতে সবার জন্য শিক্ষার কোনো বিকল্প নেই। আর সেকারণেই সরকার পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী, প্রতিবন্ধকতা নিয়ে বেড়ে ওঠা শিক্ষার্থীদের জন্য বিভিন্ন ইতিবাচক উদ্যোগ হাতে নিয়েছে। শিক্ষাখাতকে আরও সুদৃঢ় করতে সবাইকে সমন্বিতভাবে কাজ করার আহবান জানান তিনি।  

ওয়েবিনারে গণসাক্ষরতা অভিযানের প্রোগ্রাম ম্যানেজার ড. মোস্তাফিজুর রহমান কি-নোট উপস্থাপন করেন। সেখানে তিনি পঞ্চাশ বছরে শিক্ষাখাতে বাংলাদেশের অর্জনগুলো তুলে ধরতে গিয়ে জানান, বর্তমানে স্বাক্ষরতার হার শতকরা ৭৫ ভাগেরও বেশি, যা স্বাধীনতার পর ছিল মাত্র ১৬ ভাগ। স্বাক্ষরতার হারে এগিয়ে গেলেও এখনও ২৫ লাখ শিক্ষার্থী স্কুলের বাইরেই রয়েছে আর প্রতি ৫ জনে একজন ঝরে পড়ছে। শিক্ষাখাতে বিদ্যমান চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলায় সমন্বিত উদ্যোগের উপর গুরুত্ব দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় বিষয়ক সংসদীয় স্ট্যান্ডিং কমিটির সদস্য অ্যারোমা দত্ত, ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক এমিরিটাস ড. মানজুর আহমেদ, ব্র্যাকের নির্বাহী পরিচালক আসিফ সালেহ, গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব শাইখ সিরাজ, আহশানিয়া মিশনের নির্বাহী প্রধান ডা: এম একছানুর রহমান প্রমুখ।

এএজে/আইএসএইচ

Link copied