শিল্পী মনন মুনতাকার একক শিল্প প্রদর্শনী

শুক্রবার (২৮ জুলাই) বিকেলে রাজধানীর লালমাটিয়ার কলাকেন্দ্রে শুরু হচ্ছে ‘টেক্সচার এন্ড মিক্সচার’ শিরোনামে শিল্পী মনন মুনতাকার প্রথম একক শিল্প প্রদর্শনী (আলোকচিত্র, ভিডিও, অডিও)। প্রদর্শনীটি উদ্বোধন করবেন লেখক ও অর্থনীতিবিদ আনু মোহাম্মদ।
এ বিষয়ে মনন মুনতাকা বলেন, ‘২০২১ সালে ভাবনাটি আমার মাথায় আসে। আমি তখন প্রথমবারের মতো শিল্পীদের একটি দলের সঙ্গে দিনাজপুরে গিয়েছিলাম। স্থানীয় বিভিন্ন সম্প্রদায়ের সঙ্গে দেখা ও কথা বলার পর উরাওঁ, মারোয়াড়ি এবং বিহারিদের জীবন নথিভুক্ত করতে থাকলাম ২০২৩ সালের মার্চ পর্যন্ত। কাজটি সম্পন্ন হয়েছে ডাইভারসিটি ফেলোশিপের সহায়তায় ও সেন্টার ফর এন্টারপ্রাইজ অ্যান্ড সোসাইটির পৃষ্ঠপোষকতায়। এটি একটি আত্মঅনুসন্ধানমূলক প্রকল্প হিসেবে শুরু হয়েছিল, তবে একজন ভিজ্যুয়াল শিল্পী হিসেবে, আমি আমার সংগৃহীত তথ্য উপাত্তগুলো চিত্রিত করতে চেয়েছিলাম ভিজ্যুয়াল মাধ্যমে।
তিনি আরও বলেন, ‘এই কাজের মাধ্যমে আমি বিভিন্ন জাতি, ধর্ম, বর্ণ, লিঙ্গ এবং ভাষার মানুষের সঙ্গে দেখা করার সুযোগ পেয়েছি। ভাষাগত, সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক এবং এমনকী ধর্মীয় পার্থক্য থাকা সত্ত্বেও তারা বছরের পর বছর ধরে একসঙ্গে থেকে আসছেন। তারা তাদের দক্ষতা একে অন্যের সঙ্গে বিনিময় করে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আরও বেশি দৃঢ় হয়েছেন। গবেষণা করার সময়, আমি তাদের মধ্যে একটি ছন্দ আবিষ্কার করলাম যা আমাকে তাদের বৈচিত্র্যময় জীবন এবং এর সৌন্দর্য নিয়ে একটি গল্প গাঁথতে উৎসাহিত করে । আমি আমার শিল্পকর্মে তাদের ঘরের দেয়ালের গঠনবিন্যাস ব্যবহার করেছি তাদের বিবর্ণ অস্তিত্বকে তুলে ধরার জন্য। স্থির এবং চলমান ছবি এবং অডিও রেকর্ডিংয়ের মাধ্যমে, আমি তাদের জীবনযাত্রা নথিভুক্ত করার চেষ্টা করেছি। আমি যত বেশি এই কাজে জড়িত হয়েছি, আমি আরও বুঝতে পেরেছি যে অনেক গল্প ইতোমধ্যেই হারিয়ে গেছে, শুধুমাত্র নথিভুক্তকরণের অভাবে।
শিল্পীর কথায়, ‘এই সম্প্রদায়গুলোর সঙ্গে কাজ করার জন্য গবেষক এবং শিল্পীদের জন্য প্রচুর সুযোগ রয়েছে। এখনই আমাদের তাদের নিয়ে কাজ করার উপযুক্ত সময়। কারণ সব কিছু খুব দ্রুত পরিবর্তন হচ্ছে। সামাজিক-সাংস্কৃতিক নিপীড়ন এবং গুরুতর বৈষম্যের সম্মুখীন এই সম্প্রদায়গুলো খুব দ্রুত তাদের ইতিহাস, ভাষা, আচার-অনুষ্ঠান, গান এবং ধর্মগ্রন্থের সংরক্ষণের অধিকার হারাচ্ছে। এই প্রদর্শনীতে আমি আশেপাশের সেই মানুষগুলোর গল্প তুলে ধরেছি, যাদের সম্পর্কে খুব কমই প্রচার করা হয়।
জানা গেছে, প্রদর্শনীটি সকলের জন্য উন্মুক্ত থাকবে। আগামী ৫ আগস্ট পর্যন্ত প্রতিদিন বিকেল ৪টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত চলবে এই প্রদর্শনী।
কেএইচটি