আমার গানের গলার ক্রেডিট শাবনূরকেই দিতে চাই : কনকচাঁপা

একজন পর্দার সামনে, অন্যজন কণ্ঠের আবহে; ঢাকাই চলচ্চিত্রের সোনালী দিনের কথা উঠলেই চোখের সামনে ভেসে ওঠে দুই নারী নক্ষত্রের নাম- শাবনূর ও কনকচাঁপা। এই দুইয়ের মেলবন্ধনে এক সময় দর্শক-শ্রোতাদের মন জয় হয়েছে বারবার। শাবনূরের জন্মদিনে তাকে নিয়ে এক আবেগঘন স্মৃতিচারণের মাধ্যমে সেই যুগের অজানা অনেক কথাই যেন স্মরণ করলেন কনকচাঁপা।
বুধবার দুপুরে এক দীর্ঘ পোস্টে নানা কথা লেখেন কনকচাঁপা। ‘শাবনূর, একটি পরিপূর্ণ প্রতিভাময় শিল্পীর নাম যাকে বাংলাদেশ কখনোই ভুলতে পারবে না’- এমন শিরোনাম উল্লেখ করে এই শিল্পী লেখেন, ‘তার অভিনয় শৈলী, তার উচ্চারণ, তার দৈহিক সৌন্দর্য, তার চাঁদপানা মুখশ্রী গোলাপের মতো হাসি এবং তার নয়নযুগল পুরো যুবসম্প্রদায়কে বুঁদ করে রেখেছে কয়েক যুগ। তার রেশ এখনো কাটেনি, কাটবেও না কখনও। এমন প্রতিভার অধিকারী শত জনমে একজনই হয়। তার সমসাময়িক অনেকেই আছেন কিন্তু কাছাকাছি কেউ নেই।’
শাবনূরের অভিনয় জীবনের প্রায় সবকয়টা গানের দৃশ্যে কণ্ঠ দিয়েছেন কনকচাঁপা। এই দীর্ঘ পথচলা নিয়ে শিল্পী বলেন, ‘তার ১০০ টি গানের ৯৯ টিই আমার গাওয়া। আমাদের দুই দেহ এক প্রাণ বলা যায়। আমি আমার মতো গেয়েছি, তিনি তার মতো অভিনয় করেছেন। কিন্তু স্ক্রিনে যখন দেখেছি, তখন আমারই বিশ্বাস হয়নি যে গানটি আমি গেয়েছি! মনে হয়েছে এটা যেন তারই কণ্ঠ। এই যে কণ্ঠ ও অভিনয়ের একাকার হয়ে যাওয়া, এর পুরো ক্রেডিট আমি শাবনূরকেই দিতে চাই।’
কনকচাঁপা লেখেন, ‘ব্যক্তিগত জীবনে তার সাথে আমার খুব কম দেখা হয়েছে। আমার রেকর্ডিং স্টুডিও আর তার কর্মক্ষেত্র আলাদা জায়গায় হওয়াতেই এমন হয়েছে। কিন্তু যখন তাকে দেখেছি, খেয়াল করেছি খুব সহজ সরল তার উপস্থিতি। তার কাঁচভাঙ্গা হাসি আমার মন কেড়ে নিয়েছে। সবারই বোধহয় এভাবে অনুভব হয় । সাধারণ ভাবে দেখা সাক্ষাৎ হলে মনে হয়েছে এই মেয়ে সিরিয়াস অভিনয় করে কিভাবে!’
দীর্ঘ ক্যারিয়ারে একসাথে কাজ করলেও এই দুই নক্ষত্রকে নিয়ে কোনো বিশেষ অনুষ্ঠান না হওয়ায় আক্ষেপ প্রকাশ করেছেন কনকচাঁপা। লিখেছেন, ‘জীবনে কখনো কোন চ্যানেলকে বলিনি আমাকে এমন একটা অনুষ্ঠান দেন। কিন্তু কয়েকটি চ্যানেলে স্বপ্রণোদিত হয়ে বলেছি শাবনূর ও আমাকে নিয়ে একটা প্রোগ্রাম সাজাতে। কিন্তু কোনো চ্যানেলই গা করে নাই। এই বাংলাদেশে মূল্যায়ন পাওয়া খুবই কঠিন তবে আমার বিশ্বাস একদিন আমার গান আর শাবনুরের অভিনয়ের সমন্বয় নিয়ে গবেষণা হবে তখন হয়তো তা দেখার জন্য হয়তো কোন একজন থাকবো না।’
এদিকে নিজের জন্মদিন উপলক্ষে সামাজিক মাধ্যমে ভক্ত ও সহকর্মীদের শুভেচ্ছায় ভাসছেন শাবনূর। বিকেলে একটি কেক কাটার ভিডিও শেয়ার করে তিনি সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান।
শাবনূর লেখেন, ‘এই ভালোবাসা আমার জীবনের সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি ও অনুপ্রেরণা। আপনাদের দোয়া আর ভালোবাসা আমাকে আরও দায়িত্বশীল করে তোলে। হৃদয়ের গভীর থেকে সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ।’
উল্লেখ্য, নব্বই দশকের মাঝামাঝি থেকে শুরু করে পরবর্তী এক দশকেরও বেশি সময় ধরে শাবনূর-কনকচাঁপা জুটি দর্শকদের উপহার দিয়েছেন অসংখ্য কালজয়ী গান, যা আজও মানুষের মুখে মুখে ফেরে।
ডিএ