মৃত্যুর পরই শিল্পী সমিতির সদস্য নায়িকা শিমু!

গত সোমবার (১৭ জানুয়ারি) সকালে ঢাকার কেরানীগঞ্জের হযরতপুর ব্রিজের কাছ থেকে চিত্রনায়িকা রাইমা ইসলাম শিমুর বস্তাবন্দি মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় ইতোমধ্যে শিমুর স্বামী শাখাওয়াত আলী নোবেল ও নোবেলের বন্ধু ফরহাদকে গ্রেফতার করেছে র্যাব। শিমুর স্বামী নোবেল প্রাথমিকভাবে এই হত্যার দায়ও স্বীকার করেছে। জানা গেছে, স্বামীর সঙ্গে দাম্পত্য কলহের জের ধরেই খুন হয়েছেন নায়িকা।
মুত্যুর পর থেকেই ৪১ বছর বয়সী এই নায়িকাকে নিয়ে বেশ চর্চা হচ্ছে সিনেমা পাড়ায়। জানা যায়, ভালো সম্ভাবনা নিয়েই রূপালি পর্দায় পা রেখেছিলেন তিনি। আর তাইতো মাত্র ৬ বছরের ক্যারিয়ারে ২৩ সিনেমায় কাজ করার সুযোগ পেয়েছিলেন শিমু। যেগুলোর পরিচালনায় ছিলেন দেশের অনেক গুণী নির্মাতা।
নায়িকা শিমুর মৃত্যর ঘটনা ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে আসছে ২৮ জানুয়ারি অনুষ্ঠিতব্য বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচনে। কারণ, ২০১৭ সালে মিশা সওদাগর-জায়েদ খান প্যানেল ক্ষমতায় আসার পর শিমুর ভোটাধিকার কেড়ে নেয়। সদস্যপদ বাতিল করে শিমুকে সহযোগী সদস্য করা হয়৷ ফলে সদস্য হিসেবে সুযোগ সুবিধা থেকেও বঞ্চিত ছিলেন প্রয়াত শিমু।
এরপর নিজের ভোটাধিকার ফিরে পেতে সক্রিয়ভাবে আন্দোলন নামেন শিমু। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও এ নিয়ে অনেক কথা বলেছেন তিনি। ফলে সমিতি থেকে ভোটাধিকার হারানো আলোচিত ১৮৪ জন শিল্পীর একজন হিসেবেই সবাই তাকে চেনে।
সদস্যপদ কেড়ে নেওয়ায় গত চার বছর ধরে যে শিমু হয়ে যান সংগঠনটির সহযোগী সদস্য। মৃত্যুর পরদিনই সেই শিমু হয়ে গেলেন সমিতির সদস্য!
শিমুর মৃত্যুতে শোক জানিয়ে গতকাল বুধবার (১৯ জানুয়ারি) এফডিসিতে ব্যানার টানায় মিশা-জায়েদ প্যানেল। যার একটি চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নামে, অন্যটি মিশা-জায়েদ প্যানেলের নামে। ব্যানারগুলোতে শিমুর পরিচয় দেয়া হয়েছে ‘বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সমিতির সদস্য চিত্রনায়িকা শিমু’। এই পরিচয় দৃষ্টি কেড়েছে সবার। জন্ম দিয়েছে আলোচনা-সমালোচনারও।
চলচ্চিত্র শিল্পী ও সংশ্লিষ্টদের অনেকই বিষয়টিকে ভালোভাবে নেননি। তাদের মতে, ‘যে সমিতি গত ৪ বছর ধরে এই নায়িকার সদস্যপদ ফিরিয়ে দেয়নি। নিজের সদস্যপদ হারানোর আক্ষেপ নিয়ে যে নায়িকা মারা গেল, মৃত্যুর পরদিন ব্যানার লাগিয়ে তার নামের পাশে সমিতির সদস্য লেখা বিষয়টি নায়িকার মরদেহের সঙ্গে প্রতারণার সামিল।
আরআইজে