অনেক এমপি-মন্ত্রী আমার কাছে পোস্টার লাগানোর কৌশল জানতে চান
ঢাকা-৭ আসনের পরিচিত মুখ হাজী সেলিম দুর্নীতি মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত হয়ে এবারের নির্বাচন থেকে ছিটকে পড়েছেন। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকার হাল ধরেছেন তারই ছেলে মোহাম্মদ সোলায়মান সেলিম। অপরদিকে আওয়ামী লীগের কাঁধে ভর করে জাতীয় পার্টিও প্রার্থী দিয়েছে এ আসনে। জাতীয় পার্টির হয়ে সোলায়মান সেলিমের সঙ্গে ভোটের মাঠে লড়াই করবেন দলটির প্রেসিডিয়াম সদস্য হাজী সাইফুদ্দিন আহম্মেদ মিলন।
তিনি পোস্টার মিলন নামেও পরিচিত। বিভিন্ন সময় রাজধানীর অলিগলিতে পোস্টার লাগিয়ে আলোচনায় আসেন তিনি। গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় পোস্টার লাগানোর কারণে চিঠি পাঠিয়ে একাধিকবার তাকে সতর্ক করেছে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন (ডিএনসিসি)।
নির্বাচনী প্রচার ও প্রচারণার কৌশল, নির্বাচন ঘিরে শঙ্কা ও প্রত্যাশা, দলীয় হাইকমান্ডের জনবিমুখ সিদ্ধান্ত, নির্বাচনী প্রতিশ্রুতিসহ নানা বিষয়ে কথা বলেছেন ঢাকা পোস্টের সঙ্গে। সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন ঢাকা পোস্টের নিজস্ব প্রতিবেদক মুছা মল্লিক ও রাকিবুল হাসান তামিম।
ঢাকা পোস্ট : এ আসনে প্রায় ৩ লাখ ৪৩ হাজারের বেশি ভোটার। এই বিপুলসংখ্যক ভোটারদের টানতে বিশেষ কোনো পরিকল্পনা করেছেন?
সাইফুদ্দিন আহমেদ মিলন : ঢাকা-৭ আসনে আমি পরিচিত মুখ। সবাই আমাকে ভালোভাবে চেনে। আমি ৪৩ বছর ধরে রাজনীতি করছি। একসময় আমি ফুটবল খেলোয়াড় ছিলাম। আমি ১৯০টা দেশ ভ্রমণ করেছি। ভ্রমণের উপর আমার লেখা ১১টি বই আছে। ৩৪ থেকে ৩৫ বছর আগে খেলাধুলার উপরও বই লিখেছি। আমি ১৯৮৮ সালের বন্যা থেকেই মানব কল্যাণে কাজ করছি। আমার বাবা আমাকে যে পকেট খরচ দিতেন সেটা দিয়েই আমি মানুষকে সহায়তা করতাম।
করোনাকালীন সময়ে দীর্ঘ তিন বছর ধরে আমি নিজ হাতে ঢাকা-৭ আসনের সাধারণ মানুষের জন্য চাল, ডাল, প্রয়োজনীয় পণ্য সামগ্রী নিয়ে পাশে দাঁড়িয়েছি। সেই সুবাদে মানুষ আমাকে একজন সমাজসেবক, দানশীল, ভদ্রলোক হিসেবেই জানে। অনেক প্রার্থীই আছে যাদের মানুষ চেনেই না। তাছাড়া বংশাল থেকে নবাবগঞ্জ পর্যন্ত প্রত্যেকটা বাড়িতেই আমার আত্মীয়-স্বজন, বন্ধুবান্ধব, শুভাকাঙ্ক্ষী আছেন। সেই প্রেক্ষাপটে আমার ব্যাপক জনসমর্থন আছে।
আপনারা জানেন শুরুতে আমি নির্বাচন করব না বলেছিলাম। শেষ পর্যন্ত আমাকে দল থেকে নির্বাচন করার জন্য বলা হয়েছে। সুতরাং আমি আমার এই বিষয়গুলোকে বড় শক্তি হিসেবে মনে করছি।
সবসময় সাধারণ মানুষের পাশে থেকেছি। আপনারা জানেন, আমি একটি বাড়ি নির্মাণ করে গরিব মানুষের জন্য দান করে দিয়েছি। প্রতি বছর শীতে আমি কম্বল বিতরণ করি। দুই ঈদে ঈদ সামগ্রী বিতরণ করি এবং মানুষের চিকিৎসা জন্য প্রতিদিনই টাকা দিচ্ছি। সেজন্য আওয়ামী লীগ-বিএনপি তথা দলমত নির্বিশেষে আমাকে সবাই পছন্দ করে। আপনারা যদি এলাকায় সার্ভে করেন তাহলে দেখবেন এই এলাকায় আমার কোনো বদনাম নেই। এমনকি আমার বিরুদ্ধে কোনো থানায় একটি মামলাও নেই।
আরও পড়ুন
আওয়ামী লীগ-বিএনপিসহ অন্যান্য ইসলামিক দল সবার সঙ্গেই আমার ভালো সম্পর্ক। সবমিলিয়ে নির্বাচনের জন্য আমার সততা, মানুষের পাশে থাকার প্রবণতাকেই বড় শক্তি বলে মনে করছি। মানুষকে ভালোবেসে জয়ী হওয়াই আমার বড় পরিকল্পনা।
ঢাকা পোস্ট : প্রচারণায় কেমন সাড়া পাচ্ছেন?
সাইফুদ্দিন আহমেদ মিলন : ব্যাপক সাড়া পাচ্ছি। আমরা প্রতিদিনই ৫ থেকে ৬টি ওয়ার্ডে গণসংযোগ করছি। দেখেছি সাধারণ মানুষ আমাদের ব্যাপকভাবে গ্রহণ করেছে। আমি যখন আওয়ামী লীগ অধ্যুষিত হিন্দু এলাকা তাঁতিবাজার গিয়েছি সেখানে প্রত্যেক দোকান থেকে নারীরা বের হয়ে বলেছেন ‘আপনাকে ভোট দেব’।
রাস্তাঘাটে ব্যাপকভাবে মানুষ আমাকে বলছে, ‘আমরা আপনাকেই ভোট দেব’। কিন্তু ভোটের দিন গিয়ে যদি দেখি আগেই ভোট দেওয়া হয়ে গেছে তাহলে কিছুই করার নেই! অর্থাৎ নির্বাচন শুরু হওয়ার পর যদি কেন্দ্রগুলোতে সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় না থাকে তাহলে অনেক শঙ্কা আছে। যদি পোলিং এজেন্টদের জোর করে বের করে দেওয়া হয় তাহলে কিন্তু এখানে কিছু করার থাকবে না।
ঢাকা পোস্ট : পোলিং এজেন্টদের বের করে দেওয়ার বা কেন্দ্র দখল হওয়ার সম্ভাবনা আছে বলে আপনি মনে করছেন?
সাইফুদ্দিন আহমেদ মিলন : আমার ধারণা শতভাগ সম্ভাবনা রয়েছে। আজকেও আমাকে বহু লোক ফোন করেছে। বিএনপির বহু মানুষ আমাকে ভোট দিতে যাবে। কারণ তারা জানে মিলন এমপি হলে অন্তত কেউ আর তাদের বিরক্ত করবে না। সবমিলিয়ে আমার ধারণা হচ্ছে, পোলিং এজেন্টদের যদি বের করে দেওয়া হয় তাহলে বিপুল সংখ্যক মানুষ যারা আমাকে ভোট দিতে যাবেন তারা সঠিক জায়গায় ভোট দিতে পারবেন না। আওয়ামী লীগের হারানোর কিছু নেই। তারা ইতোমধ্যেই ক্ষমতায় রয়েছে। সুতরাং আমার এই বিষয়টি নিয়ে শঙ্কা রয়েছে।
ঢাকা পোস্ট : নির্বাচনের পরিবেশ এবং আপনার অবস্থান কেমন দেখছেন?
সাইফুদ্দিন আহমেদ মিলন : ঢাকা শহরে দুটি জায়গায় জাতীয় পার্টির অর্থাৎ জোটের প্রার্থী রয়েছে। আর বাকি সব জায়গায় জাতীয় পার্টির একক প্রার্থী। তবে এর মধ্যে ঢাকা-৭ এবং ঢাকা-৪ আসনে জাতীয় পার্টির প্রার্থীদের বিজয়ী হওয়া সম্ভাবনা রয়েছে। আমার আসনে মানুষ ধরেই নিয়েছে আমি পাস করব। এখন সরকার এবং নির্বাচন কমিশনের এটি দায়িত্ব যে ভোটগুলো সঠিকভাবে গণনা করা। অন্য কোথাও কী হবে জানি না; কিন্তু এখানে ভোটার উপস্থিতি ভালো হবে।
এখানে সরকার এবং নির্বাচন কমিশন যদি দায়িত্ব পালনে ফেল করে তাহলে সরকারের প্রতি আরও অনাস্থা তৈরি হবে। এমনিতেই সরকারের ওপর মানুষের আস্থা নেই। নির্বাচন কমিশনের ওপরও আস্থা নেই। নির্বাচন হচ্ছে প্রশ্নবিদ্ধ। নির্বাচন নিরপেক্ষ হবে না। এখানে যদি জোর জবরদস্তি করে এসব আসনও নিয়ে যাওয়া হয় তাহলে অনাস্থার বিষয়টি আরও বেশি প্রমাণিত হবে।
ঢাকা পোস্ট : এ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত সোলায়মান সেলিম আপনার প্রতিদ্বন্দ্বী। বিষয়টি কীভাবে দেখছেন আপনি?
সাইফুদ্দিন আহমেদ মিলন : দেখুন আল্লাহ নির্ধারণ করেন কে এমপি হবেন বা কার কী হবে। ১৯৯১ সালেই আমার এমপি হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সেটা আমি হতে পারিনি। সেজন্য পুরোটাই আল্লাহর ওপর ছেড়ে দিয়েছি। তবে আমরা তো আওয়ামী লীগের সঙ্গে মারামারি করতে যাব না। এখানকার লোকজন সবাই ভদ্র। ব্যক্তিগত ইমেজ আছে। তারা কেউ ঝগড়াঝাঁটি করতে যাবে না।
আমার ৪৩ বছরের রাজনৈতিক জীবনে আমার বিরুদ্ধে একটা মামলাও হয়নি। আর সোলায়মান সেলিম তো অবশ্যই শক্তিশালী প্রার্থী। তারা যদি শক্তি প্রয়োগ করে বা শক্তি খাটায় তাহলে আমরা নির্বাচন করা কঠিন হয়ে যাবে। অবশ্য এসব দেখার দায়িত্ব প্রশাসনের।
ঢাকা পোস্ট : সরকার এবং জাতীয় পার্টির মধ্যে সমঝোতা হয়েছে। আপনি জাপার প্রেসিডিয়াম সদস্য হয়েও এই সমঝোতা থেকে বাদ পড়লেন কীভাবে?
সাইফুদ্দিন আহমেদ মিলন : আমি তো এই সমঝোতা বিশ্বাসই করি না। আওয়ামী লীগের প্রতিশ্রুতি ভ্রান্ত মনে করি। আওয়ামী লীগ যতবার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে প্রত্যেকবার ভঙ্গ করেছে। ২০১৮ সালে আমাদের ৬০টি সিট দেওয়ার কথা সেখানে আমাদের ২৭ বা ২৮টি সিট দিয়েছে। ২০১৪ সালে একটা সিটও দেওয়া হয়নি। ২০১৮ সালে তো ৫০টি সিট দেওয়ার কথা বলে ২৭ থেকে ২৮টা সিট দিয়েছে। আমি তো সমঝোতার পক্ষেই না। আমাদের কথা ছিল সমঝোতার বাইরে নির্বাচন করব।
ঢাকা পোস্ট: এই আসনে গ্যাস, পানি, বিদ্যুৎসহ নানা সংকট রয়েছে। আপনি নির্বাচিত হলে কোন বিষয়ে গুরুত্ব দেবেন?
সাইফুদ্দিন আহমেদ মিলন : পাকিস্তান আমল থেকে কসাইটুলী, নিমতলা, হোসনী দালানসহ বেশ কয়েকটি এলাকায় বৃষ্টি নামলেই জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। স্বাধীনতার ৫৩ বছর পরেও এ সমস্যার সমাধান হয়নি। এ আসনের বেশিরভাগ জায়গাতেই গ্যাস থাকে না। ড্রেনেজ ব্যবস্থা খুবই খারাপ।
এ আসনে চাঁদাবাজি একটা বড় সমস্যা। কেউ একটি নতুন বাড়ি বানাতে গেলে তাকে চাঁদা দিতে হয়। অনেক জায়গা দখল করে স্থাপনা নির্মাণ করা হয়েছে। পুরান ঢাকা যেহেতু ব্যবসায়িক কেন্দ্র সেহেতু এ অঞ্চলের বিভিন্ন দোকান থেকে চাঁদা তোলা হয়। বড় ব্যবসায়ী চাঁদা দিতে দিতে অস্থির৷ রাস্তাঘাটে বখাটেদের কারণে আমাদের মা-বোনরা ইভটিজিংয়ের শিকার হন৷
এখনো অবহেলিত কিছু মাঠ হয়েছে সেগুলো মেরামত করা দরকার৷ এলাকায় সন্ত্রাসী কার্যক্রম বন্ধ করা দরকার৷ আমি আসনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হলে তিন মাসের মধ্যে এ সমস্যাগুলোর সমাধান করব৷
ঢাকা পোস্ট : রাস্তায় বের হলেই আপনার পোস্টার চোখে পড়ে। সাধারণ মানুষের মধ্যেও এ নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা রয়েছে। আপনি বিষয়টি কীভাবে দেখেন?
সাইফুদ্দিন আহমেদ মিলন : বাংলাদেশের মানুষ আমাকে ব্যক্তিগতভাবে চেনে না৷ আমার ফেসবুকের সঙ্গেও যুক্ত নয়৷ আমি কেমন মানুষ এগুলো না জেনেই অনেকেই মন্তব্য করেন৷ আমার অনেক ভালো জিনিস রয়েছে সেগুলো মানুষ প্রচার করে না৷
আপনি যখন নিজের ভাইকে সফলতার কথা শুনবেন সেগুলো শুনতে চাইবে না৷ কিন্তু আপনার ব্যর্থতার কথা বলুন তখন আগ্রহ নিয়ে শুনবে৷ খারাপ জিনিস নিয়ে মানুষের কিউরিসিটি আছে৷ আমি যে পোস্টার লাগাই সেটা খারাপ৷ আমিও চাই পোস্টার লাগানো বন্ধ হোক৷ পৃথিবীর ১৯০টি দেশ ঘুরে দেখেছি সব দেশই দেখেছি পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন৷ বাংলাদেশ তো পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন নয়৷
পোস্টার লাগানো যেহেতু প্রচারের একটি মাধ্যম এ কারণেই আমি পোস্টার লাগাই৷ আমাদের দলের সকলের প্রতিদিন পোস্টার লাগানোর সামর্থ নেই৷ দলের সবাই পোস্টার লাগায়ও না৷ বছরে একবার পোস্টার লাগাই আমি৷ কোন ঈদ, বিজয় দিবস, ভাষা শহীদ দিবস এসব কেন্দ্র করে পোস্টার লাগাই না৷ জনসভাতেও পোস্টার লাগাই না৷ ১ জানুয়ারি আমাদের দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে বছরে একবার আমি পোস্টার লাগাই৷ সেটাও ব্যাপক না৷ কখনো পাঁচ থেকে ছয় হাজার কখনো সাত থেকে আট হাজার কিংবা ১০ হাজার পোস্টার লাগানো হয়৷ এসব পোস্টার অনেক উঁচুতে লাগানো হয়৷
যারা এ পোস্টার লাগান তারা আমাকে অনেক ভালবাসেন৷ তারা আমার নিজস্ব লোক৷ অনেক ঝুঁকি নিয়ে উঁচুতে পোস্টারগুলো লাগানো হয়৷ যত্ন সহকারে এসব পোস্টার লাগানো হয় বলেই এসব পোস্টার এক দুই বছর স্থায়ী থাকে৷ মানুষ বের হলে আমার পোস্টর দেখে৷ পোস্টারের কারণে অনেকেই আমাকে চেনে৷ আওয়ামী লীগ বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা সারা বছর পোস্টার লাগান৷ একজনের পোস্টারের ওপর আরেকজনের পোস্টার লাগান৷ আমি যেহেতু জাতীয় পার্টি করি সেহেতু আমার দলেরও পোস্টার থাকা উচিত৷ আমি যেভাবে পোস্টার লাগাই অনেকেই এভাবে পোস্টার লাগাতে চান৷ কিন্তু পারেন না৷
অনেক এমপি-মন্ত্রী আমাকে জিজ্ঞাসা করেন কীভাবে পোস্টের লাগান? ক্ষমতাসীন দল প্রতিদিন যে পোস্টার লাগায় তা নিয়ে অভিযোগ নেই৷ আমি পোস্টার লাগালেই সমালোচনা! মেট্রোরেলে আমার লোকজন ভুলবশত পোস্টার লাগিয়েছিল৷ আমি নিজে গিয়ে সেই পোস্টার তুলে ফেলেছি৷
অথচ এখন দেখেন মেট্রোরেলে পোস্টার আছে, সারা ঢাকা শহরে পোস্টার আছে৷ সেগুলো নিয়ে মানুষের আলোচনা নেই৷ পোস্টার লাগানো নিয়ে সিটি কর্পোরেশনের কথা বলা উচিত৷ কিন্তু কে কথা বলবে? মেয়রের নিজেরই তো পোস্টার লাগানো আছে৷ ফেস্টুন লাগানো আছে৷ বিলবোর্ড আর ব্যানারও আছে৷
ঢাকা পোস্ট : নির্বাচনকে কেন্দ্র করে কত হাজার পোস্টার ছাপিয়েছেন
সাইফুদ্দিন আহমেদ মিলন : নির্বাচন সামনে রেখে ২০ হাজার পোস্টার ছাপানো হয়েছে৷ এ পোস্টারে এ আসনের বেশিরভাগ জায়গা প্রায় কাভার হয়ে গেছে৷ আর পোস্টার লাগবে বলে মনে হয় না৷
ঢাকা পোস্ট : আচরণবিধি ভঙ্গ করে আপনিসহ অন্যান্য দলের নেতাকর্মীরা দেয়ালে পোস্টার লাগিয়েছেন৷ এ বিষয়ে কী বলবেন?
সাইফুদ্দিন আহমেদ মিলন : আমি একটি শক্তিশালী ও ক্ষমতাসীন দলের বিরুদ্ধে লড়াই করছি৷ এখানে আমার বিজয় লাভ করার সম্ভাবনা রয়েছে৷ আমার বিরোধী প্রার্থী নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে ইসির বেঁধে দেওয়া ২০ তারিখের আগেই পোস্টার লাগিয়েছে৷ এ আসনের বিভিন্ন জায়গায় দেয়ালে-রশিতে পোস্টার টাঙিয়েছেন৷ নির্বাচন কমিশন এসব জেনেও কোনো পদক্ষেপই নেয়নি৷ তাদের পোস্টার লাগানো যদি থাকে তাহলে আমার পোস্টারটা লাগালে সমস্যা কোথায়? তার পোস্টার দেখা যাবে আমার পোস্টটা দেখা যাবে না এমন তো হতে পারে না৷
ঢাকা পোস্ট : সাধারণ মানুষের কাছে আপনার প্রত্যাশা কী?
সাইফুদ্দিন আহমেদ মিলন : তাদের কাছে আমার একটাই প্রত্যাশা৷ আল্লাহর দিকে চেয়ে দলের ঊর্ধ্বে গিয়ে আপনারা দেশকে ভালবাসুন৷ বিএনপি নির্বাচনে না গেলেও ঢাকা-৭ আসনের চিত্র ভিন্ন৷ এ আসনে একজন ভালো মানুষকে বেছে নেওয়া জরুরি৷ আপনার বিবেক যদি বলে আমার ৪৩ বছরের রাজনৈতিক জীবনে আমি সৎ ছিলাম তাহলে আমার পাশে থাকবেন৷
আরও পড়ুন
যেহেতু নির্বাচনে বিএনপি নেই একজন ভালো মানুষ হিসেবে আপনাদের মন যদি আমাকে চিহ্নিত করে তাহলে আমাকে ভোট দেবেন৷ একজন ভালো মানুষকে ভোট দিলে সামনে আরও ভালো মানুষ দেশ সেবায় এগিয়ে আসবে৷ দলমত নির্বিশেষে আপনারা আমাকে ভোট দিন৷
ঢাকা পোস্ট : শক্তিশালী বিরোধীদল না হয়ে জাতীয় জাতীয় পার্টি আসন সমঝোতায় যাওয়ায় সাধারণ মানুষ এ দলের প্রতি আস্থা হারাচ্ছে৷ আপনি বিষয়টিকে কীভাবে দেখছেন?
সাইফুদ্দিন আহমেদ মিলন : আসন সমঝোতার বিষয়ে আমি ব্যক্তিগতভাবে তীব্র প্রতিবাদ করেছি৷ এখন তো জাতীয় পার্টিতে শীর্ষ ফোরামের আলোচনা নেই৷ নির্বাচনের পর শীর্ষ ফোরামের আলোচনায় পার্টির সবাই মিলে সিদ্ধান্ত নেবে এভাবে দল চলতে দেওয়া যায় কি না৷ আমি এ সিদ্ধান্তের তীব্র নিন্দা জানাই৷ এতে দল আমাকে বহিষ্কার করলেও তার পরোয়া করি না। আমি জনগণের মানুষ, জনগণের পক্ষের লোক৷ জাতীয় পার্টি দিয়ে আমি কী করব? আমার এমপি-মন্ত্রী হওয়ার খায়েশ নেই৷ জাতীয় পার্টি যে কাজটি করছে সেটি বেইমানি।
ঢাকা পোস্ট : আমাদের সময় দেওয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ৷
সাইফুদ্দিন আহমেদ মিলন : আপনাকেও ধন্যবাদ৷ ঢাকা পোস্টের জন্য শুভকামনা৷
এমএম/আরএইচটি