স্থায়ী ক্যাম্পাস নিয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ‘ইউটার্ন’
সাত বছরের মধ্যে স্থায়ী ক্যাম্পাসে যেতে হবে— এমন শর্তে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রমের অনুমতি দেওয়া হয়। কিন্তু দুই যুগ পার হলেও স্থায়ী ক্যাম্পাসে যায়নি অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয়। স্থায়ী ক্যাম্পাসে না গেলে সাময়িক অনুমতিপত্র বাতিল বা বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধের বিধান থাকলেও নেওয়া হয়নি কার্যকর কোনো ব্যবস্থা। এমনকি কড়া নোটিশ পর্যন্ত দেওয়া হয়নি কাউকে। সাবেক শিক্ষামন্ত্রী এ বিষয়ে বেশ তৎপর থাকলেও বর্তমান শিক্ষামন্ত্রী-উপমন্ত্রী অনেকটাই নীরব!
অভিযোগ রয়েছে, মন্ত্রণালয়ের এক প্রভাবশালী কর্মকর্তার ঢাকার বাইরে একটি বিশ্ববিদ্যালয় আছে। বিশ্ববিদ্যালয়টি একাধিক ক্যাম্পাসে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করছে। তার চাপেই নাকি স্থায়ী ক্যাম্পাসে শিক্ষা কার্যক্রম স্থানান্তরের গতি হারিয়েছে! এ বিষয়ে এখন আর কেউ কথা বলছেন না। ‘খুপরি ঘরে’র ক্যাম্পাসেই গুণগত শিক্ষা নিশ্চিতে নতুন বার্তা দিচ্ছেন কর্তাব্যক্তিরা।
যদিও বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যোক্তারা বলছেন, করোনার কারণে ক্যাম্পাস বন্ধ। শিক্ষার্থীও কমে গেছে। এ কারণে স্থায়ী ক্যাম্পাসে যাওয়ার বিষয়টি স্থবির হয়ে আছে। অনেকে আবার তাদের সামর্থ্য অনুযায়ী চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
বর্তমানে ৫৬টি বিশ্ববিদ্যালয়ের বয়স সাত বছরেরও বেশি। এর মধ্যে মাত্র ২৮টি বিশ্ববিদ্যালয় স্থায়ী ক্যাম্পাসে শিক্ষাকার্যক্রম পরিচালনা করছে। ১৮টি বিশ্ববিদ্যালয় স্থায়ী ক্যাম্পাসে আংশিক শিক্ষাকার্যক্রম চালাচ্ছে। জমি কিনেও নির্মাণকাজ শুরু করেনি ছয়টি। নির্ধারিত পরিমাণের চেয়ে কম জমিতে শিক্ষাকার্যক্রম পরিচালনা করছে দুটি। নিজস্ব জমি নেই দুটির, তবুও চলছে শিক্ষাকার্যক্রম
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. মাহবুব হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, নির্দিষ্ট সময় পার হওয়ার পরও যেসব বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় স্থায়ী ক্যাম্পাসে যায়নি, তাদের বিষয়টি আমরা অবগত। যে ব্যবস্থা নেওয়ার প্রয়োজন, তা নেওয়া হচ্ছে। তাদের নতুন প্রোগ্রামের অনুমোদনের ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, এ মুহূর্তে আমাদের পলিসি হলো, স্থায়ী ক্যাম্পাসের চেয়ে শিক্ষার মানের দিকে নজর দেওয়া। পাশাপাশি গবেষণার বিষয়গুলো কীভাবে আরও বাড়ানো যায়, সেদিকে গুরুত্ব দেওয়া।
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে ৫৬টি বিশ্ববিদ্যালয়ের বয়স সাত বছরেরও বেশি। এর মধ্যে মাত্র ২৮টি বিশ্ববিদ্যালয় স্থায়ী ক্যাম্পাসে শিক্ষাকার্যক্রম পরিচালনা করছে। ১৮টি বিশ্ববিদ্যালয় স্থায়ী ক্যাম্পাসে আংশিক শিক্ষাকার্যক্রম চালাচ্ছে। জমি কিনেও নির্মাণকাজ শুরু করেনি ছয়টি। নির্ধারিত পরিমাণের চেয়ে কম জমিতে শিক্ষাকার্যক্রম পরিচালনা করছে দুটি। নিজস্ব জমি নেই দুটির, তবুও চলছে শিক্ষাকার্যক্রম। সম্প্রতি ইউজিসি’র প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।
অভিযোগ আছে, মন্ত্রণালয়ের এক প্রভাবশালী কর্মকর্তার ঢাকার বাইরে একটি বিশ্ববিদ্যালয় আছে। বিশ্ববিদ্যালয়টি একাধিক ক্যাম্পাসে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করছে। তার চাপেই নাকি স্থায়ী ক্যাম্পাসে শিক্ষা কার্যক্রম স্থানান্তরের গতি হারিয়েছে! এ বিষয়ে এখন আর কেউ কথা বলছেন না। ‘খুপরি ঘরে’র ক্যাম্পাসেই গুণগত শিক্ষা নিশ্চিতে নতুন বার্তা দিচ্ছেন কর্তাব্যক্তিরা
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ৫৬টি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে অনেকগুলো অবৈধ ক্যাম্পাস ও ভবনে শিক্ষাকার্যক্রম পরিচালনা করছে। এর মধ্যে ১০টি বিশ্ববিদ্যালয়ের নামের পাশে লাল তারকা চিহ্ন দিয়ে এগুলোতে ভর্তিতে শিক্ষার্থীদের সতর্ক করা হয়েছে। সতর্কতা জারি করে ইউজিসি তাদের দায়িত্ব শেষ করলেও এমন বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে নীরব ভূমিকা পালন করেছে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রণ সংস্থা।
আংশিক স্থায়ী ক্যাম্পাসে ১৮ বিশ্ববিদ্যালয়
ইউজিসি’র তথ্য বলছে, নিজস্ব জমিতে ভবন নির্মাণ করে শিক্ষাকার্যক্রম পরিচালনা করছে ১৮টি বিশ্ববিদ্যালয়। এগুলো হলো- দি পিপলস ইউনিভার্সিটি, মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি (এমআইইউ), ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি, চট্টগ্রামের প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটি, ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটি, নর্দার্ন ইউনিভার্সিটি, চট্টগ্রামের সাউদার্ন ইউনিভার্সিটি, গ্রিন ইউনিভার্সিটি, ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ, শান্ত-মারিয়াম ইউনিভার্সিটি, ইউনিভার্সিটি অব ইনফরমেশন টেকনোলজি অ্যান্ড সায়েন্সেস, ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস, আশা ইউনিভার্সিটি, সাউথইস্ট ইউনিভার্সিটি তেজগাঁও, বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি ও স্টেট ইউনিভার্সিটি।
বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে ২০১৭ সালের ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে স্থায়ী ক্যাম্পাসে যেতে সময় বেঁধে দিয়েছিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এ সময়ের মধ্যে স্থায়ী ক্যাম্পাসে যেতে ব্যর্থ হলে চলমান প্রোগ্রামগুলোতে নতুন শিক্ষার্থী ভর্তি বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়েছিল।
জমি কিনেও নির্মাণকাজ শুরু করেনি ৬ বিশ্ববিদ্যালয়
স্ট্যামফোর্ড ইউনিভার্সিটি ঢাকার নবাবগঞ্জে, প্রাইম এশিয়া ইউনিভার্সিটি জোয়ার সাহারায়, রয়েল ইউনিভার্সিটি তেজগাঁও এবং ভিক্টোরিয়া ইউনিভার্সিটি কুমিল্লায় নিজস্ব ক্যাম্পাস স্থাপনের জন্য জমি কিনেছে। তবে তারা এখনও নির্মাণকাজ শুরু করতে পারেনি। জমি কিনেছে ইউনিভার্সিটি অব সাউথ এশিয়া। স্থায়ী ক্যাম্পাসে যেতে না পারায় সাময়িক সনদ বাতিলের বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় তাদের চিঠি দিয়েছিল। এখনও বনানীর অস্থায়ী ক্যাম্পাসে শিক্ষাকার্যক্রম পরিচালনা করছে বিশ্ববিদ্যালয়টি। প্রেসিডেন্সি ইউনিভার্সিটি টাঙ্গাইলের সাগরদিঘী এলাকায় জমি কিনেছে। তারাও স্থায়ী ক্যাম্পাসের নির্মাণকাজ শুরু করতে পারেনি।
ইউজিসি’র পক্ষ থেকে ওই ছয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে স্থায়ী ক্যাম্পাসে যেতে ২০১৭ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় বেঁধে দেওয়া হয়। অন্যথায় চলমান প্রোগ্রামগুলোতে নতুন শিক্ষার্থী ভর্তি বন্ধের হুমকিও দেওয়া হয়।
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো পরিচালনার জন্য ২০১০ সালে সংসদে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন পাস হয়। আইনের ৪৭ ধারার ২নং অনুচ্ছেদে বলা হয়, শিক্ষাকার্যক্রম পরিচালনার অনুমোদন পাওয়ার পর নির্ধারিত সময়সীমার (সাত বছর) মধ্যে সনদপত্র গ্রহণ করতে হবে। এ সময়ের মধ্যে সনদপত্র না নিলে অভিযুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের সাময়িক অনুমতিপত্র বাতিল বা বন্ধ ঘোষণা করা যাবে
এদিকে, প্রাইম ইউনিভার্সিটি বর্তমানে স্থায়ী ক্যাম্পাসে শিক্ষাকার্যক্রম পরিচালনা করলেও সেখানে জমির শর্ত পূরণ হয়নি। নির্ধারিত জমির চেয়ে কম জমিতে তারা ক্যাম্পাস গড়েছে। একই অবস্থা সেন্ট্রাল উইমেনস ইউনিভার্সিটির ক্ষেত্রেও।
ফাউন্ডেশনের জমিতে ক্যাম্পাস
দি মিলেনিয়াম ইউনিভার্সিটি মতিঝিলের মোমেনবাগে ‘মোমেন খান মেমোরিয়াল ফাউন্ডেশন’ এর নামে কেনা জমিতে স্থাপনা নির্মাণ করে শিক্ষাকার্যক্রম পরিচালনা করছে। ২০১৮ সালের ৩০ জুনের মধ্যে নির্ধারিত পরিমাণ জমি বিশ্ববিদ্যালয়ের নামে কিনে শিক্ষাকার্যক্রম পরিচালনার জন্য সময় বেঁধে দেয় ইউজিসি। ব্যর্থ হলে নতুন শিক্ষার্থী ভর্তি বন্ধের হুমকিও দেওয়া হয়।
নিজস্ব জমি নেই দুই বিশ্ববিদ্যালয়ের
ইউনিভার্সিটি অব ডেভেলপমেন্ট অলটারনেটিভের স্থায়ী ক্যাম্পাসের জন্য নিজস্ব জমি নেই। ধানমন্ডির আটটি অননুমোদিত ভবনে শিক্ষাকার্যক্রম পরিচালনা করছে বিশ্ববিদ্যালয়টি। ইবাইস ইউনিভার্সিটিরও নিজস্ব জমি নেই। বোর্ড অব ট্রাস্টিজ (বিওটি) নিয়ে দ্বন্দ্বও (ধানমন্ডি ও উত্তরা ক্যাম্পাস) আছে। পরস্পরের বিরুদ্ধে আদালতে একাধিক মামলা চলমান। এছাড়া এ বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো অনুমোদিত ঠিকানা নেই। এরই মধ্যে ধানমন্ডি গ্রুপ তাদের ঠিকানা পরিবর্তন করে বনানীতে স্থানান্তর করেছে।
বিশ্ববিদ্যালয় দুটিকে স্থায়ী ক্যাম্পাসে যেতে ২০১৭ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত চূড়ান্ত সময় দেয় ইউজিসি। একই সঙ্গে ‘লাল তারকা চিহ্নিত’ করে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিতে শিক্ষার্থীদের সতর্ক করে।
স্থায়ী ক্যাম্পাসে শিক্ষাকার্যক্রমে আছে ‘ঝামেলা’
ইউজিসি’র তথ্যানুযায়ী, বর্তমানে ২৮টি বিশ্ববিদ্যালয় স্থায়ী ক্যাম্পাসে শিক্ষাকার্যক্রম পরিচালনা করছে। এর মধ্যে ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস এগ্রিকালচার অ্যান্ড টেকনোলজির ‘বিএসসি ইন নার্সিং’ প্রোগ্রাম নিয়ে আদালতে মামলা চলছে। গণবিশ্ববিদ্যালয় সাভারের স্থায়ী ক্যাম্পাসে শিক্ষাকার্যক্রম পরিচালনা করলেও আদালতের স্থগিতাদেশ নিয়ে ইউজিসি’র অনুমোদন ছাড়া ছয়টি প্রোগ্রাম পরিচালনা করছে। পরবর্তীতে স্থগিতাদেশ ভ্যাকেট করে দেয় উচ্চ আদালত। ফলে এর ছয়টি প্রোগ্রাম এখন অবৈধ বলে বিবেচিত হচ্ছে।
সিলেট ইউনিভার্সিটি স্থায়ী ক্যাম্পাসে শিক্ষাকার্যক্রম পরিচালনা করলেও ইউজিসি’র অনুমোদন ছাড়া প্রোগ্রাম পরিচালনা করছে। বিওটি নিয়েও সেখানে দ্বন্দ্ব আছে। আদালতের রায়ে ফের চালু হওয়া রংপুরের পুন্ড্র ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি অননুমোদিত প্রোগ্রাম পরিচালনা করছে।
বিশ্ববিদ্যালয় আইনে যা বলা আছে
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো পরিচালনার জন্য ২০১০ সালে সংসদে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন পাস হয়। আইনের ৪৭ ধারার ২নং অনুচ্ছেদে বলা হয়, শিক্ষাকার্যক্রম পরিচালনার অনুমোদন পাওয়ার পর নির্ধারিত সময়সীমার (সাত বছর) মধ্যে সনদপত্র গ্রহণ করতে হবে। এ সময়ের মধ্যে সনদপত্র না নিলে অভিযুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের সাময়িক অনুমতিপত্র বাতিল বা বন্ধ ঘোষণা করা যাবে।
সব বিশ্ববিদ্যালয় এখনও স্থায়ী ক্যাম্পাসে যায়নি তাদের ‘সর্বোচ্চ শাস্তি’ নতুন প্রোগ্রামের অনুমোদন বন্ধ রাখা। অথচ ইউজিসি বা শিক্ষা মন্ত্রণালয় চাইলে এসব বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনের অনুমতি না দেওয়া, উচ্চ শিক্ষার জন্য সরকারি বা বিদেশি সংস্থার অনুদান এবং প্রধানমন্ত্রী প্রদত্ত স্বর্ণপদক প্রদান বন্ধ রাখতে পারে।
ইউজিসির তথ্যানুযায়ী, সরকার দেশে ১০৬টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার অনুমতি দিয়েছে। এগুলোর মধ্যে বর্তমানে চালু আছে ৯৬টি। এর মধ্যে মাত্র দুটি বিশ্ববিদ্যালয় সকল শর্ত পূরণ করে স্থায়ী সনদ পেয়েছে। সর্বশেষ ২০১৭ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে স্থায়ী ক্যাম্পাসে যাওয়ার ক্ষেত্রে সময় বেঁধে দিয়েছিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়। তখন বলা হয়েছিল, যেসব বিশ্ববিদ্যালয় এ নির্দেশ পালন করতে পারবে না সেগুলোতে শিক্ষার্থী ভর্তি বন্ধ করে দেওয়া হবে।
সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ স্থায়ী ক্যাম্পাসে যেতে সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে ২০১৮ সালে চূড়ান্ত নোটিশ দিয়েছিলেন। বেঁধে দেওয়া ওই সময়ের মধ্যে স্থায়ী ক্যাম্পাসে যেতে ব্যর্থ হলে পরের দিন থেকে শিক্ষার্থী ভর্তি বন্ধ করে দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়। গত আড়াই বছরে বিষয়টি আর তদারকি করেনি বর্তমান শিক্ষা প্রশাসন।
শর্ত লঙ্ঘন করে শিক্ষাকার্যক্রম পরিচালনাকারী বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে কেন লাল তারকা চিহ্নিত করা হয়নি— জানতে চাইলে ইউজিসি’র পরিচালক (বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়) ওমর ফারুক ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘রেড মার্কিং করার কতগুলো ধরন আছে। যদি অনুমোদন ছাড়া প্রোগ্রাম ও ভবনে শিক্ষাকার্যক্রম পরিচালনা করে তাহলে ইউজিসি’র ওয়েবসাইটে লাল তারকা চিহ্ন দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান জানানো হয়। এটি সময়ে সময়ে পরিবর্তন হয়।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইউজিসি’র সাবেক চেয়ারম্যান প্রফেসর আব্দুল মান্নান বলেন, ‘আমি চেয়ারম্যান থাকাকালীন স্থায়ী ক্যাম্পাসে যাওয়া নিয়ে কয়েক দফা নোটিশ দিয়েছি। যারা শর্ত মানেনি তাদের নতুন প্রোগ্রামের অনুমোদন বন্ধ করে দিয়েছি। শুধু এ ইস্যুতে অনেককে শাস্তি দেওয়া যায়। কিন্তু ইউজিসি চাইলেই পারে না। কারণ, নানা জায়গা থেকে চাপ থাকে।’
তার মতে, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর আর্থিক অবস্থা এখন ভালো নয়। করোনার এ সময় তো এটা সম্ভব নয়। তাদের সময় দেওয়া উচিত।
এনএম/এমএআর/