টিকা পাওয়া নিয়ে কোনো সংশয় নেই
প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস প্রতিরোধে টিকা পাওয়া নিয়ে কোনো সংশয় নেই বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) অধ্যাপক ডা. এবিএম খুরশীদ আলম।
সোমবার (১ মার্চ) বিকেল তিনটার দিকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন। সময়মতো সব টিকা আসবে জানিয়ে স্বাস্থ্য মহাপরিচালক বলেন, বেসরকারি খাতকে কোনো টিকা দেবে না সরকার। তারা আমদানি করে টিকা দিতে পারবে, তবে সেক্ষেত্রে মূল্য সরকার থেকে নির্ধারণ করে দেওয়া হবে।
তিনি বলেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কাছে নিবন্ধিত শিক্ষকদের ডাটা চাওয়া হয়েছে, যত দ্রুত সম্ভব তাদের টিকা দেওয়া হবে।
স্বাস্থ্য মহাপরিচালক বলেন, করোনাভাইরাস মোকাবিলায় বেসরকারি খাত দেরিতে হলেও এগিয়ে এসেছে। তারা সহযোগিতা না করলে আমাদের পক্ষে এ ভাইরাস মোকাবিলা করা খুবই কঠিন হতো। সেজন্য তাদের প্রতি অনেক ধন্যবাদ এবং কৃতজ্ঞতা।
তিনি বলেন, বেসরকারি খাতকে টিকা দেওয়ার ব্যাপারে প্রাথমিকে যেসব কথাবার্তা হয়েছিল, সেটার আবার কিছুটা পরিবর্তন হয়েছে। তাদের এখন টিকা আমদানি করার ব্যাপারে উৎসাহিত করা হয়েছে। সেক্ষেত্রে সরকারের পক্ষ থেকে সবকিছু ঠিক করে দেওয়া হবে যে তারা কত দামে আনবেন, কত দামে বিক্রি করবেন, কীভাবে কী করবেন- সব বলে দেওয়া হবে।
তিনি বলেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কাছে নিবন্ধিত শিক্ষকদের ডাটা চাওয়া হয়েছে, যত দ্রুত সম্ভব তাদের টিকা দেওয়া হবে।
ডা. খুরশীদ আলম আরও বলেন, আগে শিক্ষক ও পরে শিক্ষার্থীদের টিকা দেওয়ার পরিকল্পনা করেছে সরকার। শিক্ষকদের টিকা দিতে বয়সসীমা শিথিল করা হয়েছে। বর্তমানে ৪০ বছর ও তদূর্ধ্ব বয়সী শিক্ষকরা অগ্রাধিকারভিত্তিতে টিকা নিতে পারলেও এখন থেকে ৪০ বছরের কম বয়সী শিক্ষকরাও টিকা নিতে পারবেন। এ জন্য টিকা নিবন্ধনের সুরক্ষা অ্যাপে শিক্ষকদের অগ্রাধিকারের তালিকার শীর্ষে আনা হয়েছে। সেখানে ‘শিক্ষক’ নামে নতুন ক্যাটাগরি করা হয়েছে। তবে শিক্ষার্থীদের জন্য সুরক্ষা অ্যাপে এখনো কোনো ক্যাটাগরি করা হয়নি।
এদিকে, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত আরও আট জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে ভাইরাসটিতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল আট হাজার ৪১৬ জনে। এ সময়ে নতুন করে আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন ৫৮৫ জন। ফলে মোট আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে পাঁচ লাখ ৪৬ হাজার ৮০১ জনে।
সোমবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে পাঠানো করোনাবিষয়ক নিয়মিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, নতুন করে ভাইরাসটি থেকে মুক্ত হয়েছেন ৮৭৩ জন। এ পর্যন্ত মোট সুস্থ হয়েছেন চার লাখ ৯৭ হাজার ৭৯৭ জন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ১৩ হাজার ৭৪৮ জনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। তার মধ্য থেকে ১৩ হাজার ৫৭০ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে।
গত ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়া আট জনের মধ্যে পুরুষ চার জন এবং নারী চার জন। এর মধ্যে সবাই হাসপাতালে মারা গেছেন। এ পর্যন্ত মোট মারা যাওয়া আট হাজার ৪১৬ জনের মধ্যে পুরুষ ছয় হাজার ৩৬৩ জন, বাকি দুই হাজার ৫৩ জন নারী।
বয়সভিত্তিক বিশ্লেষণে দেখা যায়, মারা যাওয়া আট জনের মধ্যে ৬০ বছরের বেশি রয়েছেন তিন জন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে তিন জন। বাকি দুই জনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে।
কোভিড-১৯ রোগে গত ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়াদের চার জন ঢাকা বিভাগের। আর বাকি চার জন চট্টগ্রাম বিভাগের। এ সময়ে অবশিষ্ট ছয় বিভাগে কেউ করোনায় মারা যায়নি।
টিআই/এসএম