চিকিৎসায় অবদান : ১৪ চিকিৎসককে বিশেষ সম্মাননা

নিজ নিজ অবস্থান থেকে চিকিৎসা সেবায় অবিস্মরণীয় অবদানের জন্য দেশের ১৪ জন প্রথিতযশা চিকিৎসককে বিশেষ সম্মাননা দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল হেলথকেয়ার এক্সপো-২০২৩ আয়োজকদের পক্ষ থেকে এই প্রথম হেলথকেয়ার এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড দেওয়া হলো।
শুক্রবার (২৯ সেপ্টেম্বর) রাতে রাজধানীর ইন্টারকন্টিনেন্টালে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তাদের সম্মাননা তুলে দেওয়া হয়।
সম্মাননাপ্রাপ্ত ১৪ জন চিকিৎসকের মধ্যে রয়েছেন– বিশিষ্ট বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জন ও শেখ হাসিনা বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের জাতীয় সমন্বয়ক অধ্যাপক ড. সামন্ত লাল সেন। তিনি শেখ হাসিনা ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারির প্রতিষ্ঠাতা ও উন্নয়নে অসামান্য অবদানের জন্য সম্মাননায় ভূষিত হয়েছেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইউরোলজি বিভাগের প্রক্টর ও অধ্যাপক ড. মো. হাবিবুর রহমান দুলাল, তার নেতৃত্বে বিএসএমএমইউ হাসপাতালের সার্জনদের একটি দল বাংলাদেশে প্রথম ক্যাডেভারিক কিডনি প্রতিস্থাপন করেন।
ঢাকার ওএসবি চক্ষু হাসপাতালের পরিচালক ও চিফ কনসালটেন্ট অধ্যাপক ড. আভা হোসেন, বাংলাদেশ এবং এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলে অন্ধত্ব প্রতিরোধে তার উল্লেখযোগ্য নেতৃত্বের স্বীকৃতিস্বরূপ সম্মাননা পেয়েছেন।
বাংলাদেশে অস্থি মজ্জা (বোন ম্যারো) প্রতিস্থাপনের পথপ্রদর্শক, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের হেমাটোলজি বিভাগ ও বোন ম্যারো ট্রান্সপ্লান্ট সেন্টারের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক ড. মহিউদ্দিন আহমেদ খান তার তত্ত্বাবধানে প্রথম বোন-ম্যারো ট্রান্সপ্লান্ট (বিএমটি) প্রবর্তনের জন্য সম্মাননায় ভূষিত হয়েছেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের নিউরোসার্জারি বিভাগের ডিন অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ হোসেন প্রথমবারের মতো দেশে এন্ডোস্কোপিক ডিস্ক সার্জারি চালু ও এন্ডোস্কোপিক পিটুইটারি সার্জারির পথিকৃৎ হিসেবে সম্মাননা পেয়েছেন।
এছাড়াও দেশের প্রখ্যাত শিশু বিশেষজ্ঞ, চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউট অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ নিওনেটোলজি এবং শিশু স্বাস্থ্যসেবার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য সম্মাননায় ভূষিত হয়েছেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রজনন অ্যান্ডোক্রিনোলজি এবং বন্ধ্যাত্ব বিভাগেরভ চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. পারভীন ফাতিমা বাংলাদেশে প্রথম টেস্ট-টিউব বেবির জন্য সম্মাননা পেয়েছেন।
ঢাকায় ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্স প্রতিষ্ঠা, নিউরোলজির ক্ষেত্রে জীবন উৎসর্গ করা অবদান তথা বাংলাদেশে স্বাস্থ্যসেবায় অসামান্য অবদানের জন্য অধ্যাপক ড. কাজী দীন মোহাম্মদকে সম্মাননায় ভূষিত করা হয়। অধ্যাপক ড. এম এ ফইজ ম্যালেরিয়া, অর্গানো ফসফরাস যৌগিক বিষক্রিয়া, সাপের কামড়, নিপাহ সংক্রমণ, কালাজ্বর এবং যক্ষ্মা রোগের মতো গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যার ব্যবস্থাপনা বিষয়ে অবদানের জন্য সম্মাননা পেয়েছেন।
অধ্যাপক ড. খন্দকার মানজারে শামীম মেডিকেল শিক্ষাবিদ হিসেবে সম্মাননা পেয়েছেন। অধ্যাপক ড. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা জনস্বাস্থ্যে অবদানের জন্য সম্মাননা পেয়েছেন। এছাড়াও অধ্যাপক ড. আমজাদ হোসাইন অর্থপেডিক্সে এবং অধ্যাপক ড. এম এ হাইকে ক্যান্সার চিকিৎসায় অবদানের জন্য বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল হেলথকেয়ার এক্সেলেন্স অ্যাওয়ার্ড দেওয়া হয়েছে।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. শারফুদ্দিন আহমেদ, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক নাজমুল হক, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক খলিলুর রহমানসহ আরও অনেকে।
অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. শাহ মনির হোসেন সম্মাননা প্রাপ্তদের হাতে ক্রেস্ট ও সম্মাননা সনদ তুলে দেন।
ঢাকার বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব কনভেনশন হলে গত ২৮ সেপ্টেম্বর থেকে তিন দিনব্যাপী বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল হেলথকেয়ার এক্সপো-২০২৩ এর দ্বিতীয় দিনের কর্মসূচির অংশ হিসেবেই চিকিৎসকদের জন্য এ সম্মাননার আয়োজন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন মেলার আয়োজকরা। সংশ্লিষ্টরা জানান, এই এক্সপোতে বিভিন্ন দেশের হাসপাতাল ও মেডিকেল প্রযুক্তি এবং চিকিৎসা ব্যবস্থা সম্পর্কে জ্ঞান লাভ ও পারস্পরিক প্রযুক্তি বিনিময়ের সুযোগ তৈরি হবে।
/টিআই/এসএসএইচ/