চিকিৎসকদের পেশাগত মান যাচাইয়ে ‘লাইসেন্সিং পরীক্ষা’ চালু দরকার

চিকিৎসকদের পেশাগত মান যাচাইয়ের জন্য লাইসেন্সিং পরীক্ষা চালু করা দরকার বলে মন্তব্য করেছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. সায়েদুর রহমান।
তিনি বলেন, মানুষের আস্থা ফেরাতে লাইসেন্স পাওয়া চিকিৎসকদেরও নিয়মিত নবায়ন পরীক্ষার ব্যবস্থা করা যায় কি না, সেটিও বিবেচনায় আনা উচিত।
বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘চিকিৎসক সপ্তাহ’ উপলক্ষ্যে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ডা. সায়েদুর রহমান বলেন, শুধু দুই-তিনটা পেশায় ‘প্র্যাকটিস’ শব্দটি ব্যবহৃত হয়। তার মধ্যে একটি হলো চিকিৎসা। এর মানে, ধারাবাহিকভাবে জ্ঞান অর্জন করতে হয় এমন পেশাগুলোর মধ্যে চিকিৎসা পেশা অন্যতম। সেই ধারাবাহিক জ্ঞানটা আদৌ চিকিৎসকরা অর্জন করছেন কি না, সেটা নিশ্চিত করার জন্য একটা প্রফেশনাল পদ্ধতি থাকা জরুরি। এই পদ্ধতিটি কীভাবে হবে, কারা পরিচালনা করবে—এসব বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা প্রয়োজন।
তিনি জানান, এ বিষয়ে তিনি ইতোমধ্যেই কিছু আন্তর্জাতিক সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন।
‘তবে আমি বেশি খুশি হবো, যদি চিকিৎসকদের বিভিন্ন স্তর থেকেও এই দাবি ওঠে,’—বলেন এই কর্মকর্তা।
আরও পড়ুন
চিকিৎসা শিক্ষা ব্যবস্থার বৈচিত্র্য নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করে সায়েদুর রহমান বলেন, মেডিকেল কলেজ আর মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যক্রমে বিরাট পার্থক্য রয়েছে। এই ধরনের ব্যবধান তৈরি হলে অন্তত একটি মান নির্ধারণকারী ব্যবস্থা—যেমন লাইসেন্সিং পরীক্ষা—জরুরি হয়ে পড়ে।
তিনি আরও বলেন, বর্তমানে দেশের প্রায় ১১০টি মেডিকেল কলেজ রয়েছে। সেখান থেকে পাস করা স্নাতকদের মধ্যে অনেক বড় ধরনের মানের পার্থক্য দেখা যাচ্ছে। এই পার্থক্যের মধ্যে যদি কোনো বটম লাইন নির্ধারণ করা না হয়, তাহলে সাধারণ মানুষ চিকিৎসা নিতে গিয়ে নিরাপদ থাকবেন না।
‘এ কারণেই নিশ্চিত করতে হবে, যারা চিকিৎসা বিজ্ঞানে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেছেন, তারা যেন সর্বনিম্ন মানদণ্ডে উত্তীর্ণ হন। আর এই মান নিশ্চিত করতে হলে লাইসেন্সিং পরীক্ষা চালু করা জরুরি।’
তিনি মনে করেন, এই পরীক্ষার মাধ্যমে চিকিৎসা শিক্ষার যেসব গ্যাপ এখনো থেকে গেছে, তা অনেকটাই পূরণ করা সম্ভব।
তবে লাইসেন্সিং পরীক্ষার ক্ষেত্রে বয়সভিত্তিক কিছু ছাড় দেওয়ার বিষয়েও তিনি মত দেন। তিনি বলেন, চিকিৎসকদের নির্দিষ্ট বয়স (৫৫ বছর বা তার অধিক) পার হলে এই পরীক্ষার বাধ্যবাধকতা তুলে দেওয়ার দিকটিও বিবেচনায় আনা উচিত।
‘বাংলাদেশ বিনির্মাণে দরকার, চিকিৎসা খাতে সংস্কার’ শিরোনামে আয়োজিত আলোচনাসভায় সভাপতিত্ব করেন স্বাস্থ্যখাত সংস্কার কমিশনের প্রধান ও জাতীয় অধ্যাপক ডা. এ কে আজাদ খান। সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন— বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ডা. শাহীনুল আলম, স্বাস্থ্যখাত সংস্কার কমিশনের সদস্য অধ্যাপক সৈয়দ আতিকুল হক, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক, স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালকসহ বিএমইউর শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও চিকিৎসক সপ্তাহ উদযাপন কমিটির সদস্যরা।
টিআই/এমএ