কেন বাড়ছে ক্যান্সার? জেনে নিন সম্ভাব্য কারণ

বর্তমান সময়ে ক্যান্সারের প্রকোপ ক্রমশ বেড়ে চলেছে। এ রোগ কেন এত দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে? বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২২ সালে বিশ্বজুড়ে নতুন করে ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়েছেন প্রায় ২ কোটিরও বেশি মানুষ, আর মৃত্যু হয়েছে প্রায় ১ কোটির। ২০৫০ সালের মধ্যে এই সংখ্যা ৭৭ শতাংশ পর্যন্ত বাড়তে পারে বলে সতর্ক করেছে ডব্লিউএইচও।
ক্যান্সার বৃদ্ধির কারণ
বিশেষজ্ঞদের মতে, বর্তমান জীবনযাপন পদ্ধতিই ক্যান্সার বৃদ্ধির অন্যতম কারণ। ক্যান্সারের সঙ্গে অন্তত ৪০-৫০ শতাংশ সম্পর্ক রয়েছে জীবনযাপনের ধরণের। তামাকজাত দ্রব্য যেমন ধূমপান, জর্দা, খৈনি, পানমশলা ক্যান্সারের প্রধান কারণ। ফুসফুস, মুখ, অগ্ন্যাশয়, ব্লাডার এবং মূত্রথলির ক্যানসার তামাকের কারণে ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে।
অ্যালকোহল সেবন
অ্যালকোহল গ্রহণ খাদ্যনালী, লিভার এবং স্তন ক্যান্সার বৃদ্ধির কারণ হতে পারে।
আরও পড়ুন
অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস
ফাস্টফুড, মিষ্টি, প্রক্রিয়াজাত খাবার এবং রেড মিট ক্যান্সার কোষের বৃদ্ধি ত্বরান্বিত করে। বর্তমান প্রজন্মের মধ্যে এই ধরনের খাবারের প্রতি ঝোঁক বেশি।
মানসিক চাপ ও ওজন বৃদ্ধি
মানসিক চাপ সরাসরি ক্যান্সারের কারণ না হলেও এটি শরীরের ইমিউনিটি কমিয়ে দেয়, ফলে ক্যান্সার কোষ সহজে ধ্বংস হয় না। অতিরিক্ত ওজনও ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ায়।
বর্ধিত আয়ু
মানুষের গড় আয়ু বৃদ্ধি পাওয়ায় বয়স্কদের মধ্যে ক্যান্সারের হার বেড়েছে। পাশাপাশি, ক্যান্সার নির্ণয়ের পদ্ধতি উন্নত হওয়ায় শনাক্তের হারও বেড়েছে। বর্তমানে স্তন ক্যান্সার, বৃহদান্ত্রের ক্যানসার, প্রস্টেট, ফুসফুস এবং কিডনি ক্যান্সার ঘটনা বেশি দেখা যাচ্ছে।
ভাইরাসের প্রভাব
কিছু ভাইরাসও ক্যান্সারের কারণ হতে পারে। হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস (HPV) যৌন সংক্রমণের মাধ্যমে জরায়ুর মুখের ক্যান্সার সৃষ্টি করতে পারে। এছাড়া, হেপাটাইটিস বি এবং সি ভাইরাস লিভার ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায়।
অতিরিক্ত রোদ
অতিরিক্ত সূর্যালোকে থাকার কারণে ত্বকের ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ে। বিশেষত, ফর্সা ত্বকের মানুষের মধ্যে এই ঝুঁকি বেশি।
প্লাস্টিকের ব্যবহার
গরম পানীয় বা খাবার প্লাস্টিকের পাত্রে রাখলে কার্সিনোজেনিক উপাদান বের হয়ে আসে, যা শরীরে প্রবেশ করে ক্যান্সারের কারণ হতে পারে। প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগের অতিরিক্ত ব্যবহারের ফলেও শরীরে ক্ষতিকর রাসায়নিক প্রবেশ করতে পারে।
ক্যান্সার থেকে সুরক্ষিত থাকতে জীবনযাপনের ধরন পরিবর্তন করা এবং সঠিক সময়ে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো জরুরি। তামাক ও অ্যালকোহল থেকে দূরে থাকা, স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস বজায় রাখা এবং মানসিক চাপ কমানো ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করতে পারে।
এমএসএ