সিগারেটে ২০ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আয়ের সুযোগ হাতছাড়া

২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে সব ধরনের সিগারেটের দাম ও করহার অপরিবর্তিত রাখায় সরকার ২০ হাজার কোটি টাকা অতিরিক্ত রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হবে। এর ফলে তরুণ জনগোষ্ঠীও সিগারেট ব্যবহারে বিশেষভাবে উৎসাহিত হবে বলে মনে করে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান প্রজ্ঞা (প্রগতির জন্য জ্ঞান) এবং আত্মা (অ্যান্টি টোব্যাকো মিডিয়া এলায়েন্স)।
সোমবার (২ জুন) তাৎক্ষণিক বাজেট প্রতিক্রিয়ায় সংস্থা দুটি এসব তথ্য জানিয়েছে।
প্রজ্ঞা ও আত্মা বলছে, সিগারেট বাজারের প্রায় ৮০ শতাংশ দখল করে থাকা নিম্ন এবং মধ্যম স্তরের সিগারেটকে একত্রিত করে সর্বনিম্ন খুচরা মূল্য ৯০ টাকা নির্ধারণ করার পাশাপাশি অন্যান্য স্তরের সিগারেটের দাম বাড়ানো হলে এই রাজস্ব আয়ের সুযোগ হাতছাড়া হবে না এবং জনস্বাস্থ্যের ব্যাপক উন্নয়ন ঘটবে।
প্রতিক্রিয়ায় আরও বলা হয়েছে, প্রস্তাবিত বাজেটে ষষ্ঠবারের মতো বিড়ির মূল্য এবং দশমবারের মতো এর সম্পূরক শুল্ক অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে, যা অত্যন্ত হতাশাজনক। জর্দা ও গুলের দাম এবং করহারও অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে। তামাক ব্যবহারকারীদের ৫০ শতাংশেরও বেশি মানুষ ধোঁয়াবিহীন তামাক ব্যবহার করেন, যাদের অধিকাংশই দরিদ্র এবং নারী। মূল্যস্ফীতি এবং মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি বিবেচনায় নিলে এসব পণ্য আরও সস্তা ও সহজলভ্য হয়ে যাবে। এর ফলে দরিদ্র জনগোষ্ঠী, বিশেষত নারীরা ধোঁয়াবিহীন তামাকপণ্য ব্যবহারে উৎসাহিত হবে এবং তাদের স্বাস্থ্যঝুঁকিও বেড়ে যাবে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়েছে, প্রস্তাবিত বাজেটে সিগারেট প্রস্তুতকারকের নিট বিক্রয়মূল্যের ওপর অগ্রিম কর ৩ শতাংশের স্থলে ৫ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে। বাণিজ্যিক আমদানিকারকের সিগারেট পেপার আমদানিতে সম্পূরক শুল্ক ১৫০ শতাংশের পরিবর্তে ৩০০ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে। এগুলো ইতিবাচক পদক্ষেপ হলেও তামাকপণ্যের দাম বৃদ্ধির জন্য যথেষ্ট নয়।
প্রস্তাবিত বাজেটের প্রতিক্রিয়ায় প্রজ্ঞা'র (প্রগতির জন্য জ্ঞান) নির্বাহী পরিচালক এবিএম জুবায়ের বলেন, তামাকের কারণে দেশে প্রতিদিন ৪৪২ জন মানুষ মারা যায়। তামাকবিরোধীদের কর সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়ন করা হলে তামাকের ব্যবহার ও তামাকজনিত মৃত্যু কমবে এবং সরকারের রাজস্ব আয় বাড়বে।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশে ৩৫.৩ শতাংশ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ তামাক ব্যবহার করেন। চূড়ান্ত বাজেটে তামাকবিরোধীদের প্রস্তাব বাস্তবায়ন করা হলে অতিরিক্ত রাজস্ব আয়ের পাশাপাশি দীর্ঘমেয়াদে প্রায় ৯ লাখ তরুণসহ মোট ১৭ লাখের অধিক মানুষের অকাল মৃত্যু রোধ করা সম্ভব হবে।
টিআই/এমজে