ইআরপিপি কর্মীদের যমুনা অভিমুখে পদযাত্রায় পুলিশের বাধা

চাকরি বহাল ও রাজস্বখাতে অন্তর্ভুক্তির দাবিতে পদযাত্রা করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কোভিড-১৯ ইমারজেন্সি রেসপন্স অ্যান্ড প্যানডেমিক প্রিপেয়ার্ডনেস (ইআরপিপি) প্রকল্পের নিয়োজিত জনবল। তবে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনা যাওয়ার পথে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বাধায় তাদের কর্মসূচি থেমে যায়। পরে তারা প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন করে কর্মসূচির পরবর্তী ধাপ ঘোষণা করে।
বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) দুপুর ১২টা ৩০ মিনিটে রাজধানীর বাংলাদেশ সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতাল থেকে যাত্রা শুরু করেন ইআরপিপি প্রকল্পভুক্ত বিভিন্ন পদের শতাধিক কর্মী।
তারা জানান, কোভিড-১৯ মহামারির সময় পরীক্ষার মাধ্যমে নিয়োগ পেয়ে তারা মাঠপর্যায়ে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন। দেশের বিভিন্ন স্থানে পিসিআর ল্যাব, আইসিইউ, আইসোলেশন ইউনিট গড়ে তোলার পেছনে তাদের শ্রম ও দক্ষতা ছিল।
আরও পড়ুন
তাদের অভিযোগ, ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর মৌখিকভাবে তাদের কর্মস্থলে দায়িত্ব পালন অব্যাহত রাখার কথা বললেও ২৫ মে হঠাৎ চিঠি দিয়ে কর্মবিরতির নির্দেশ দেয়। এতে তারা চরম অনিশ্চয়তার মুখে পড়েন।
মানববন্ধনে অংশ নেওয়া শরিফুল ইসলাম বলেন, মহামারির শুরুতে যখন সবাই ঘরবন্দি, তখন আমরা পিপিই পরে হাসপাতাল, ল্যাব, কুইক রেসপন্স টিমে কাজ করেছি। নিজে সংক্রমিত হয়েছি, তবু দায়িত্ব থেকে পিছ পা হয়নি। অনেক সহকর্মী পরিবার ছেড়ে দিনের পর দিন হোটেলে বা আলাদা বাসায় ছিলেন, যাতে পরিবারের সদস্যরা আক্রান্ত না হন। আজ সেই সব সহকর্মীদের মুখে হতাশা, বিষণ্নতা। চার বছর কাজ করেও আজ আমরা কর্মহীন, অথচ আমাদের তৈরি ল্যাব-আইসিইউ এখন নতুন লোক দিয়ে চালানোর পাঁয়তারা চলছে। এটা শুধুই অবিচার নয়, এটা এক ধরনের বিশ্বাসঘাতকতা।
আরেক কর্মী আব্দুর রহমান বলেন, আমাদের কোনো ভাতা, ইনক্রিমেন্ট বা সরকারি সুযোগ-সুবিধা ছিল না। তবু আমরা বিনা প্রশ্নে কাজ করে গেছি, কারণ এটা ছিল দেশের প্রয়োজনে, মানুষের সেবায়। এখন সেই অভিজ্ঞতাকে সম্পদ না ভেবে বোঝা মনে করা হচ্ছে। নতুন করে লোক নিয়োগ দেওয়া মানে শুধু খরচ বাড়ানো নয়— এটা প্রশিক্ষণ, সময়, দক্ষতার অপচয়ও। আমরা চাই, আমাদের অভিজ্ঞতাকে মূল্যায়ন করা হোক। চাকরি রাজস্বখাতে নিয়ে এসে আমাদের স্থায়িত্ব দেওয়া হোক।
বক্তারা আরও বলেন, করোনা ভাইরাস ফের মাথাচাড়া দিচ্ছে। এ অবস্থায় অভিজ্ঞ কর্মীদের বাদ দিয়ে নতুন নিয়োগ দেওয়ার চেষ্টা রাষ্ট্রীয় সম্পদের অপচয় ছাড়া কিছু নয়। তারা তাদের শ্রম ও দক্ষতার স্বীকৃতি দিয়ে রাজস্বখাতে অন্তর্ভুক্তির জোর দাবি জানান।
ইআরপিপি কর্মীরা জানান, দাবি পূরণ না হলে তারা আরও কঠোর কর্মসূচিতে যেতে বাধ্য হবেন।
টিআই/এমজে