জুলাই আহতদের চিকিৎসায় সদিচ্ছা না থাকলে চেয়ার ছেড়ে দিন

জুলাই অভ্যুত্থানে আহতদের সুচিকিৎসা না পাওয়া এবং সরকারি হাসপাতালের ব্যবস্থাপনায় গড়িমসি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সভাপতি রিফাত রশিদ। এসব অভিযোগে সরাসরি স্বাস্থ্য উপদেষ্টাকে দায়ী করে তিনি বলেন, আহতদের চিকিৎসায় যদি কোনো সদিচ্ছা না থাকে, তাহলে চেয়ার ছেড়ে দিন।
শনিবার (৫ জুলাই) জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল (নিটোর) পরিদর্শনে গিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। এরপর কেন্দ্রীয় নেতারা মিরপুরে জুলাই আন্দোলনে গুরুতর আহত কয়েকটি পরিবারের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেন।
রিফাত রশিদ বলেন, তাদের চিকিৎসায় গাফিলতি রয়েছে। উপদেষ্টা পরিষদের যদি কারো যদি স্বদিচ্ছার ঘাটতি থাকে, তাদের বলব উপদেষ্টার চেয়ার ছেড়ে দিন। জুলাই আহত-নিহতদের জন্য যাদের দরদ নাই, তাদের চেয়ারে থাকার দরকার নাই। এসব নিয়ে স্বাস্থ্য উপদেষ্টাকে ধরতে হবে।
রক্তের ম্যান্ডেটে যারা সরকার গড়েছে, তারাই আজ উপেক্ষিত উল্লেখ করে তিনি বলেন, যাদের রক্তের ম্যান্ডেটে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গদিতে বসেছে, আজকে তারাই নির্যাতিত-নিগৃহীত। আমরা দীর্ঘদিন ধরে দেখছি আহতরা পরিপূর্ণ চিকিৎসার দাবিতে আন্দোলন করছে। অথচ চিকিৎসা সাংবিধানিকভাবে মৌলিক চাহিদাগুলোর একটি।
আহতদের গ্রুপিংয়ের সুযোগ সৃষ্টি করেছে ইন্টেরিম সরকার— এমন মন্তব্য করে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এই নেতা বলেন, অনেকে বলে আহতদের মধ্যে সিন্ডিকেট গড়ে তোলা হচ্ছে, তাদের মধ্যে গ্রুপিং রয়েছে। অথচ জুলাইয়ে তো তাদের মধ্যে কোনো গ্রুপিং ছিল না। তাদের মধ্যে এই গ্রুপিং করার সুযোগ করে দিয়েছে ইন্টেরিম সরকার। তাদের যদি সঠিক চিকিৎসা দেওয়া হতো, তারা এই গ্রুপিং করার সুযোগ পেত না।
এ সময় আহতদের চিকিৎসা আটকে দেওয়ার পেছনে রাজনৈতিক সিন্ডিকেট কাজ করছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি। রিফাত বলেন, আহতদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে না, এর পেছনে রয়েছে একটি রাজনৈতিক দলের চিকিৎসক গ্রুপ। আহতরা তাদের সিন্ডিকেটের কাজে বাধা হয়ে দাঁড়ানোয় তারা জুলাইয়ে আহতদের হাসপাতাল থেকে বের করতে চাচ্ছে।
সরকারি চিকিৎসা ব্যবস্থার সমালোচনা করে তিনি বলেন, অনেকে বলে আহতদের আচরণ উগ্র। যারা এসব কথা বলে তাদের কয়জন সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নেয়?
যারা সরকারি হাসপাতালে তিনদিন চিকিৎসা নিয়েছে, তাদের মানসিক স্বাস্থ্যের অবস্থাও খারাপ হয়ে যায়। এখানে তো ভালো মানুষ থাকতে পারে না, থাকতে চায়ও না। জুলাইয়ে যেসব ছেলে-মেয়েরা আহত হয়েছে, তাদের সেই সময়ের ট্রমা কাটানো তো অনেক দূরের বিষয়—উল্টো তারা লাঞ্ছনার শিকার হচ্ছে।
টিআই/এমএ