স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ফটক আটকে আন্দোলনে ইউনানি-আয়ুর্বেদিক শিক্ষার্থীরা

স্বতন্ত্র ইউনানি-আয়ুর্বেদিক কাউন্সিল গঠনের দাবিতে ফের বিক্ষোভ কর্মসূচিতে নেমেছেন সরকারি ইউনানি ও আয়ুর্বেদিক মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা। প্রথম দিন ৬ ঘণ্টাব্যাপী স্বাস্থ্যশিক্ষা অধিদপ্তর ঘেরাও করে অবস্থান কর্মসূচি পালনের পর এবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রধান ফটক আটকে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন তারা।
মঙ্গলবার (৮ জুলাই) বেলা ১১টা থেকে রাজধানীর মহাখালীতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রধান ফটক আটকে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন তারা। দুপুর ১টায়ও এ কর্মসূচি চলছিল।
তাদের অবস্থানের কারণে অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা প্রধান ফটক দিয়ে অফিসে প্রবেশ ও বের হতে পারছেন না।
আন্দোলনকারীরা বলছেন, ৩০ জুন স্বাস্থ্যশিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের চিকিৎসা শিক্ষা-২ শাখা থেকে পাঠানো একটি চিঠি ইউনানি ও আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা শিক্ষার স্বীকৃতি নিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করেছে। চিঠিটি অবৈধ ও একতরফাভাবে শিক্ষার্থীদের পেশাগত ভবিষ্যৎকে অনিশ্চিত করে তুলছে বলে তাদের অভিযোগ।
আরও পড়ুন

আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী মো. শহীদুজ্জামান সুমন বলেন, ওই চিঠি যদি বাস্তবায়িত হয়, তাহলে আমাদের ডিগ্রি, রেজিস্ট্রেশন, চাকরি, উচ্চশিক্ষা– সবই হুমকির মুখে পড়বে। তাই আমরা বাধ্য হয়ে আজ আবার অধিদপ্তরের সামনে এসে অবস্থান নিয়েছি। দাবি না মানা পর্যন্ত এখানেই থাকব।
সোমবারও শিক্ষার্থীরা একই দাবিতে ছয় ঘণ্টা অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। পরে আলোচনার আশ্বাসে আন্দোলন সাময়িক স্থগিত করেছিলেন তারা। কিন্তু আজ আবারও আন্দোলনে ফেরার কারণ জানতে চাইলে আন্দোলনকারী ছাত্রী সাবরিনা হোসেন বলেন, সরকার আমাদের দাবি শুনেছে কিন্তু কোনো লিখিত প্রতিশ্রুতি দেয়নি। বরং ভেতরে ভেতরে সেই বিতর্কিত চিঠি বাস্তবায়নের প্রস্তুতি চলছে।
তিনি বলেন, অবিলম্বে মেডিকেল অফিসার (ইউনানি ও আয়ুর্বেদিক) নিয়োগের যোগ্যতা সংক্রান্ত মতামতের বিতর্কিত চিঠি বাতিল করতে হবে, ইউনানি ও আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা ব্যবস্থায় বিদ্যমান বৈষম্য নিরসনে একটি পৃথক আইন (অর্ডিন্যান্স) প্রণয়ন ও একটি স্বতন্ত্র কাউন্সিল গঠন করতে হবে।
আরেক শিক্ষার্থী মুজাহিদুল ইসলাম বলেন, গ্রামবাংলার ৮০ শতাংশ মানুষ ইউনানি-আয়ুর্বেদিক চিকিৎসার ওপর নির্ভরশীল। অথচ আজ এই প্রাচীন ও কার্যকর চিকিৎসা ব্যবস্থা একটি চিঠির মারপ্যাঁচে পড়ে অস্তিত্ব সংকটে।
স্বাস্থ্যশিক্ষা অধিদপ্তরের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, শিক্ষার্থীদের আবেগ ও আশঙ্কা যৌক্তিক। তবে হঠাৎ করে ঘেরাও করে রাখলে কাজ ব্যাহত হয়। বিষয়টি নিয়ে মন্ত্রণালয়, বোর্ড ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সমন্বয় চলছে।
আন্দোলনকারীরা জানান, যতদিন না ৩০ জুনের অবৈধ চিঠি বাতিল এবং ‘বাংলাদেশ ইউনানি ও আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা শিক্ষা আইন’ প্রণয়ন করে একটি পূর্ণাঙ্গ ও সাংবিধানিক কাউন্সিল গঠন করা হচ্ছে, ততদিন তারা শান্তিপূর্ণভাবে এই আন্দোলন চালিয়ে যাবেন। কালক্ষেপণ করে আন্দোলন বানচালের চেষ্টা করা হলে এই আন্দোলন আরও তীব্র আকার ধারণ করবে বলে হুঁশিয়ারি দেন তারা।
টিআই/এসএসএইচ