স্বাস্থ্য সংস্কারে দ্রুত পদক্ষেপ চেয়ে প্রধান উপদেষ্টাকে আজাদ খানের চিঠি

স্বাস্থ্য খাত সংস্কারে দ্রুত, সুসংহত ও কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে চিঠি দিয়েছেন স্বাস্থ্য খাত সংস্কার কমিশনের চেয়ারম্যান ও জাতীয় অধ্যাপক ডা. এ কে আজাদ খান।
সোমবার ( ৪ আগস্ট) প্রধান উপদেষ্টা বরাবর পাঠানো ওই চিঠিতে তিনি স্বাস্থ্যখাতের দীর্ঘদিনের নীতিগত ও কাঠামোগত দুর্বলতা দূর করতে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাব উপস্থাপন করেছেন এবং প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বে দ্রুত বাস্তবায়নের অনুরোধ জানিয়েছেন।
চিঠিতে ডা. আজাদ খান যে তিনটি প্রস্তাব দিয়েছেন, সেগুলো হলো—
১. স্বাস্থ্য খাত সংস্কার কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নে প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বে একটি উচ্চপর্যায়ের জাতীয় স্বাস্থ্য উপদেষ্টা কমিটি গঠন।
২. একটি স্বাধীন ও স্থায়ী “বাংলাদেশ স্বাস্থ্য কমিশন” গঠন, যা স্বাস্থ্যখাতের পরিকল্পনা, মান নিয়ন্ত্রণ ও জবাবদিহির দায়িত্ব পালন করবে এবং সরাসরি প্রধান উপদেষ্টার কাছে রিপোর্ট করবে।
৩. প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা জনগণের জন্য সম্পূর্ণ বিনামূল্যে নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় নীতিগত, প্রশাসনিক, কাঠামোগত ও বাজেটীয় ব্যবস্থা গ্রহণ।
চিঠিতে তিনি বলেন, গত ৫ মে কমিশনের চূড়ান্ত প্রতিবেদন প্রধান উপদেষ্টার হাতে আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর করা হলেও এখন পর্যন্ত এর কোনো বাস্তব অগ্রগতি দৃশ্যমান নয়। এমনকি স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কমিশনের কোনো আনুষ্ঠানিক বৈঠক পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হয়নি।
জাতীয় অধ্যাপক আজাদ খান আরও উল্লেখ করেন, “কমিশনের সুপারিশসমূহ স্বাস্থ্য খাতের কাঠামোগত দুর্বলতা, সুশাসনের অভাব ও নীতিগত সংকট থেকে উত্তরণের বাস্তবমুখী ও সুসংহত রূপরেখা দিয়েছে। কিন্তু কমিশনের সম্পৃক্ততা ছাড়া সেই সুপারিশ বাস্তবায়ন একটি অসম্পূর্ণ ও অকার্যকর প্রক্রিয়ায় পরিণত হওয়ার ঝুঁকি তৈরি করবে।”
চিঠির শেষাংশে প্রধান উপদেষ্টার প্রতি এক ধরনের মানবিক আবেদন জানিয়ে তিনি লিখেছেন, “আপনি যেমন এই জাতীয় সংকটে মানবিকতা ও দূরদর্শিতার পরিচয় দিয়ে নেতৃত্ব দিচ্ছেন, তেমনি স্বাস্থ্য খাত সংস্কারে আপনার দৃঢ় ভূমিকা একটি কার্যকর ও জন আস্থাভাজন স্বাস্থ্যব্যবস্থা প্রতিষ্ঠায় সহায়ক হবে। আমরা কমিশনের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা দিতে প্রস্তুত।”
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, কমিশনের প্রস্তাবগুলো বাস্তবায়িত হলে তা দেশের স্বাস্থ্যব্যবস্থার জন্য একটি দীর্ঘমেয়াদি ভিত্তি রচনা করতে পারে। তবে সরকারের সদিচ্ছা ও দ্রুত সিদ্ধান্তই এর মূল চাবিকাঠি বলে মনে করছেন তারা।
টিআই/এআইএস