নেজাল স্প্রে : অনুমোদন পেতে বিএমআরসিতে আবেদন

করোনাভাইরাস প্রতিরোধে নাকে ও মুখে ব্যবহারযোগ্য নেজাল স্প্রে মানবদেহে প্রয়োগের নৈতিক অনুমোদন পেতে বাংলাদেশ চিকিৎসা গবেষণা পরিষদে (বিএমআরসি) আবেদন করা হয়েছে। গবেষণাটির প্রধান ও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসাপাতালের নাক-কান-গলা বিশেষজ্ঞ ডা. মোস্তফা কামাল আরেফিন ঢাকা পোস্টকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
রোববার (২৪ জানুয়ারি) বেলা সাড়ে ১১টায় গবেষণার সব কাগজপত্র জমা দিয়ে বিএমআরসিতে তারা আবেদন করেন। আবেদন প্রসঙ্গে গবেষণাটির প্রধান কর্মকর্তা বলেন, “আমাদের উদ্ভাবিত করোনারোধী ‘বঙ্গসেফ ওরো-নেজাল স্প্রে’র ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের জন্য নৈতিক অনুমোদন পেতে বাংলাদেশ চিকিৎসা গবেষণা পরিষদে (বিএমআরসি) আমরা আবেদন করেছি। প্রাথমিকভাবে রাজধানীর তিনটি হাসপাতালে ৫০০ জন করোনা আক্রান্ত ব্যক্তির ওপর প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয়পর্যায়ে ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের জন্য অনুমতি চাওয়া হয়েছে।’
করোনাভাইরাস আমাদের দেহে প্রবেশের পথ হলো নাক, মুখ ও চোখ। আমাদের স্প্রে নাক ও মুখে ব্যবহার উপযোগী। আমরা যদি কোনোভাবে নাক ও মুখে থাকা ভাইরাস কিল করতে পারি তাহলে এর সংক্রমণ ঝুঁকি থেকে মুক্ত থাকতে পারব। একবার স্প্রে করার পর তা তিন থেকে চার ঘণ্টা পর্যন্ত কার্যকর থাকে
ড. মালা খান, বিআরআইসিএমের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্ব)
তিনি বলেন, ‘অনুমোদন পেলে আমরা শিগগিরই ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, কুয়েত বাংলাদেশ মৈত্রী সরকারি হাসপাতাল ও কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে ট্রায়াল শুরু করতে চাই।’
বিএমআরসির পক্ষ থেকে কিছু বলা হয়েছে কিনা— জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা আবেদন করেছি, অনুমোদনের বিষয়টা বিএমআরসির। স্বাভাবিকভাবে বিভিন্ন বিষয় পর্যবেক্ষণ শেষে অনুমোদন দিতে সর্বোচ্চ দুই থেকে তিন সপ্তাহ লাগে। আমরা চাইব জরুরি অবস্থা বিবেচনায় খুব দ্রুত যেন আমাদের অনুমোদন দেয়া হয়।’
গবেষণাটিতে সার্বিকভাবে তাকে সহযোগিতা করেছে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও বাংলাদেশ রেফারেন্স ইনস্টিটিউট ফর কেমিক্যাল মেজারমেন্টস (বিআরআইসিএম)। স্প্রেটির দাম প্রসঙ্গে গত ১২ জানুয়ারি (বুধবার) এক সংবাদ সম্মেলনে বিআরআইসিএমের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) ড. মালা খান বলেন, করোনা বিধ্বংসী ‘নেজাল স্প্রে’ মাত্র ১০০ টাকাতেই পাওয়া যাবে।
তিনি বলেন, কোনোভাবে নাকে ও মুখে করোনাভাইরাসের উপস্থিতি থাকলে সেখানে এ ‘নেজাল স্প্রে’ ব্যবহার করলে সেগুলো মরে যাবে। একবার স্প্রে করার পর নাক ও মুখ অন্তত তিন ঘণ্টা সুরক্ষিত থাকবে। উদ্ভাবিত স্প্রেটির নাম দেয়া হয়েছে ‘বঙ্গসেফ ওরো-নেজাল স্প্রে’।
আমরা আবেদন করেছি, অনুমোদনের বিষয়টা বিএমআরসির। স্বাভাবিকভাবে বিভিন্ন বিষয় পর্যবেক্ষণ শেষে অনুমোদন দিতে সর্বোচ্চ দুই থেকে তিন সপ্তাহ লাগে। আমরা চাইব জরুরি অবস্থা বিবেচনায় খুব দ্রুত যেন আমাদের অনুমোদন দেয়া হয়
ড. মালা খান, বিআরআইসিএমের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্ব)
ড. মালা খান বলেন, ঢাকা মেডিকেল কলেজের (ঢামেক) সঙ্গে যৌথ গবেষণায় এ স্প্রে উদ্ভাবন করা হয়েছে। ঢামেকে করোনা আক্রান্ত ২০০ রোগীর ওপর এ স্প্রের ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল চালানো হয়েছে। ট্রায়ালে ‘খুবই আশাব্যঞ্জক’ ফলাফল পাওয়া গেছে বলেও জানান তিনি।
তিনি আরও বলেন, খুব দ্রুত সময়ে যেন এটি মানুষের ব্যবহার উপযোগী করতে পারি আমরা সেজন্য কাজ করছি। করোনারোধী এ স্প্রেটির অনুমোদন পেতে বাংলাদেশ চিকিৎসা গবেষণা পরিষদে (বিএমআরসি) আগামী বৃহস্পতিবার সকল কাগজপত্র মজা দেওয়া হবে।
স্প্রের কার্যকারিতা সম্পর্কে মালা খান বলেন, ‘করোনাভাইরাস আমাদের দেহে প্রবেশের পথ হলো নাক, মুখ ও চোখ। আমাদের স্প্রে নাক ও মুখে ব্যবহার উপযোগী। আমরা যদি কোনোভাবে নাক ও মুখে থাকা ভাইরাস কিল করতে পারি তাহলে এর সংক্রমণ ঝুঁকি থেকে মুক্ত থাকতে পারব। একবার স্প্রে করার পর তা তিন থেকে চার ঘণ্টা পর্যন্ত কার্যকর থাকে।’
টিআই/এমএআর/