বিশ্ব নিউমোনিয়া দিবস আজ

আজ ১২ নভেম্বর, বিশ্ব নিউমোনিয়া দিবস। ২০০৯ সাল থেকে দিবসটি পালিত হয়ে আসছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) ২০১৭ সালের তথ্য হিসেবে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে প্রতি বছর ৮ লাখের বেশি শিশু প্রাণ হারায়। সংস্থাটির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুদের নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হলে মৃত্যুর আশঙ্কা বেশি থাকে।
২০১৯ সালে বিশ্ব জুড়ে শিশু ও বয়স্ক মিলিয়ে এই রোগে মৃত্যু হয়েছে প্রায় ২৫ লাখ মানুষের। অংকের হিসেব বড় হলেও সবচেয়ে বেশি অবহেলা করা হয় এই রোগকে।
শিশুদের ক্ষেত্রে সাধারণত দুই ধরনের নিউমোনিয়া হতে পারে। ভাইরাসঘটিত ও ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ। চিকিৎসকরা বলছেন, স্ট্রেপ্টোকক্কাস নামের ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ নিউমোনিয়া রোগের একটি অন্যতম প্রধান কারণ।
নিউমোনিয়া প্রতিরোধে টিকাকরণ বিষয়ে শিশুরোগ বিশেষজ্ঞরা বলেন, ডিপথেরিয়া ও হেমফিলাস ইনফ্লুয়েঞ্জা টাইপ বি (এইচআইবি) টিকা এবং নিউমোকক্কাল কনজুগেট টিক দিয়ে শিশুর রোগ প্রতিরোধ করা যায়। বেসরকারিভাবে বাজারে ৩ ধরনের নিউমোনিয়া টিকা রয়েছে। ইনফ্লুয়েঞ্জার জন্য ইনফ্লুয়েঞ্জা টিকাও খুবই কার্যকর। পারটুসিস (হুপিং কাশি), হাম, এইচআইবি সংক্রমণ, রোটা ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধ টিকা সবাইকেই দেওয়া জরুরি।
তবে বেশকিছু ভাইরাল নিউমোনিয়া রয়েছে যার প্রতিরোধে এখনও কোনো টিকা আবিষ্কার হয়নি। সদ্যোজাতদের ক্ষেত্রে হুপিংকাশি থেকে নিউমোনিয়া সংক্রমণ হতে পারে। সে ক্ষেত্রে প্রতিরোধেরও কোনও উপায় নেই। এমন পরিস্থিতিতে সদ্যোজাতর আশেপাশে যারা আসেন তাদের কিছু নিয়ম মানা জরুরি। যার মধ্যে মাস্ক পরা, প্রয়োজনীয় টিকাকরণ অন্যতম।
নিউমোনিয়া প্রতিরোধে সাধারণ কিছু স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা জরুরি। এগুলো হচ্ছে-
• পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা।
• নিয়মিত হাত ধোয়া।
• চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে শিশুকে ভিটামিন-এ খাওয়ানো যেতে পারে।
• বাড়ির পরিবেশ পরিচ্ছন্ন রাখা।
• ঘরোয়া বায়ুদূষণ কমানো।
• বাড়িতে উনুন বা রান্নার ধোঁয়া, সিগারেটের ধোঁয়া, ধুলো-ময়লা থেকেও ফুসফুসের সংক্রমণের ঝুঁকি থাকে।
• বিশুদ্ধ পানীয় জল, শৌচালয়ের সু-ব্যবস্থা।
• মাস্কের ব্যবহার এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা।
• ভিড় থেকে ছোটদের দূরে রাখা।
• অসুস্থদের সংস্পর্শ এড়িয়ে চলা।
গত ১১ বছরে সচেতনতা বাড়ায় মৃত্যু হার অনেকাংশে কমিয়ে আনা গেছে। আগামী ২০২৫ সালে শিশু মৃত্যুর হার প্রতি হাজারে তিনের নিচে নামিয়ে আনাই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও ইউনিসেফের লক্ষ্য।
এমএইচএস
