মিয়ানমারের রাস্তায় এবার বৌদ্ধ ভিক্ষুরা

মিয়ানমারজুড়ে শহর ও নগরগুলোতে সোমবারও হাজার হাজার মানুষ অভ্যুত্থানবিরোধী বিক্ষোভ করেছেন। ‘স্বৈরশাসন নিপাত যাক’ স্লোগানে স্লোগানে মুখর বিক্ষোভে অংশ নেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। দেশটিতে গত এক দশকের সবচেয়ে বড় এই বিক্ষোভ প্রদর্শনে এবার রাস্তায় নেমেছেন বৌদ্ধ ভিক্ষুরাও।
গত সোমবারের ওই অভ্যুত্থানের পর বিক্ষোভে অংশ নেওয়ার আহ্বান এবং আইন অমান্য করে সামরিক জান্তা সরকারবিরোধী প্রচারণা ও সংগঠিত বিক্ষোভ দিন দিন আরও জোরালো হচ্ছে বলে জানাচ্ছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, সোমবার মিয়ানমারের সর্ববৃহৎ শহর ইয়াঙ্গুনে শিক্ষার্থী ও শ্রমিকদের সঙ্গে বিক্ষোভে যোগ দিয়েছেন গেরুয়া রঙের বিশেষ পোশাক পরিহিত বৌদ্ধ ভিক্ষুরা। গৃহবন্দি নির্বাচিত নেত্রী অং সান সু চির দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্র্যাসির (এনএলডি) লাল ব্যানার ছাড়াও বহুরঙা বৌদ্ধ পতাকাও উড়িয়েছেন তারা।
একটিতে লেখা, ‘আমাদের নেত্রীকে মুক্তি দাও’, ‘আমাদের ভোটকে সম্মান কর’, ‘সামরিক অভ্যুত্থান প্রত্যাখ্যান কর‘। অপরটিতে লেখা ‘গণতন্ত্রকে বাঁচান, স্বৈরশাসনকে না বলুন’। এসময় অনেকের গায়ে ছিল কালো পোশাক।
গতকাল রোববার মিয়ানমারজুড়ে শহরে-নগরে ২০০৭ সালের বৌদ্ধ ভিক্ষুদের নেতৃত্বে ‘জাফরান বিপ্লব’ এর পর সবচেয়ে বড় বিক্ষোভ হয়েছে। ‘জাফরান বিপ্লব’ তাৎক্ষণিক কিছু গণতান্ত্রিক সংস্কারে সহায়তা করলেও গত সোমবারের সামরিক অভ্যুত্থানে মিয়ানমারের গণতান্ত্রিক সংস্কারের ধারা আবারও থমকে গেছে।
জান্তা সরকারের সব সোশ্যাল নেটওয়ার্ক বন্ধ করে দেওয়ার উদ্যোগ সত্ত্বেও ভিপিএন নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে অধিকারকর্মী আই থিনজার মাউং ফেসবুকে তার অনুসারীদের উদ্দেশ্যে লিখেছেন, ইয়াঙ্গুনের প্রতিটি কোণা কোণায় থাকা বিক্ষোভকারীরা দয়া করে শান্তিপূর্ণভাবে এগিয়ে এসে এই জনসমাবেশে যোগ দিন।’
হাজার হাজার মানুষ মিয়ানমারের দক্ষিণ-পূর্বের উপকূলীয় শহর দাউইয়ে অভ্যুত্থানবিরোধী বিক্ষোভ ও পদযাত্রা করেছেন। এছাড়া কালো রঙের পোশাকে মাথা থেকে পা পর্যন্ত ঢেকে বিক্ষোভ করেছেন একেবারের উত্তরের রাজ্য কাচিনের রাজধানী শহর মিতিকিনার হাজার হাজার মানুষ। স্বৈরশাসনবিরোধী স্লোগান দিচ্ছিলেন তারা।
এর আগে ১৯৮৮ এবং ২০০৭ সালে সামরিক শাসনবিরোধী ব্যাপক বিক্ষোভ চলাকালীন সেনাদের দমন অভিযানে অনেক রক্ত ঝড়লেও এবার এখনো বিক্ষোভকারীদের শান্তিপূর্ণ সমাবেশে সহিংসতা দেখা যায়নি।
তবে রোববার দিনশেষে ইয়াঙ্গুনের রাস্তায় মিলিটারি ট্রাক দেখা দেওয়ার পর সহিংসতার শঙ্কা তৈরি হয়েছে। সামরিক বাহিনীর পক্ষ থেকে কারও বক্তব্য পাওয়ার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
এএস