আমার সাবেক প্রেমিকের চেয়েও খারাপ মিয়ানমার সেনাবাহিনী

সামরিক অভ্যুত্থানের বিরোধিতায় টানা তৃতীয়দিনের মতো রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করেছেন মিয়ানমারের লাখো মানুষ। বিক্ষোভ-প্রতিবাদের চিরাচরিত ভাষার বদলে নতুন কিছু বার্তা প্ল্যাকার্ডে লিখেছেন তরুণরা; যা বিশ্ব গণমাধ্যমে ঠাঁই পেয়েছে।
অতীতের বিরোধী আন্দোলনগুলোর বিপরীতে দেশটির নতুন এই প্রজন্ম মুক্ত দেশে বেড়ে উঠছেন; যাদের ইন্টারনেটে অবাধ বিচরণ রয়েছে, পশ্চিমা সংস্কৃতি ও অনলাইনে মিমের ব্যাপারে যাদের ধারণা অনেক বেশি। এগুলোর সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতেও বেশ পটু তারা।
গত সপ্তাহে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখলে নেওয়ার পর দেশটির তরুণ প্রজন্ম যাদের বেশিরভাগের বয়স ২৪ এর নিচে; বিক্ষোভে তাদেরই সংখ্যাধিক্য দেখা গেছে।
তরুণ-তরুণীদের হাতে অভ্যুত্থানবিরোধী বিক্ষোভের সময় বেশ কিছু ব্যানার, প্ল্যাকার্ডে বিভিন্ন ধরনের বার্তা দেখা যায়; যেগুলো কিছুটা হাস্য-রসাত্মক, চটুল এবং রসিকতাপূর্ণ।
গত এক দশকের বেশি সময়ের ইতিহাসে গণতন্ত্রকামীদের যে বড় বড় বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হচ্ছে; তা দেশটিতে কখনও দেখা যায়নি। মিয়ানমারের গণতান্ত্রিক আন্দোলনের প্রতীক ডি-ফ্যাক্টো নেত্রী অং সান সু চির মুক্তি এবং বেসামরিক সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের দাবি তুলে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনে অভ্যুত্থান ব্যর্থ করার ডাক দিয়েছেন এই বিক্ষোভকারীরা।
গত নভেম্বরে দেশটিতে যে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে; তাতে জালিয়াতির অভিযোগ তুলে অভ্যুত্থানের সাফাই গাইলেও কোনও প্রমাণ দেখাতে পারেনি মিয়ানমার সেনাবাহিনী। আর এই জালিয়াতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সরকারের ব্যর্থতা সেনাবাহিনীকে ক্ষমতা নিতে বাধ্য করেছে বলে মিয়ানমারের সেনাপ্রধান জেনারেল মিন অং হ্লেইং মন্তব্য করেছেন।
সেনাবাহিনীর ক্ষমতা ছিনিয়ে নেওয়ার পর টানা তৃতীয় দিনের মতো সোমবার দেশটির বিভিন্ন শহরে বিক্ষোভ হয়েছে। এই বিক্ষোভ দমনের হুঁশিয়ারি দিয়ে মিয়ানমারের নতুন জান্তা সরকার দেশটির এক ডজনেরও বেশি শহরে মার্শাল ল জারি করেছে।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি সোমবার মিয়ানমারে অভ্যুত্থানবিরোধী যে বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়েছে; তাতে ব্যবহৃত হাস্যরসাত্মক ও রসিকতাপূর্ণ কিছু প্ল্যাকার্ডের ছবি প্রকাশ করেছে। এসব প্ল্যাকার্ডের ভাষা কিছুটা উদ্ভট হওয়ায় হালকা ঝাপসা করে দেওয়া হয়েছে।
হাজার হাজার মানুষের ভিড়ে এরকম একটি প্ল্যাকার্ড হাতে একজনকে বিক্ষোভ করতে দেখা যায়। যেখানে লেখা রয়েছে, ‘আমার সাবেক প্রেমিকের চেয়েও মিয়ানমার সেনাবাহিনী খারাপ।’
আরেকজনের হাতে একটি প্ল্যাকার্ডে লেখা, আমি স্বৈরতন্ত্র চাই না। শুধুমাত্র আমার প্রেমিককে চাই। অভ্যুত্থানের বিরোধিতায় অন্যান্য যেসব ব্যানার দেখা যায়, সেগুলো আরও বেশি অশ্লীল। একটি বিশেষ প্রতীক দেখিয়ে লেখা হয়েছে, সেনাবাহিনী ভুল মানুষের সঙ্গে লড়াইয়ে নেমেছে।
‘আপনারা... (অশ্লীল শব্দ) ভুল প্রজন্মের সঙ্গে খেলছেন। আপনারা ভুল প্রজন্মের সঙ্গে লড়ছেন।’ আরেকটি প্ল্যাকার্ডে লেখা, কখনই আমাদের নিজেদের ভবিষ্যৎ ধ্বংস করতে দেবো না।
এসএস