আজভ সাগরে প্রবেশাধিকার হারাল ইউক্রেন

আজভ সাগরের উপকূলবর্তী শহর মারিউপোল রুশ বাহিনীর দখলে চলে যাওয়ায় ওই সাগরে প্রবেশাধিকার হারিয়েছে ইউক্রেন। শুক্রবার সন্ধ্যার দিকে এক বিবৃতিতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়।
বিবৃতিতে অবশ্য এই অবস্থাকে ‘সাময়িক’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এ সম্পর্কে বলা হয়, ‘দখলদার বাহিনী দোনেতস্ক অপারেশনাল ডিস্ট্রিক্টে আংশিকভাবে সফল হয়েছে এবং সাময়িকভাবে আজভ সাগরে প্রবেশাধিকার হারিয়েছে ইউক্রেন।’
রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ও শুক্রবার এক বিবৃতিতে একই তথ্য জানিয়েছে। মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, মারিউপোল থেকে পিছু হটতে বাধ্য হয়েছে ইউক্রেনের সেনাবাহিনী।
আজভ সাগরের উপকূলবর্তী মারিউপোল শহরটি কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ রাশিয়া ও ইউক্রেন— উভয়ের কাছেই। কারণ, শহরটির পশ্চিমদিকে আছে ক্রিমিয়া উপদ্বীপ, আর পূর্বদিকে দোনেতস্ক এলাকা, যা বর্তমানে রুশপন্থী বিচ্ছিন্নতাবাদীদের নিয়ন্ত্রণে আছে।
ইউক্রেনে চলমান সামরিক অভিযানের প্রথম থেকেই শহরটিকে নিজেদের নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে যাচ্ছিল রুশ বাহিনী। বার্তাসংস্থা রয়টার্সের তথ্য অনুযায়ী, মারিউপোলের ৮০ শতাংশ ভবন রুশ বাহিনীর গোলায় ধ্বংস হয়ে গেছে এবং এখনও শহরটিতে আটকা পড়ে আছেন অন্তত ১ হাজার মানুষ।
পশ্চিমা দেশগুলোর সামরিক জোট ন্যাটোকে কেন্দ্র করে ২০০৮ সাল থেকে দ্বন্দ্ব চলছে রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে। ওই বছরই ন্যাটোর সদস্যপদের জন্য আবেদন করেছিল ইউক্রেন। সম্প্রতি ন্যাটো দেশটিকে পূর্ণ সদস্যপদ না দিলেও ‘সহযোগী সদস্যপদ’ হিসেবে মনোনীত করার পর আরও বাড়ে এই দ্বন্দ্ব।
ন্যাটোর সদস্যপদের জন্য আবেদন প্রত্যাহারে ইউক্রেনকে চাপে রাখতে গত দুই মাস রাশিয়া-ইউক্রেন সীমান্তে প্রায় দুই লাখ সেনা মোতায়েন রেখেছিল মস্কো।
কিন্তু এই কৌশল কোনো কাজে আসেনি। উপরন্তু এই দু’মাসের প্রায় প্রতিদিনই যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা অভিযোগ করে গেছে— যে কোনো সময় ইউক্রেনে হামলা চালাতে পারে রুশ বাহিনী।
অবশেষে গত ২২ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় দুই ভূখণ্ড দনেতস্ক ও লুহানস্ককে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয় রাশিয়া; এবং তার দু’ দিন পর, ২৪ তারিখ ইউক্রেনে ‘বিশেষ সামরিক অভিযান’ শুরুর নির্দেশ দেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
শনিবার ২৪তম দিনে পৌঁছেছে এই সামরিক অভিযান।
এসএমডব্লিউ