পেন্টাগনে চীনবিষয়ক টাস্কফোর্স গঠনের ঘোষণা বাইডেনের

মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তর পেন্টাগনে চীনবিষয়ক টাস্কফোর্স গঠনের ঘোষণা দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। একইসঙ্গে চীন ইস্যুতে ওয়াশিংটনের কৌশলগত অবস্থান খতিয়ে দেখতে মার্কিন সামরিক বাহিনী কাজ করছে বলেও জানিয়েছেন তিনি। বুধবার (১০ ফেব্রুয়ারি) মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় পরিদর্শনে গিয়ে বাইডেন একথা বলেন।
প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর বুধবার প্রথমবারের মতো প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় পরিদর্শনে যান জো বাইডেন। সেখানে সাম্প্রতিক সময়ে দক্ষিণ চীন সাগরে মার্কিন নৌবাহিনীর মহড়া নিয়ে সৃষ্ট বেইজিং-ওয়াশিংটনের মধ্যকার উত্তেজনার মধ্যেই তিনি এই ঘোষণা দেন। এসময় মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন ও ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসও উপস্থিত ছিলেন।
প্রেসিডেন্ট বাইডেন বলেন, ‘পেন্টাগনে চীনবিষয়ক নতুন একটি টাস্কফোর্স গঠন করা হবে। (চীনের বিরুদ্ধে) কৌশল নির্ধারণ, কার্যকর নীতি প্রণয়ন, প্রযুক্তি, সেনা মোতায়েনের সিদ্ধান্তসহ আরও অনেক বিষয়ে এই টাস্কফোর্স কাজ করবে।’
তিনি বলেন, ‘চীনের পক্ষ থেকে আসা ক্রমবর্ধমান বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা এবং বৈশ্বিকভাবে ও ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে শান্তি-স্থিতিশীলতা, মার্কিন স্বার্থ রক্ষা করতে হবে আমাদের।’
মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তরের সূত্র দিয়ে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা জানিয়েছে, ১৫ জন সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তার সমন্বয়ে পেন্টাগনে চীনবিষয়ক এই টাস্কফোর্স গঠন করা হবে। এর প্রধান হিসেবে কাজ করবেন বাইডেনের সাবেক জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা এলি র্যাটনার।
প্রেসিডেন্ট বাইডেন বলেন, ‘এ বিষয়ে সরকারের সকল পর্যায় থেকে কাজ করতে হবে, একইসঙ্গে কংগ্রেসের উভয়কক্ষের সহযোগিতা এবং অংশীদারিত্ব প্রয়োজন।’
এর আগে মঙ্গলবার দক্ষিণ চীন সাগরে দুটি মার্কিন বিমানবাহী রণতরি যৌথ মহড়া চালায়। চীনের নিয়ন্ত্রিত প্যারাসেল দ্বীপপুঞ্জের পাশে ইউএসএস থিওডর রুজভেল্ট ও ইউএসএস নিমিৎজ নামে ওই দুই রণতরি এ মহড়া চালায়। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানায় বেইজিং।
চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ওয়াং ওয়েনবিন বলেন, দক্ষিণ চীন সাগরে এভাবে বারবার যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধজাহাজ এবং যুদ্ধবিমানের উপস্থিতি শক্তি প্রদর্শনের নামান্তর- যা কোনোভাবেই ওই অঞ্চলের শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য সহায়ক নয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘জাতীয় নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় দৃঢ়ভাবে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া অব্যাহত রাখবে চীন। দক্ষিণ চীন সাগরে শান্তি ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে এই অঞ্চলের দেশগুলোর সঙ্গে কাজ করবে বেইজিং।’
তবে বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদন অনুযায়ী ‘সম্পদের আন্তঃব্যবস্থাপনার পাশাপাশি কমান্ড এবং নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা বাড়ানোর লক্ষ্যে’ দুই মার্কিন রণতরির মাধ্যমে এই মহড়া চালানো হয়েছে বলে জানিয়েছে মার্কিন নৌবাহিনী।
জো বাইডেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে ক্ষমতাগ্রহণের পর মার্কিন বিমানবাহী রণতরির এমন অভিযান এটাই প্রথম। এতে দক্ষিণ চীন সাগরের জলসীমা নিয়ে নতুন করে মার্কিন-চীন উত্তেজনা দেখা দিয়েছে।
সূত্র: আলজাজিরা
টিএম