হাথরাস ধর্ষণ-হত্যাকাণ্ডে চার জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন

চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে ভারতের উত্তর প্রদেশের হাথরাস জেলায় ১৯ বছর বয়সী এক দলিত তরুণীকে দলবদ্ধ ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলায় এতদিনে চার জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়েছে। অভিযুক্ত চারজনই উচ্চবর্ণের হিন্দু। ভারতের ওই ধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ড আন্তর্জাতিকভাবে সাড়া তৈরি করেছিল।
ধর্ষণে গুরুতর আহত অবস্থায় দিল্লির এক হাসপাতালে ভর্তি করার দুই সপ্তাহ পর ওই তরুণীর মৃত্যু হয়। এরপর তার পরিবারের সদস্যদের অনুমতি না নিয়েই রাতের আঁধারে তরুণীর মরদেহ দাহ করার অভিযোগ ওঠে উত্তরপ্রদেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বিরুদ্ধে। মরদেহ দাহ করার ছবিও প্রকাশ পেয়েছিল সেই সময়।
তবে এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে উত্তরপ্রদেশ পুলিশ। এ ছাড়া রাজ্যের এক জেষ্ঠ্য সরকারি কর্মকর্তার দাবি, ধর্ষণের কোনো ঘটনা ঘটেনি, কারণ ধর্ষণের শিকার ওই তরুণীর দেহে কারও বীর্যের উপস্থিতি পাওয়া যায়নি।
ঘটনার তদন্তে স্থানীয় পুলিশ এবং কর্তৃপক্ষের ভূমিকায় ভারতের অভ্যন্তরে এবং আন্তর্জাতিকভাবে ক্ষোভ ও নিন্দার ঝড় ওঠে। অভিযুক্তরা উচ্চবর্ণের হওয়ায় তাদের বাঁচানোর জন্য মামলাকে ভিন্ন খাতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ ওঠে পুলিশের বিরুদ্ধে।
হাথরাসের ঘটনায় ব্যাপক ক্ষোভ, নিন্দা ও সমালোচনার পরিপ্রেক্ষিতে মামলার তদন্তের দায়িত্ব উত্তর প্রদেশ পুলিশের পরিবর্তে ভারতের সিবিআই-কে (সেন্ট্রাল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন) হস্তান্তর করা হয়।
এর আগে সমগ্র ভারতজুড়ে আলোড়ন তুলেছিল ২০১২ সালে দিল্লিতে বাসে এক তরুণীকে ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনা।
ভারতে তীব্র আন্দোলন এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে এ বিষয়ে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার প্রেক্ষিতে ধর্ষণ আইন পরিবর্তনে বাধ্য হয়েছিল তৎকালীন সরকার।
তবে দেশটির সাম্প্রতিক পরিসংখ্যান লক্ষ্য করলে পরিবর্তিত এই আইন ভারতীয় নারীদের ধর্ষণ থেকে রক্ষা করতে কতখানি কার্যকর ভূমিকা রাখছে, সে প্রশ্ন থেকেই যায়।
বিবিসির শনিবারের অনলাইন প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়ে লিখেছে, ভারতে আইন থাকা সত্ত্বেও পুরো দেশব্যাপী উচ্চবর্ণের লোকদের হাতে ব্যাপকমাত্রায় বৈষম্য ও নির্যাতনের শিকার হন দলিত সম্প্রদায়ের লোকজন।
এসএমডব্লিউ/ এএস