কিয়েভ ও চেরনিহিভ থেকে সেনা প্রত্যাহারের কারণ দনবাস?

দনবাস (দনেতস্ক ও লুহানস্ক) অঞ্চলের স্বাধীনতা সংগ্রাম এগিয়ে নিতেই ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভের চারপাশ ও দেশটির দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর চেরনিহিভ থেকে রুশ সেনা প্রত্যাহার করার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ইগর কোনাশেনকভ বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন।
ইউক্রেনে অভিযান শুরুর প্রথম পর্যায়ে প্রতিপক্ষকে রাশিয়ার শক্তি-সামর্থ্য ও সমরাস্ত্র সম্পর্কে ‘ধারণা’ দেওয়ার জন্যই দেশটির বিভিন্ন অঞ্চলে হামলা চালানো হয়েছিল উল্লেখ করে কোনোশেনকভ বলেন, ‘ইউক্রেনের সরকার যেন দনবাস অঞ্চলে তাদের সেনা উপস্থিতি বাড়াতে না পারে, সেজন্য তাদের যুদ্ধক্ষেত্রে ব্যস্ত রাখাতেই প্রথম পর্যায়ে রাজধানী কিয়েভসহ দেশটির বিভিন্ন শহরে অভিযান চালানো হয়েছিল।’
‘আমাদের লক্ষ্য ছিল ইউক্রেনের সামরিক স্থাপনাগুলোকে লক্ষ্যবস্তু করা এবং বেসামরিক নিহতের সংখ্যা যতদূর সম্ভব নিম্নপর্যায়ে রাখা। এছাড়া ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় বড় ধরনের আঘাত হানা ও যেসব পথে দেশটির সেনাবাহিনীর কাছে যুদ্ধের রসদপত্র সরবরাহ করা হয়, সেই পথসমূহ দখল করাও অন্যতম লক্ষ্য ছিল আমাদের।’
‘গত একমাসে আমাদের নেওয়া লক্ষ্যসমূহ অনেকাংশেই পূর্ণ হয়েছে। এখন দনবাসের স্বাধীনতা সংগ্রামকে এগিয়ে নিতে হবে আমাদের। এজন্যই কিয়েভ ও শেরনিহিভ থেকে সেনা প্রত্যাহার করে নেওয়া হবে।’
পশ্চিমা দেশগুলোর সামরিক জোট ন্যাটোকে ঘিরে দ্বন্দ্বের জেরে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরু করে রুশ বাহিনী। অভিযান শুরুর দু’দিন আগে, ২২ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় দুই ভূখণ্ড দনেতস্ক ও লুহানস্ককে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয় রাশিয়া।
গত ২৬ মার্চ রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও দেশটির সামরিক বাহিনীর জেনারেল স্টাফ’স মেইন অপারেশনস অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের প্রধান সের্গেই রুডস্কয় এক সাক্ষাৎকারে বিবিসিকে বলেন, ইউক্রেনে চলমান রুশ অভিযানের মূল লক্ষ্য দেশটির পূর্বাঞ্চলীয় দুই ভূখণ্ড দনেতস্ক ও লুহানস্ককে (ডনবাস অঞ্চল) স্বাধীন করা এবং ইতোমধ্যে অভিযানের প্রাথমিক পর্যায় শেষ করেছে রুশ বাহিনী।
তারপর মঙ্গলবার রাশিয়ার উপ প্রতিরক্ষামন্ত্রী আলেকজান্ডার ফোমিন ঘোষণা দেন ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভের চারপাশ ও চেরনিহিভ শহর থেকে দ্রুত সেনা প্রত্যাহার করে নেওয়া হবে।
তার এই ঘোষণার পর অনেকেই ধারণা করেছিলেন, ইউক্রেনে যুদ্ধবিরতির প্রস্তুতি হিসেবে এই ঘোষণা দিয়েছে রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়।
অবশেষে বুধবার সেনা প্রত্যাহার ঘোষণার প্রকৃত কারণ ব্যাখ্যা করলেন ইগর কোনাশেনকভ।
সূত্র: রয়টার্স, রিয়া নভোস্তি
এসএমডব্লিউ