ইইউর বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি রাশিয়ার

প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের প্রধান সমালোচক ও বিরোধীনেতা অ্যালেক্সিই নাভালনিকে গ্রেপ্তার এবং ইউরোপের তিন দেশের কূটনীতিকদের বহিষ্কারের প্রতিক্রিয়ায় ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) যদি মস্কোর ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে, তাহলে তা মেনে নিয়ে ইইউয়ের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করতে রাশিয়া প্রস্তুত রয়েছে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ।
শুক্রবার এক বিবৃতিতে রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘এটা সত্য যে ইউরোপীয় ইউনিয়ন যদি এমন কোনো পদক্ষেপ নেয় তাহলে আমাদের অর্থনীতির কয়েকটি খাত বেশ ঝুঁকির মধ্যে পড়বে। কিন্তু তারপরও আমারা বলব, যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলা করে সামনে এগিয়ে যাওয়ার মানসিক প্রস্তুতি রয়েছে রাশিয়ার।’
জার্মানিতে চিকিৎসা শেষে দেশে পৌঁছানোর পর গত ১৮ জানুয়ারি বিমানবন্দর থেকে গ্রেপ্তার হন নাভালনি। এরপর তার মুক্তির দাবিতে রাজধানী মস্কো, দ্বিতীয় প্রধান শহর সেইন্ট পিটার্সবুর্গসহ রাশিয়ার বিভিন্ন শহরে শুরু হয় গণবিক্ষোভ। এই বিক্ষোভ ঠেকাতে ইতোমধ্যে কয়েকহাজার বিক্ষোভকারীকে আটক ও গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। কিন্তু তাতেও পরিস্থিতির বিশেষ উন্নতি না হওয়ায় অবশেষে রাজধানী মস্কোসহ সংক্ষুব্ধ শহরগুলোতে লকডাউন জারি করে ভ্লাদিমির পুতিনের নেতৃত্বাধীন রাশিয়ার কেন্দ্রীয় সরকার।
ইউরোপের দুই প্রভাশালী দেশ ফ্রান্স এবং জার্মানির উদ্যোগে নাভালনির মুক্তির ব্যাপারে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে আলোচনা করতে গত ৩ ফেব্রুয়ারি মস্কোতে পৌঁছান ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্র বিভাগের শীর্ষ কর্মকর্তা জোসেপ বরেল।
কিন্তু ওইদিনই বরেলের সঙ্গে পুতিনের সাক্ষাতের কয়েক ঘন্টা পর ইইউ জোটভূক্ত তিনদেশ জার্মানি, সুইডেন ও পোল্যান্ডের কূটনীতিকদের বহিষ্কার করে রাশিয়ার সরকার। তাদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগে বলা হয়, এই কূটনীতিকরা গত ২৩ জানুয়ারি মস্কোতে ‘বেআইনি বিক্ষোভ সামাবেশে’ অংশ নিয়েছিলেন।
এর প্রতিক্রিয়ায় গত সপ্তাহে জার্মানি, সুইডেন ও পোল্যান্ড নিজেদের দেশ থেকে বহিষ্কার করেছে রাশিয়ার কূটনীতিকদের। কয়েকজন প্রভাবশালী ইউরোপীয় কূটনীতিক বৃহস্পতিবার আন্তর্জাতিক বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, অবিলম্বে নাভালনিসহ আটক বন্দিদের মুক্তি দেওয়া না হলে রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের বিষয়ে ভাবছেন ইইউ নেতারা।
রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওয়েবাসাইটে প্রকাশ হওয়া বিবৃতিতে সের্গেই লাভরভ বলেন, ‘আমরা বৈশ্বিক জীবনযাত্রা থেকে বিচ্ছিন্ন হতে চাই না, কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে এ বিষয়টি মোকাবিলা করতে হবে আমাদের; কারণ রাশিয়া যুদ্ধ নয়, শান্তি চায়।’
সূত্র: রয়টার্স
এসএমডব্লিউ