যথাসময়ে হারানো মর্যাদা ফিরে পাবে জম্মু-কাশ্মির: অমিত শাহ

ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ব্যাপক আলোচিত জম্মু-কাশ্মির রাজ্যকে কেন্দ্রশাসিত দু’টি অঞ্চলে বিভক্ত করার বিষয়ে দেশটির সংসদে কথা বলেছেন। শনিবার দেশটির পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ লোকসভায় ২০১৯ সালে পাস হওয়া ওই বিলের ব্যাপারে তিনি বলেন, জম্মু এবং কাশ্মিরকে যথাসময়ে রাজ্যের মর্যাদা ফিরিয়ে দেওয়া হবে।
দেশটির সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ বিলোপ ও জম্মু ও কাশ্মির রাজ্যের মর্যাদা প্রত্যাহার নিয়ে লোকসভায় বিরোধীদের প্রশ্নের জবাবে অমিত শাহ বলেন, ‘যখন কাশ্মির বিভক্ত করা হয়েছিল, তখন কোথাও লেখা ছিল না যে ভূস্বর্গ রাজ্যের মর্যাদা ফিরে পাবে না। সঠিক সময়ে রাজ্যের মর্যাদা ফিরিয়ে দেওয়া হবে জম্মু ও কাশ্মিরকে।’
তিনি বলেন, ‘আমি বিল উপস্থাপন এনেছি। এই বিল পেশ করেছি। কী জন্য এই সংশোধনী বিল আনা হয়েছে, তা আপনাদের ব্যাখ্যা করে বলেছি। আপনারা ভুয়া সংবাদ ছড়ানো বন্ধ করুন। অতীতে কি কোনও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলকে রাজ্যের মর্যাদা দেওয়া হয়নি? অতীতে কি কখনও কোনও সীমান্তবর্তী অঞ্চলকে রাজ্যের মর্যাদা দেওয়া হয়নি? তা হলে জম্মু ও কাশ্মির এসবের থেকে আলাদা হবে কী করে?
১৭ মাস আগে ভারতের ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকার ৩৭০ অনুচ্ছেদ বিলোপের পাশাপাশি জম্মু ও কাশ্মিরকে বিভক্ত করে জম্মু ও কাশ্মির এবং লাদাখ নামে কেন্দ্রশাসিত দু’টি অঞ্চলের ঘোষণা দেয়। কাশ্মিরের নেতা ওমর আবদুল্লাহ, মেহবুবা মুফতিসহ অন্যান্যরা বিজেপি সরকারের এই সিদ্ধান্তের তীব্র বিরোধিতা করেন।
লোকসভায় কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে বিরোধীরা শনিবার জানতে চান, রাজ্য ভাগ ও ৩৭০ অনুচ্ছেদ বিলোপের পর কী এমন উন্নতি হয়েছে ভারতের এই সীমান্ত রাজ্যের? কাশ্মিরি পণ্ডিতদের দুর্দশার কথা তুলে ধরে অমিত শাহর তীব্র সমালোচনা করেন কংগ্রেসের বহরমপুরের সাংসদ অধীররঞ্জন চৌধুরী।
তিনি বলেন, এতদিন হয়ে গেল, তারপরও কাশ্মিরের পণ্ডিতদের ২০০-৩০০ একর জমি ফিরিয়ে দিতে পারেনি কেন্দ্রীয় সরকার। কেন নির্বাচনী ইশতেহারে বিজেপি কাশ্মির থেকে বিতাড়িত ব্রাহ্মণ পণ্ডিতদের ফেরানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল? তাহলে কি নির্বাচন শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রতিশ্রুতিও হাওয়া মিলিয়ে গেছে বিজেপির? কাশ্মীরের বাণিজ্য পরিস্থিতি থেকে শুরু করে অন্য একাধিক বিষয়েও প্রশ্ন করেন অধীর।
জবাবে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘রাজ্য বিভক্ত হওয়ার মাত্র ১৭ মাস হয়েছে। এর মধ্যে এত প্রশ্নের অর্থ কী? প্রশ্ন তো তাদের করা উচিত, যারা প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে কাশ্মিরের শাসনভার পরিচালনা করেছেন। ৭০ বছরে কতটুকু উন্নতি হয়েছে? আমি কাশ্মিরের উন্নতির খতিয়ান দিতে দায়বদ্ধ। কিন্তু যারা প্রশ্ন তুলছেন, তারা নিজেদের একবার প্রশ্ন করে দেখতে পারেন, তা হলেই পাল্টা প্রশ্নের গ্রহণযোগ্যতা স্পষ্ট হবে।’
সূত্র: এনডিটিভি, আনন্দবাজার।
এসএস