লাখ লাখ ডলারের নকল করোনা টিকা: চীনে মূল হোতা আটক

লাখ লাখ ডলারের নকল করোনা টিকা কেলেঙ্কারির মূল হোতাকে আটক করেছে চীন। আটককৃত ওই ব্যক্তি স্যালাইন ও খনিজ পানীয় একসঙ্গে মিশিয়ে ‘করোনা টিকা’ হিসেবে উৎপাদন ও তা বিক্রির নামে জালিয়াতি করে আসছিল।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, টিকা কেলেঙ্কারিতে আটক ওই ব্যক্তির নাম বলা হয়েছে কং। সে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় ৫৮ হাজারেরও বেশি ডোজ নকল করোনা টিকা তৈরি করে। এসব টিকা তৈরির আগে ওই ব্যক্তি আসল কোভিড-১৯ টিকার প্যাকেজিংও নকল করে।
এছাড়া নকল এসব করোনা টিকার একটি অংশ চীন থেকে বিদেশে পাচার করা হয়েছে। তবে কোন দেশে পাচার করা হয়েছে তা অবশ্য জানানো হয়নি বলে জানিয়েছে বিবিসি। সর্বশেষ কং-কে আটক করার মধ্য দিয়ে নকল ভ্যাকসিন কেলেঙ্কারিতে এখন পর্যন্ত ৭০ জন অভিযুক্তকে আটক করা হলো। নকল ভ্যাকসিন উৎপাদন ও বাজারজাত প্রতিহত করতে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার কথা ঘোষণার পর এসব ব্যক্তিকে আটক করে চীন।
২০টির বেশি মামলায় এসব ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে। বিবিসি জানিয়েছ, এখন এ বিষয়ে নতুন তথ্য বের হলেও দায়েরকৃত এসব মালার বেশিরভাগই আসলে গত বছরের।
আদালতে উপস্থাপিত তথ্য অনুযায়ী, গত বছরের আগস্ট থেকে ছোট ছোট সিরিঞ্জ বোতলে স্যালাইন বা খনিজ পানি ভরে সেগুলো করোনা টিকা নামে বিক্রি করে আসছিলেন প্রতারক কং এবং তার দল। এছাড়া এই সময়ের মধ্যে ওইসব নকল টিকা বিক্রি করে চীনা মুদ্রায় এক কোটি ৮০ লাখ (প্রায় ২৮ লাখ মার্কিন ডলার) অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে চক্রটি।
বিবিসি জানিয়েছে, নকল এসব করোনা টিকার ৬০০ ডোজ গত বছরের নভেম্বরে হংকংয়ে পাচার করা হয়। টিকা বিক্রির সময় প্রতারক চক্রের এসব সদস্য সাধারণ মানুষের কাছে দাবি করে যে, কোভিড-১৯ টিকা উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সুসম্পর্ক থাকার কারণে এসব টিকা তারা গোপনে বাইরে এনেছে।
এর আগে চলতি মাসের শুরুতে ভুয়া টিকাবিরোধী অভিযান চালিয়ে অনেককে আটক করে চীনা কর্তৃপক্ষ। মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন-এর প্রতিবেদনে সেসময় বলা হয়, গত বছরের সেপ্টেম্বর থেকে এমন অভিযান চালাচ্ছে বেইজিং। কয়েক মাস ধরেই মানুষের কাছে ভুয়া টিকা বিক্রি করে বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছিল একটি অসাধু চক্র।

চীন দেশীয়ভাবে সিনোভ্যাকের ও সিনোফার্ম নামে দুটি কোম্পানির উদ্ভাবিত করোনা টিকার মাধ্যমে দেশের মানুষকে টিকা দিচ্ছে। চীন ছাড়াও তুরস্কসহ আরও বেশ কিছু দেশের মানুষকেও এসব টিকা দেওয়া হচ্ছে।
চীনা এই দুই কোম্পানি প্রাথমিকভাবে দাবি করেছিল যে তাদের টিকাগুলো ৭৮ শতাংশের বেশি কার্যকর ছিল। তবে ব্রাজিলে চূড়ান্ত ধাপের ট্রায়ালে দেখা গেছে সিনোভ্যাকের টিকা ৫০ দশমিক ৩৮ শতাংশ কার্যকর।
সূত্র: বিবিসি
টিএম