আর্জেন্টিনায় নারীদের প্রতি সহিংসতা রোধে হাজারো মানুষের মিছিল

নারী হত্যা ও নারীর প্রতি সহিংসতার রোধের দাবিতে দক্ষিণ আমেরিকার অন্যতম বৃহৎ দেশ আর্জেন্টিনায় মিছিল করেছেন হাজার হাজার মানুষ। ৩ জুন বিকেলে রাজধানী বুয়েন্স এইরেসে হয়েছে এই মিছিল।
সাম্প্রতিক সময়ে সহিংসতার কারণে নিহত হওয়া বিভিন্ন বয়সী বেশ কয়েকজন নারী ও কিশোরীর ছবি ছিল মিছিলকারীদের হাতে। পাশাপাশি নারীর প্রতি সহিংসতা বন্ধের আহ্বান জানানো বিভিন্ন বক্তব্য সম্বলিত অজস্র ব্যানার ও প্ল্যাকার্ড বহন করতে র্দেখা গেছে তাদের।
শনিবার এক প্রতিবেদনে বার্তাসংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, আর্জেন্টিনার পার্লামেন্ট ন্যাশনাল কংগ্রেসও সমর্থন করেছে এই প্রতিবাদ কর্মসূচি। রাজধানীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে শুক্রবার সন্ধ্যায় যখন পার্লামেন্ট চত্বরে উপস্থিত হন মিছিলকারীরা, সেসময় তাদের সমর্থনে পার্লামেন্ট চত্বরে সাধারণ আলোর পরিবর্তে জ্বলে ওঠে গোলাপি রঙের আলো, ইউরোপ ও আমেরিকার সংস্কৃতিতে যা নারীত্বের প্রতীক।
ফুটবল খেলায় বিশ্বজুড়ে খ্যাতি অর্জন করা আর্জেন্টিনায় দিন দিন ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে নারীর প্রতি সহিংসতা। দেশটির সুপ্রিম কোর্টের নারী বিষয়ক কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, গত বছর প্রতি ৩৫ ঘণ্টায় একজন করে নারী নিহত হয়েছেন আর্জেন্টিনায়, আর এই নিহতদের ৮১ শতাংশই পারিবারিক নির্যাতনের শিকার।
মিছিলে অংশ নেওয়া ৫০ বছর বয়সী মারিনা পেরেজ পেশায় একজন রেলকর্মী। রয়টার্সকে তিনি বলেন, ‘নিহত এই নারীদের অধিকাংশই পারিবারিক নির্যাতনের প্রতিকার চেয়ে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছিলেন পুলিশ ও নারী বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে; কিন্তু তারপরও তাদেরকে জীবন দিতে হলো।’
‘কী কারণে এই সহিংসতা বাড়ছে তার কোনো উত্তর নেই। সহিংসতা রোধে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না; ভবিষ্যতে নেওয়া হবে কি না— তেমন কোনো প্রতিশ্রুতিও আমরা পাইনি।’
তবে মিছিলে অংশগ্রহণকারী ৫৮ বছর বয়সী আলেজান্দ্রিয়া লুমের মতে, আর্জেন্টিনার নিপীড়ণমূলক পিতৃতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থা ও সরকারের উদাসীনতার কারণেই দিন দিন দেশটিতে বাড়ছে নারীর প্রতি সহিংসতা।
রয়টার্সকে তিনি বলেন, ‘অধিকাংশ ক্ষেত্রেই নারী সহিংসতা বিষয়ক অভিযোগগুলো খুব হেলাফেলার সঙ্গে দেখা হয়। বিচার বিভাগের দীর্ঘসূত্রীতার সমস্যা রয়েছে, তবে সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো আর্জেন্টিনার সমাজে প্রচলতি নিপীড়ণমূলক পিতৃতন্ত্র।’
এসএমডব্লিউ