পরমাণু চুক্তি : ইরানের সঙ্গে আলোচনায় প্রস্তুত যুক্তরাষ্ট্র

ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানির সঙ্গে জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মেরকেলের ফোনালাপের ঠিক পরদিন পারমাণবিক চুক্তি নিয়ে তেহরানের সঙ্গে আলোচনায় প্রস্তুত থাকার কথা জানাল যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র এমন তথ্যই জানিয়েছেন শুক্রবার।
শুধু জার্মান চ্যান্সেলর ও ইরানের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে আলোচনা নয় বিষয়টি নিয়ে গতকাল ফ্রান্সের আয়োজনে প্যারিসের এক ভার্চুয়াল বৈঠকে ফ্রান্স ও যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেনের আলোচনা পর ওয়াশিংটন এমন ইঙ্গিত দিল।
ব্রিটিশ দৈনিক গার্ডিয়ান অনলাইন প্রতিবেদনে লিখেছে, ওবামা প্রশাসনের সময় ইরানের সঙ্গে ছয় বৃহৎ ক্ষমতাধর জাতির স্বাক্ষরিত ওই চুক্তি থেকে ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহার করে নেওয়ার পর শুরু হওয়া অচলাবস্থা নিরসনে মধ্যস্থতা করছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)।
২০১৫ সালে যুক্তরাষ্ট্র ছাড়াও ছয় জাতি জয়েন্ট কম্প্রিহেনসিভ প্ল্যান অব অ্যাকশন নামের চুক্তিটি করে। কিন্তু সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প চুক্তি থেকে বেরিয়ে উল্টো ইরানের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন।
মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র নেড প্রাইস বলেছেন, ইরানসহ তেহরানের সঙ্গে করা চুক্তির অংশীদার বাকি পাঁচ দেশগুলোর সঙ্গে আলোচনার জন্য ইউরোপীয় ইউনিয়নের উচ্চ পর্যায় থেকে আসা আমন্ত্রণ গ্রহণ করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
২০১৫ সালে যুক্তরাষ্ট্র ছাড়াও এসব দেশ জয়েন্ট কম্প্রিহেনসিভ প্ল্যান অব অ্যাকশন নামের পরমাণু চুক্তিটি করে ইরান। চুক্তি অনুযায়ী ইরান ইউরেনিয়ামের মজুত একটি নির্দিষ্ট সীমার মধ্যে রাখতে ও তাদের পারমাণবিক স্থাপনা পরিদর্শন করতে দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
বিপরীতে যুক্তরাষ্ট্রসহ বাকি পক্ষগুলো ইরানের ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা ধীরে ধীরে প্রত্যাহার করবে। কিন্তু ২০১৬ সালে প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেওয়ার পর তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প চুক্তি থেকে বেরিয়ে উল্টো ইরানের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন।
চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহার করে নিয়ে ইরান প্রশ্নে কঠোর নীতি নেওয়া ট্রাম্পের কারণে চুক্তিটি নিয়ে অচলবস্থার তৈরি হয়। ইরান তার প্রতিশ্রুতি থেকে সরে এসে ইউরেনিয়ামের মজুত বাড়ানোর ঘোষণা দেওয়ার পর চুক্তিটি জিইয়ে রাখতে নড়েচড়ে বসেছে ইইউ।
তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা প্রশাসন যখন এই চুক্তি করে তখন ভাইস প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব সামলানো জো বাইডেন গত জানুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেওয়ার পর ইউরোপ আশা করছে তিনি এই চুক্তিতে ফিরবেন।
বাইডেন অবশ্য ক্ষমতা গ্রহণের পর ইরানের সঙ্গে চুক্তি নিয়ে ইতিবাচক ইঙ্গিত দিয়েছেন। তবে তিনি অবশ্য সম্প্রতি বলেছিলেন, তিনি এই চুক্তিতে আবার যোগ দেওয়ার চেষ্টা করবেন। তবে তার আগে ইরানকে পরমাণু বিষয়ক কিছু সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসতে হবে।
আরও পড়ুন- পরমাণু চুক্তি নিয়ে মেরকেল-রুহানি ফোনালাপ
এএস