শ্রীলঙ্কায় বোমা হামলা: সিরিসেনার বিচারের সুপারিশ

সতর্কবার্তা পাওয়া সত্ত্বেও দু’বছর আগে ইস্টার সানডের দিন শ্রীলঙ্কায় আত্মঘাতী বোমা হামলা ঠেকাতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হওয়ায় দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট মাইথ্রিপালা সিরিসেনা ও তার শীর্ষ গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের বিচারের সম্মুখীন করার সুপারিশ করেছেন ওই ঘটনার তদন্তকারীরা।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। ২০১৯ সালের ২১ এপ্রিল ইস্টার সানডেতে শ্রীলঙ্কার তিনটি হোটেল ও তিনটি গির্জায় আত্মঘাতী ওই বোমা হামলায় ২৭৯জন নিহত হয়েছিলেন।
ঘটনার পাঁচ মাস পর ‘প্রেসিডেনশিয়াল কমিশন অব ইনকোয়ারি’ নামে একটি তদন্ত দল গঠন করেছিলেন শ্রীলঙ্কার তৎকালীন প্রেসিডেন্ট মাইথ্রিপালা সিরিসেনা।মঙ্গলবার দেশটির পার্লামেন্টে ওই প্রতিবেদন জমা দিয়েছে কমিশন। মোট ৪৪০ জন প্রত্যক্ষদর্শীর সঙ্গে কথা বলে এই প্রতিবেদন প্রস্তুত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কমিশন সদস্য।
প্রতিবেদনে তদন্ত কমিশন সদস্যরা হামলার ঘটনা ঠেকাতে সিরিসেনার বিরুদ্ধে অবহেলা প্রদর্শনের অভিযোগ করেছেন। এ বিষয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, হামলা সংঘটিত হওয়ার আগে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তারা সিরিসেনাকে এ ব্যাপারে সতর্ক করেছিলেন। ইস্টার সানডের ১৭ দিন আগেই হামলার ঝুঁকির বিষয়ে সতর্কবার্তা দিয়েছিলেন তারা।
কিন্তু হামলা প্রতিহত করতে কার্যকর পদক্ষেপ না নেওয়ায় সাবেক এই প্রেসিডেন্ট ও তাঁর গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের বিচারের সম্মুখীন করা যৌক্তিক বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে কমিশন। এ সম্পর্কে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘দণ্ডবিধির উপযুক্ত কোনো ধারায় সাবেক প্রেসিডেন্ট সিরিসেনার বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলার কার্যক্রম পরিচালনা করা উচিত।’
সিরিসেনা বর্তমানে শ্রীলঙ্কার ক্ষমতাসীন দল ‘শ্রীলঙ্কা ফ্রিডম পার্টির’ একজন আইনপ্রণেতা। আগে তিনি হামলা নিয়ে কোনো সতর্কবার্তা পাওয়ার কথা অস্বীকার করেছিলেন; তবে তদন্ত প্রতিবেদন জমা হওয়ার পর এ নিয়ে তার মন্তব্য জানা যায়নি।
ভারতীয় গোয়েন্দাদের কাছ থেকে হামলার সতর্কবার্তা পাওয়ার পর সম্ভাব্য হামলা ঠেকাতে পদক্ষেপ না নেওয়ায় সিরিসেনার গোয়েন্দাপ্রধান নিলান্থ জয়াবর্ধনেকেও ফৌজদারি অপরাধে অভিযুক্ত করা হয় তদন্ত প্রতিবেদনে। সেখানে বলা হয়, জয়াবর্ধনে ওই গোয়েন্দা তথ্যকে খাটো করে দেখেছিলেন। এ ছাড়া পুলিশের তৎকালীন মহাপরিদর্শক পুজিথ জয়সুন্দরকেও অবহেলাজনিত অপরাধে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো উচিত।
প্রতিবেদনে বলা হয়, সমন্বিত ওই হামলায় অর্থায়ন করে স্থানীয় এক মসলা ব্যবসায়ীর পরিবার। ওই ব্যবসায়ীর দুই ছেলেও আত্মঘাতী হামলায় অংশ নিয়েছিলেন।
হামলার দুই দিন পর সন্ত্রাসী গোষ্ঠী আইএস এর দায় স্বীকার করে। তবে স্থানীয় হামলাকারী ও আইএসের মধ্যে সরাসরি সংশ্লিষ্টতার কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে তদন্ত কমিশন।
সূত্র: আলজাজিরা
এসএমডব্লিউ