ট্রাম্পের ট্রুথ সোশ্যালকে নিষিদ্ধ করল গুগল প্লে

Dhaka Post Desk

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

৩১ আগস্ট ২০২২, ১০:০০ এএম


ট্রাম্পের ট্রুথ সোশ্যালকে নিষিদ্ধ করল গুগল প্লে

সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ট্রুথ সোশ্যালকে গুগল প্লে থেকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। নীতিমালা লঙ্ঘনের অভিযোগে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে গুগল। বুধবার (৩১ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

গুগল বলেছে, ট্রাম্পের এই সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মটি শারীরিক হুমকি এবং সহিংসতার প্ররোচনার মতো বিষয়বস্তু নিষিদ্ধ করার ক্ষেত্রে তাদের নীতিমালা লঙ্ঘন করেছে। আর এই পদক্ষেপের ফলে অ্যান্ড্রয়েড ফোন ব্যবহারকারীদের জন্য ট্রাম্পের অ্যাপটি ডাউনলোড করা কঠিন হয়ে উঠবে।

অবশ্য ট্রুথ সোশ্যালের সিইও ডেভিন নুনেস আগেই গুগলকে ‘একচেটিয়া’ অধিকার প্রতিষ্ঠাকারী প্রতিষ্ঠান বলে অভিহিত করেছিলেন।

বিবিসি বলছে, ট্রুথ সোশ্যাল চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে অ্যাপলের অ্যাপ স্টোরে চালু হয়। যদিও সূচনালগ্ন থেকেই এটি নানা সমস্যার মধ্যেই বেষ্টিত ছিল। তবে ট্রুথ সোশ্যাল অ্যাপটি গুগল প্লে-তে পাওয়া যায় না। মূলত গুগলের এই প্লাটফর্মের মাধ্যমেই বেশিরভাগ অ্যাপ অ্যান্ড্রয়েড ফোনে ডাউনলোড করা হয়ে থাকে।

গত সপ্তাহে ট্রুথ সোশ্যাল-এর সিইও বলেছিলেন, তাদের অ্যাপটি (প্লে স্টোরে) পাওয়া যাবে কিনা সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে ‘গুগল প্লে স্টোর’। কিন্তু গুগল বলেছে, তারা ট্রুথ সোশ্যালকে নিয়ম মেনে চলতে অনুরোধ করেছে।

গুগলের একজন মুখপাত্র বিবিসিকে বলেছেন: ‘গত ১৯ আগস্ট আমরা ট্রুথ সোশ্যালকে স্ট্যান্ডার্ড নীতিমালা লঙ্ঘনের বিষয়ে অবহিত করেছি। ব্যবহারকারীদের সংযত রাখার জন্য কার্যকর সিস্টেম থাকা যেকোনো অ্যাপের জন্য গুগল প্লে-তে আমাদের পরিষেবার শর্তাবলীর মধ্যে একটি।’

অবশ্য ট্রুথ সোশ্যালের এসব সমস্যা কিভাবে সমাধান করা যায় সে বিষয়ে ট্রাম্পের এই প্রতিষ্ঠানকে পরামর্শও দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে গুগল। তবে গুগলের এই সর্বশেষ সিদ্ধান্তের বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি ট্রুথ সোশ্যাল।

ট্রুথ সোশ্যালকে প্রায়ই ‘মুক্ত বক্তৃতা’ বা বাক স্বাধীনতার প্ল্যাটফর্ম হিসাবে বর্ণনা করা হয়। তবে যাইহোক, অ্যাপটি বিশ্বের বেশিরভাগ ফোনে ডাউনলোডযোগ্য হওয়ার জন্য এটি অ্যাপল এবং গুগলের মাধ্যমে অনুমোদিত হতে হবে।

উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্রের গণতন্ত্রের প্রতীক ওয়াশিংটন ডিসির ক্যাপিটল ভবনে হামলা ও সহিংসতা চালাতে সমর্থকদের উস্কানি দেওয়ার অভিযোগে গত বছরের জানুয়ারিতে জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক ও টুইটারে নিষিদ্ধ হন ট্রাম্প। ট্রাম্প সমর্থকদের সেদিনের সেই ঘটনায় পুলিশ কর্মকর্তাসহ পাঁচজন নিহত হয়েছিলেন। এই হামলার ফলে যুক্তরাষ্ট্রের গণতন্ত্রের ভিত কেঁপে উঠেছিল।

এই ঘটনার পর ট্রাম্পের টুইটার অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেওয়া হয়। ১০ বছরেরও বেশি সময় ধরে ব্যবহার হওয়া ওই অ্যাকাউন্টটিতে ট্রাম্পের প্রায় নয় কোটি ফলোয়ার ছিলেন। কিন্তু ক্যাপিটল হিলে হামলায় ডোনাল্ড ট্রাম্প উসকানি দিয়েছেন, এমন অভিযোগ তুলে টুইটার কর্তৃপক্ষ তৎকালীন বিশ্বের ক্ষমতাধর ব্যক্তিটির অ্যাকাউন্ট চিরতরে বন্ধ করে দেয়।

অবশ্য টুইটারে নিজের বন্ধ অ্যাকাউন্ট ফেরত পেতে গত বছরের অক্টোবরে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন সাবেক এই প্রেসিডেন্ট। তবে এতে কোনো ফল হয়নি। এরপর সময় বদলেছে। বদলেছে ট্রাম্পের পরিকল্পনাও। অভিমানী ট্রাম্প এখন নিজের সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্ম ‘ট্রুথ সোশ্যাল’ নিয়ে পথ চলছিলেন।

তবে গুগলের সিদ্ধান্তে ট্রাম্প যে বড়সড় একটা ধাক্কা খেলেন তাতে কোনো সন্দেহ নেই।

টিএম

Link copied