গুজরাট দাঙ্গা ছিল বড় শিক্ষা : অমিত শাহ

ছবি : এনডিটিভি
ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও ক্ষমতাসীন দল বিজেপির অন্যতম জেষ্ঠ্য নেতা অমিত শাহ বলেছেন, ২০০২ সালে গুজরাটে ঘটা ভয়াবহ দাঙ্গা থেকে শিক্ষা নিয়েছে বিজেপি। ওই দাঙ্গার জন্য প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেসকে পরোক্ষভাবে দায়ীও করেছেন তিনি।
শিগগিরই শুরু হতে যাচ্ছে ভারতের পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য গুজরাটের বিধানসভা নির্বাচন। ১ লাখ ৯৬ হাজার ২৪ বর্গকিলোমিটার আয়তনের এই রাজ্যের বিধানসভায় আসনসংখ্যা মোট ২০৯টি। তার মধ্যে ১৮২টি আসনে ভোট গ্রহণ হবে আগামী ১ ও ৮ ডিসেম্বর।
নির্বাচন উপলক্ষ্যে মঙ্গলবার গুজরাটের মাহুধা শহরে বিজেপির এক প্রচারিভাযান সভায় বক্তৃতা দিতে গিয়ে অমিত শাহ বলেন, ‘১৯৯৫ সালের আগ পর্যন্ত গুজরাট যত দিন কংগ্রেস শাসনাধীনে ছিল, সে সময় রাজ্যে নিয়মিত সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা হতো। কংগ্রেস গুজরাটের বিভিন্ন ধর্ম ও বর্ণের লোকজনের মধ্যে পরস্পরের প্রতি অসহিষ্ণু মনোভাব ঘন ঘন উস্কে দিত, আর দাঙ্গা বাঁধলেই তা থেকে রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের চেষ্টায় থাকত। নিজেদের কথিত ভোটব্যাংক রক্ষার নামে নিয়মিত এই রাজ্যে অশান্তি জারি রাখত কংগ্রেস।’
‘২০০২ সালের ভয়াবহ দাঙ্গা মূলত কংগ্রেসের সেই বিভেদমূলক রাজনীতির পরিণতি। কারণ দাঙ্গাকারীরা কংগ্রেসের রাজনীতির সঙ্গে পরিচিত ছিল, সেই রাজনীতিতে অভ্যস্ত হয়ে উঠেছিল।’
‘কিন্তু গুজরাটবাসী সেই দাঙ্গা থেকে শিক্ষা নিয়েছে। জনগণ এখন আর বিভেদের রাজনীতি চায় না। ২০০২ সালের পর ২০২২ সাল পর্যন্ত গুজরাটে কোনো দাঙ্গা হয়নি এবং তার কৃতিত্বের দাবিদার বিজেপি। যারা এই দাঙ্গায় উস্কানি দিয়েছিল, তাদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে বিজেপি গুজরাটের শান্তি ফিরিয়ে এনেছে।’
ভারতীয় উপমহাদেশের সবচেয়ে রক্তক্ষয়ী সাম্প্রদায়ীক সহিংসতার একটি বড় উদাহারণ গুজরাট দাঙ্গা। ২০০২ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি সকালে গুজরাটের পঞ্চমহল জেলার গোধরা শহরে হিন্দু তীর্থযাত্রীদের বহনকারী একটি ট্রেনে আগুন ধরিয়ে দেয় দুষ্কৃতিকারীরা। সেই আগুনে পুড়ে নিহত হন ৫৯ জন তীর্থযাত্রী।
তার পরপরই রাজ্যেজুড়ে হিন্দু ও মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে ভয়াবহ দাঙ্গা শুরু হয়। সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, প্রায় তিন মাস ধরে চলা সেই দাঙ্গায় তৎকালীন রাজধানী আহমেদাবাদসহ ছোট-বড় বিভিন্ন শহরে ১ হাজার ৪০ জন নিহত, ২ হাজার ৫০০ জন আহত এবং ২২৩ জন নিখোঁজ হন। নিহতদের মধ্যে ৭৯০ জন মুসলিম ও ২৫৪ জন হিন্দু ধর্মাবলম্বী ছিলেন।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ— উভয়েরই জন্ম, বেড়ে ওঠা ও রাজনীতিতে হাতেখড়ি গুজরাটে। এ রাজ্যটি বিজেপির শক্তিশালী ঘাঁটি হিসেবেও পরিচিত।
দাঙ্গার সময় গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন নরেন্দ্র মোদি। তার বিরুদ্ধে দাঙ্গায় উসকানি দেওয়ার অভিযোগও উঠেছিল। তবে সম্প্রতি ভারতের সর্বোচ্চ আদালত নরেন্দ্র মোদিকে এই অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দিয়েছে।
এসএমডব্লিউ