আশ্রিত পুলিশ সদস্যদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠাবে না ভারত

মিয়ানমারে সামরিক অভ্যুত্থানের পর সেখান থেকে ভারতের মিজোরাম রাজ্যে পালিয়ে আসা পুলিশ সদস্যদের আশ্রয় দেবে ভারত। মিজোরাম রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী জোরামথাঙ্গা(৭৬) এক সাক্ষাৎকারে বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে এই তথ্য জানিয়েছেন।
সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘আমরা যদি সাধারণ কাণ্ডজ্ঞান দিয়ে বিবেচনা করি, তাহলে বুঝতে পারব— যখন কোনও দেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা চলে এবং মানুষের বাঁচা-মরা নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দেয়, সে সময় নিজেদের জীবন বাঁচাতে যারা প্রতিবেশী রাষ্ট্রে আশ্রয় নেয়, সাধারণত তাদেরকে ফেরত পাঠানো হয় না।’
গত ১ ফেব্রুয়ারি অভ্যুত্থানের মাধ্যমে মিয়ানমার সেনাবাহিনী রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করার পর থেকে এ পর্যন্ত দেশটির বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্য সীমান্ত পাড়ি দিয়ে ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন। মিজোরাম রাজ্য সরকার যদিও বলছে, এই সংখ্যা বিশ থেকে ত্রিশের বেশি নয়; কিন্তু রাজ্যের উর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, মিয়ানমারের সঙ্গে সীমান্ত লাগোয়া মিজোরামের পাঁচটি জেলায় মিয়ানমারের শতাধিক পুলিশ সদস্য ও তাদের পরিবার আশ্রয় নিয়েছে।
মিয়ানমার-মিজোরাম সীমান্তের দৈর্ঘ্য ৪০৪ কিলোমিটার (২৫০ মাইল)। একটি ছোট নদী এই দু’ দেশের সীমান্তের মাঝখান দিয়ে বয়ে গেছে; কিন্তু তা সীমান্ত পেরুনোর পথে বড় কোনও বাধা হিসেবে কাজ করে না। বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠী অধ্যুষিত মিজোরাম রাজ্যের লোকজ সংস্কৃতির সঙ্গেও সাদৃশ্য রয়েছে মিয়ামানমারের সংস্কৃতির।
মিজোরামের যে পাঁচটি জেলায় আশ্রয় নিয়েছেন মিয়ানমারের পুলিশ সদস্যরা, তাদের মধ্যে চাম্ফাই জেলায় লুকিয়ে থাকা ৮ মিয়ানমার পুলিশ সদস্যকে ফেরত চেয়ে চাম্ফাইয়ের ডেপুটি কমিশনার বরাবর সম্প্রতি চিঠি দিয়েছেন মিয়ানমারের ফালাম জেলার ডেপুটি কমিশনার।
চিঠিতে ফালামের ডেপুটি কমিশনার লিখেছেন, ‘দু’দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ককে উর্ধ্বে রেখে ওই আট পুলিশ সদস্যকে অবিলম্বে আটক এবং মিয়ানমার সরকারের কাছে তাদের হস্তান্তর করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য আপনার প্রতি অনুরোধ জানানো হচ্ছে।’
সোমবার রয়টার্সকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে কার্যত সেই চিঠির উত্তর জানালেন মিজোরামের মুখ্যমন্ত্রী জোরামথাঙ্গা। তিনি বলেন, চিঠির অনুলিপি ইতোমধ্যে দিল্লির কেন্দ্রীয় সরকার বরাবর পাঠানো হয়েছে, তবে সেখান থেকে কোনও নির্দেশনা এখনও আসেনি।
‘তাদের প্রতি আমাদের সহানুভূতি রয়েছে। মানবিক দৃষ্টিকোন থেকে বিবেচনা করলে এখন আমাদের উচিত তাদের খাদ্য দেওয়া, আশ্রয় দেওয়া।’
সূত্র: রয়টার্স
এসএমডব্লিউ