ইকুয়েটরিয়াল গিনিতে বিস্ফোরণ: নিহত বেড়ে ৯৮

মধ্য আফ্রিকার জ্বালানি সম্পদসমৃদ্ধ দেশ ইকুয়েটরিয়াল গিনির বন্দরনগরী বাটার একটি সামরিক ঘাঁটিতে ধারাবাহিক বিস্ফোরণের ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৯৮ জনে পৌঁছেছে। আহত হয়েছেন আরও প্রায় ৬১৫ জন। স্থানীয় সময় রোববার সন্ধ্যায় শহরের ওই সামরিক ঘাঁটি এলাকায় পরপর চারবার বিস্ফোরণে এই হতাহতের ঘটনা ঘটে।
তবে কিভাবে এই বিস্ফোরণ ঘটল এবং কারা এজন্য দায়ী তা এখনও জানা যায়নি। শহরের হাসপাতালগুলো আহত রোগীতে ভরে উঠেছে। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক নারী ও শিশু রয়েছে।
১৯৭৯ সাল থেকে দেশের ক্ষমতায় থাকা ইকুয়েটরিয়াল গিনির প্রেসিডেন্ট তিউদোরো ওবিয়াং এনগুয়েমা এই বিস্ফোরণের জন্য ডিনামাইট তত্ত্বাবধানের দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিদের অবহেলাকে দায়ী করেছেন। বিস্ফোরণের কারণে বাটা শহরের প্রায় সকল বাড়িঘরই ধ্বংস হয়ে গেছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
এদিকে টুইটারে দেওয়া এক পোস্টে দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বিস্ফোরণের ঘটনায় আহতদের মানসিক স্বাস্থ্য সেবা দিতে চিকিৎসক, সাইকিয়াট্রিস্ট এবং নার্সদের সমন্বয়ে মেন্টাল হেলথ ব্রিগেড গঠন করা হয়েছে। মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ‘বিস্ফোরণের কারণে মানুষের কেবল শারীরিক ক্ষতিই হয়নি, মানসিক ভাবেও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তারা।’
প্রাকৃতিক গ্যাস ও পেট্রোলিয়াম সমৃদ্ধ ইকুয়েটরিয়াল গিনির অন্যতম প্রধান শহর বাটায় প্রায় আট লাখ মানুষের বাস। দেশটির মোট জনসংখ্যা ১ কোটি ৪০ লাখ। ১৯৬৮ সালের আগ পর্যন্ত স্পেনের একটি উপনিবেশ ছিল ইকুয়েটরিয়াল গিনি। ওই বছর দেশটি স্বাধীনতা লাভ করে।
প্রাকৃতিক সম্পদে সমৃদ্ধ হলেও দেশটির জনগণের মধ্যে অর্থনৈতিক অসাম্য মধ্য আফ্রিকার অন্যান্য দেশের তুলনায় অনেক বেশি। করোনা মহামারি ও আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম পড়ে যাওয়ার কারণে জাতীয় আয় হ্রাস পাওয়ায় গত বছর থেকে এই সংকট আরো প্রকট হয়েছে।
প্রেসিডেন্ট তিউদোরো ওবিয়াং এনগুয়েমা গত ৪২ বছর ধরে দেশ শাসন করছেন। তার ছেলে তিওদোরো এনগুয়েমা ওবিয়াং মানাগুয়ে বর্তমানে দেশটির ভাইস প্রেসিডেন্ট। ধারণা করা হচ্ছে, বর্তমান প্রেসিডেন্টের মৃত্যুর পর তিনিই এই দায়িত্ব গ্রহণ করবেন।
গত বছর আগস্টে লেবাননের রাজধানী বৈরুতের বন্দর এলাকার একটি শস্যগুদামে এ রকম এক ভয়াবহ বিস্ফোরণে ১৩৭ জন মারা গিয়েছিলেন, আহত হয়েছিলেন আরও প্রায় ৫ হাজার মানুষ।
সূত্র: আলজাজিরা
টিএম