মিয়ানমার: দুর্নীতির দায়ে সু চির আরও ৭ বছরের কারাদণ্ড

Dhaka Post Desk

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

৩০ ডিসেম্বর ২০২২, ১২:১৫ পিএম


মিয়ানমার: দুর্নীতির দায়ে সু চির আরও ৭ বছরের কারাদণ্ড

ফাইল ছবি

সামরিক অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হয়ে গৃহবন্দি থাকা মিয়ানমারের গণতন্ত্রপন্থি নেত্রী অং সান সু চিকে আরও ৭ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। দুর্নীতিতে জড়িত থাকার অভিযোগে সু চিকে এই সাজা দেওয়া হয়।

সামরিক শাসিত মিয়ানমারের একটি আদালত শুক্রবার (৩০ ডিসেম্বর) সু চির বিরুদ্ধে এই রায় ঘোষণা করে। শুক্রবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুক্রবার সামরিক শাসিত মিয়ানমারের একটি আদালত ক্ষমতাচ্যুত নেত্রী অং সান সু চিকে দুর্নীতির পাঁচটি অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করেছে এবং তাকে সম্মিলিত সাত বছরের জন্য কারাদণ্ড দিয়েছে।

সু চির বিরুদ্ধে রায়ের বিষয়টি সম্পর্কে জানেন এমন একটি সূত্রের বরাত দিয়ে রয়টার্স এই তথ্য সামনে এনেছে। আর এর মধ্য দিয়ে মিয়ানমারের এই গণতন্ত্রপন্থি নেত্রীর বিরুদ্ধে মামলার গোপন বিচারিক কার্যক্রম শেষ হলো।

সূত্রটির বরাত দিয়ে রয়টার্স জানিয়েছে, সামরিক-শাসিত মিয়ানমারের একটি আবদ্ধ আদালতে শুক্রবার সু চির বিরুদ্ধে এই রায় ঘোষণা করা হয়। মূলত মিয়ানমারের ডি ফ্যাক্টো বা প্রকৃত নেতা থাকাকালীন হেলিকপ্টার ইজারা এবং এর ব্যবহার সংক্রান্ত অপরাধের জন্য তাকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে।

রয়টার্স বলছে, বিষয়টি অত্যন্ত সংবেদনশীল হওয়ায় ওই সূত্রটি তার পরিচয় প্রকাশ করতে চায়নি। আর সু চির বিরুদ্ধে রায় নিয়ে ক্ষমতাসীন জান্তার মুখপাত্রের মন্তব্যের জন্য চেষ্টা করা হলেও তার সঙ্গে তাৎক্ষণিকভাবে যোগাযোগ করা যায়নি।

মিয়ানমারে গণতন্ত্রের জন্য কয়েক দশকের দীর্ঘ প্রচারণার জন্য নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী অং সান সু চি তার রাজনৈতিক জীবনের বেশিরভাগ সময় সামরিক সরকারের অধীনে বন্দি অবস্থায় কাটিয়েছেন।

গত বছরের ডিসেম্বর থেকে মিয়ানমারের সামরিক আদালতে সু চিকে অন্তত ২৬ বছরের সাজা দেওয়া হয়েছে। আর শুক্রবার তাকে আরও সাত বছরের কারাদণ্ডের আদেশ দেন বিচারক। অবশ্য সু চিকে দোষী সাব্যস্ত করা পাঁচটি অভিযোগের প্রত্যেকটিতে সর্বোচ্চ ১৫ বছরের শাস্তির বিধান রয়েছে।

পশ্চিমা দেশগুলো অবশ্য মিয়ানমারের জান্তার শাসনের অধীনে সু চির বিচারকে প্রতারণা হিসাবে আখ্যা দিয়ে প্রত্যাখ্যান করেছে। সু চি ইতোমধ্যেই গত ১৩ মাসে বিভিন্ন অপরাধের জন্য দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন এবং এর সবগুলোকেই তিনি অযৌক্তিক বলে অভিহিত করেছেন।

সু চির বিরুদ্ধে যেসব অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে, তার মধ্যে নির্বাচনী প্রচারণা চালানোর সময় কোভিড-১৯ বিধিনিষেধ ভঙ্গ করা, বেআইনিভাবে রেডিও সরঞ্জামের মালিকানা, উসকানি, রাষ্ট্রীয় গোপনীয়তা আইন লঙ্ঘন এবং দেশের নির্বাচন কমিশনকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করার মতো বিষয়গুলো রয়েছে।

মিয়ানমারের জান্তা জোর দিয়ে বলেছে, সু চির বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ বৈধ এবং স্বাধীন আদালতের মাধ্যমে যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে সাজা দেওয়া হয়েছে।

উল্লেখ্য, ২০২১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি অভ্যুত্থানের মাধ্যমে মিয়ানমারের ক্ষমতাসীন গণতান্ত্রিক সরকারকে হটিয়ে ক্ষমতা দখল করে দেশটির সামরিক বাহিনী। এরপর বন্দি করা হয় গণতন্ত্রপন্থি নেত্রী অং সান সু চি ও তার দল ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্র্যাসির (এনএলডি) বিভিন্ন স্তরের কয়েক হাজার নেতাকর্মীকে।

টিএম

Link copied