বিশ্বের ‘সবচেয়ে বড় মানব পাচারকারী’ আটক

বিশ্বের সবচেয়ে বড় দাগী মানব পাচারকারীকে সুদান থেকে আটক করেছে ইন্টারন্যাশনাল ক্রিমিনাল পুলিশ অর্গানাইজেশন (ইন্টারপোল)।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা শুক্রবার (৬ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে এ তথ্য।
ওই মানব পাচারকারীর নাম কিদানে জেকারিয়াস হাবতেমারিয়াম। তিনি দক্ষিণ-পূর্ব আফ্রিকার দেশ ইরিত্রিয়ার নাগরিক। ইন্টারপোলের ‘মোস্ট ওয়ান্টেড’ তালিকায় ছিলেন জেকারিয়াস।
কিদানে জেকারিয়াস হাবতেমারিয়াম মানবপাচারের গডফাদার হিসেবে পরিচিত ছিলেন। তিনি লিবিয়ায় একটি ক্যাম্প স্থাপন করেছিলেন। এই লিবিয়া হয়ে পূর্ব আফ্রিকার অভিবাসী প্রত্যাসীরা ইউরোপে ঢোকার চেষ্টা করে থাকেন।
এসব অভিবাসী প্রত্যাসীদের অপহরণ, ধর্ষণ ও তাদের কাছ থেকে জোরপূর্ব অর্থ আদায়ের অভিযোগ রয়েছে কিদানে জেকারিয়াসের বিরুদ্ধে।
সংযুক্ত আরব আমিরাতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা সাঈদ আব্দুল্লাহ আল-সুয়াইদি বৃহস্পতিবার (৫ জানুয়ারি) সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, গত ১ জানুয়ারি তাদের সহায়তায় গডফাদার কিদানে জেকারিয়াসকে সুদানে আটক করা হয়।
এক বিবৃতিতে এ কর্মকর্তা বলেছেন, ‘আমরা ইউরোপে মানব পাচারের গুরুত্বপূর্ণ একটি পথ এখন বন্ধ করতে সমর্থ হয়েছি। যেটি দিয়ে অবৈধভাবে কয়েক হাজার ইরিত্রিয়ান, ইথিওপিয়ান, সোমালিয়ান এবং সুদানিসদের লিবিয়া হয়ে ইউরোপে পাঠানো হয়েছে।’
অপরদিকে ইন্টারপোল এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ইরিত্রিয়ার এ মানব পাচারকারী ২০১৯ সাল থেকে তাদের নজরদারিতে ছিলেন। তিনি বিশেষ করে অমানবকি এবং অভিবাসী প্রত্যাসীদের ওপর নির্যাতন চালানোর জন্য কুখ্যাতি অর্জন করেছিলেন।
গডফাদার কিদানে জেকারিয়াস হাবতেমারিয়ামের ভাইয়ের একটি অ্যাকাউন্টে অবৈধ লেনদেনের পর গত বছর তার বিরুদ্ধে যৌথ তদন্ত শুরু করে আরব আমিরাত এবং ইন্টারপোল।
আরব আমিরাতের ওই কর্মকর্তা জানিয়েছেন, এখন তার বিরুদ্ধে অর্থ পাচারের অভিযোগে বিচার করা হবে। এরপর তাকে ইরিত্রিয়ার হাতে তুলে দেওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করা হবে।
২০২০ সালে জেকারিয়াসকে ইরিত্রিয়ায় আটক করা হয়েছিল। কিন্তু মাত্র এক বছর পর জেল থেকে পালিয়ে যান তিনি। এরপর তার অনুপস্থিতিতে তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
জেকারিয়াস লিবিয়ার বানি ওয়ালিদে একটি আস্তানা তৈরি করেছিলেন। সেখানে তিনি মানুষকে অত্যাচার ও নির্যাতন করতেন।
আরব আমিরাতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, জেকারিয়াসের পুরো চক্রটি ধ্বংস করা হবে এবং অধিকতর তদন্ত শেষে তার সঙ্গে আরও যারা জড়িত আছেন তাদের সবাইকে আটক করে বিচারের মুখোমুখি করা হবে।
সূত্র: আল জাজিরা
এমটিআই