পারমাণবিক ক্ষমতাসম্পন্ন নতুন আন্ডারওয়াটার ড্রোন পরীক্ষা কিমের

Dhaka Post Desk

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

২৪ মার্চ ২০২৩, ১০:৫৪ এএম


পারমাণবিক ক্ষমতাসম্পন্ন নতুন আন্ডারওয়াটার ড্রোন পরীক্ষা কিমের

পারমাণবিক ক্ষমতাসম্পন্ন নতুন একটি অ্যাটাক ড্রোন পরীক্ষা করেছে উত্তর কোরিয়া। শুক্রবার (২৪ মার্চ) পূর্ব এশিয়ার এই দেশটির মিডিয়া রিপোর্টে এই তথ্য সামনে আনা হয়েছে।

এছাড়া দক্ষিণ কোরিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের যৌথ সামরিক মহড়া বন্ধ করা উচিত বলে সতর্ক করে দিয়েছেন উত্তর কোরিয়ার সর্বোচ্চ নেতা কিম জং উন। শুক্রবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।

উত্তর কোরিয়ার সরকারি সংবাদমাধ্যম দ্য কোরিয়ান সেন্ট্রাল নিউজ এজেন্সি (কেসিএনএ) জানিয়েছে, পরীক্ষার সময় উত্তর কোরিয়ার নতুন ড্রোনটি ৮০ থেকে ১৫০ মিটার (২৬০-৫০০ ফুট) গভীরতায় ৫৯ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে পানির নিচে ভ্রমণ করে এবং বৃহস্পতিবার উত্তর কোরিয়ার পূর্ব উপকূলের পানিতে অ-পারমাণবিক পেলোড বিস্ফোরণ ঘটায়।

বিশ্লেষকরা বলছেন, এই ধরনের কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়াকে নিজেদের বৈচিত্র্যময় পারমাণবিক সক্ষমতা প্রদর্শন করছে উত্তর কোরিয়া। যদিও পিয়ংইয়ং এখনও সন্দিহান যে, পরীক্ষার পরও ওই ডুবো যানটি হামলা বা প্রতিরক্ষার জন্য আসলেই প্রস্তুত কিনা।

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক কার্নেগি এনডাউমেন্ট ফর ইন্টারন্যাশনাল পিস’র সিনিয়র ফেলো অঙ্কিত পান্ডা বলেছেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র এবং দক্ষিণ কোরিয়াকে উত্তর কোরিয়া এই সংকেত দিতে চায় যে, কোনও যুদ্ধ বাঁধলে পিয়ংইয়ংয়ের পারমাণবিক অস্ত্র নিয়ে মিত্রদের উদ্বিগ্ন হতে হবে এবং এর লক্ষ্যবস্তুও হবে বিশাল।’

তিনি বলেন, ‘উত্তর কোরিয়া বৈচিত্র্যময় পারমাণবিক সক্ষমতার মধ্যে সাইলোস, রেলওয়ে কার, সাবমেরিন এবং সড়কে ভ্রাম্যমাণ ক্ষেপণাস্ত্র লঞ্চার থাকবে। এবং এখন তারা এই আন্ডারওয়াটার টর্পেডো নিজেদের বহরে যোগ করছে।’

কেসিএনএ জানিয়েছে, ‘হাইল’ বা সুনামি নামে পরিচিত উত্তর কোরিয়ার নতুন এই ড্রোন সিস্টেমটি পানিতে লুকিয়ে শত্রুর ওপর আক্রমণ করা এবং পানির নিচে বিস্ফোরণের মাধ্যমে বড় তেজস্ক্রিয় তরঙ্গ তৈরি করে নৌবাহিনীর স্ট্রাইক গ্রুপ ও প্রধান অপারেশনাল বন্দরগুলোকে ধ্বংস করার উদ্দেশ্যে তৈরি করা হয়েছে।

কিম জং উন এই পরীক্ষাটি তত্ত্বাবধান করেছেন জানিয়ে উত্তর কোরিয়ার এই সরকারি সংবাদমাধ্যমটি বলছে, ‘এই পারমাণবিক আন্ডারওয়াটার অ্যাটাক ড্রোনটি যে কোনও উপকূল এবং বন্দরে মোতায়েন করা যেতে পারে বা অপারেশনের জন্য জাহাজ দিয়ে টেনে নেয়াও যেতে পারে।’

দক্ষিণ কোরিয়ার এক সামরিক কর্মকর্তা বলেছেন, তারা উত্তর কোরিয়ার এই দাবি বিশ্লেষণ করছেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন মার্কিন কর্মকর্তা বলেছেন, পরমাণু পরীক্ষার কোনও ইঙ্গিত পাওয়া যায়নি।

অবশ্য এটা এখনও স্পষ্ট নয় যে, উত্তর কোরিয়া তার ছোট অস্ত্রগুলোতে ফিট করার জন্য প্রয়োজনীয় ক্ষুদ্রাকৃতির পারমাণবিক ওয়ারহেড সম্পূর্ণরূপে তৈরি করেছে কিনা। বিশ্লেষকরা বলছেন, উত্তর কোরিয়া যদি আবার পারমাণবিক পরীক্ষা শুরু করে তাহলে এই ধরনের ওয়ারহেড নিখুঁত করাই হবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্য।

উল্লেখ্য, উত্তর কোরিয়া গত বছর প্রায় ৭০টি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালায়। যার মধ্যে আটটি আন্তঃমহাদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্রও রয়েছে। দেশটির ইতিহাসে যা এক বছরে সবচেয়ে বেশি ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালানোর রেকর্ড।

এছাড়া যুক্তরাষ্ট্র, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া এবং তাদের মিত্রদের হুমকির কারণে নিজেদের সামরিক শক্তি আরও আধুনিকরণের ঘোষণাও দিয়েছে পিয়ংইয়ং।

টিএম

Link copied