লটারি জয়ের চাপ সামলানো শেখাতে প্রশিক্ষণ শিবির ভারতে

কয়েক দিন আগে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের বীরভূম জেলার বোলপুরের এক মাছ বিক্রেতা লটারি জিতে রাতারাতি কোটিপতি হয়ে যান। তবে আচমকা ভাগ্যবদলের চাপ সামলাতে পারেননি তিনি। সুখবর পাওয়ামাত্র জ্ঞান হারান তিনি।
লটারি জিতে কেবল আতঙ্কজনিত কারণে পুলিশের দ্বারস্থও হন অনেকে। এমন মানসিক চাপের পাশাপাশি কোটি টাকা হেলায় নষ্ট করার উদাহরণও রয়েছে। এমন সব কাণ্ড ঠেকাতে সম্প্রতি উদ্যোগ নিয়েছে ভারতের সর্বদক্ষিণের রাজ্য কেরালার রাজ্য লটারি দপ্তর। লটারিজয়ীদের জন্য বিশেষ প্রশিক্ষণ তথা পরামর্শ শিবিরের আয়োজন করেছে দপ্তর। ভারতে প্রথমবার ঘটল এই ঘটনা।
বুধবার ছিল কেরল রাজ্য লটারি দপ্তরে সেই বিশেষ শিবির। যেখানে অংশগ্রহণ করেন গত বছর আগস্ট মাস থেকে চলতি বছরের মার্চ মাস পর্যন্ত লটারি বিজেতারা। শিবিরে ফিক্সড ডিপোসিট, মিউচুয়াল ফান্ড, শেয়ার মার্কেটে অর্থ বিনিয়োগের পরামর্শ দেওয়া হয়। এইসঙ্গে মনোবিদরা লটারি জেতা ব্যক্তিদের পরামর্শ দেন, কীভাবে মানসিক চাপ থেকে দূরে থাকা সম্ভব।
কেরালা রাজ্য লটারি দপ্তরের পরিচালক আব্রাহাম রেন এস বলেন, ‘অপ্রত্যাশিতভাবে বিজয়ীদের কাছে যখন বিপুল পরিমাণ অর্থ চলে আসে, তখন অনেকই বুঝে উঠতে পারেন না, এই টাকা দিয়ে কী করবেন। অধিকাংশ বিজয়ীই স্বল্পশিক্ষিত হন। আমাদের কাছে খবর আছে, অনেকেই পুরো টাকা কিছুদিনের মধ্যে নষ্ট করে ফেলেন। এই প্রশিক্ষণ কর্মসূচীর উদ্দেশ্য হল মানুষের ভাগ্যকে সঠিক পথে পরিচালনা করা এবং লটারি থেকে প্রাপ্ত অর্থ যাতে কেউ নষ্ট করে ফেলেন, তা দেখা।’
আব্রাহাম জানান, লটারি জেতা ব্যক্তিরা বিপুল পরিমাণ অর্থ পেয়ে মানসিক চাপে পড়ে যান। একে তো আচমকা ভাগ্যবদল। এছাড়াও আত্মীয় প্রতিবেশী সকলে তাঁদের কাছে অর্থ চাইতে চলে আসেন। এই কারণেই মনোবিদের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
কেরালায় লটারির টিকিট থেকে বার্ষিক ব্যবসার পরিমাণ ৭ হাজার কোটি টাকারও বেশি। রাজ্যে টিকিট বিক্রির সঙ্গে যুক্ত বিক্রেতার সংখ্যা ২ লাখেরও রাজ্য লটারি দপ্তর প্রতিদিন ১.০৮ কোটি লটারির টিকিট ছাপেন এবং প্রায় সব টিকিটই বিক্রি হয়ে যায়। রাজ্য লটারির কর্তাদের দাবি, মোট আয়ের ৯০ শতাংশ বিজয়ীদের পুরস্কার অর্থ এবং এজেন্টদের কমিশনের আকারে জনসাধারণের কাছে ফিরে যায়।
এসএমডব্লিউ