২০২৮ সালেই অর্থনীতিতে যুক্তরাষ্ট্রকে ছাড়িয়ে যাবে চীন

করোনায় বিশ্বঅর্থনীতির মুখ থুবড়ে পড়ছে। যার প্রভাব পড়েছে বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ যুক্তরাষ্ট্রে। করোনা মহামারির এই ‘সুযোগে’ বিপর্যস্ত যুক্তরাষ্ট্রকে ছাড়িয়ে যাবে চীন। এমনটাই দাবি করা হয়েছে এক গবেষণায়।
গবেষণায় বলা হয়, ২০২৮ সালের মধ্যে বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতির দেশে পরিণত হবে চীন। আরও পাঁচ বছর পর এই তকমা পাওয়ার কথা বলা হয়েছিল বিশ্বের বৃহৎ জনসংখ্যার দেশটিকে। কিন্তু করোনা চীনকে নির্দিষ্ট সময়ের আগেই সেই সুযোগ করে দিচ্ছে।
শনিবার (২৬ ডিসেম্বর) সেন্টার ফর ইকোনমিক অ্যান্ড বিজনেস রিসার্চ (সিইবিআর) তার বাৎসরিক প্রতিবেদন প্রকাশ করে। সেখানে বলা হয়, কিছু সময় ধরে বিশ্ব অর্থনীতির প্রথম হওয়া নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে নীরব বাণিজ্যযুদ্ধ চলে আসছিল। কিন্তু করোনা মহামারি ও অর্থনৈতিক ধস এই যুদ্ধে চীনকে এগিয়ে দেয়।
যুক্তরাজ্যভিত্তিক এই গবেষণা প্রতিষ্ঠান জানায়, চীন দক্ষতার সঙ্গে করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলা করে। শুরুতেই কঠোর লকডাউন ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা দেশটিকে পশ্চিমা অর্থনীতি থেকে এগিয়ে দেয়।
২০২১-২০২৫ সাল পর্যন্ত চীন তাদের গড় অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ৫.৭ শতাংশ হওয়ার আশা করছে, যা ২০২৬-২০৩০ পর্যন্ত ধীরগতি পেয়ে ৪.৫ শতাংশে নেমে আসতে পারে।
২০২১ সালে যুক্তরাষ্ট্র মহামারি পরবর্তী অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে শক্তিশালী পদক্ষেপ নিতে পারে। যার ফলে ২০২২ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে দেশটির প্রবৃদ্ধি ১.৯ শতাংশ হতে পারে। এরপর তা ১.৬ শতাংশে নেমে আসতে পারে।
ভারত ২০৩০ সালের দিকে জাপানকে পেছনে ফেলার আগ পর্যন্ত দেশটি বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ হিসেবে থাকবে। আর জার্মানি চতুর্থ থেকে পঞ্চম অর্থনীতির দেশে পরিণত হবে।
বর্তমানে বৃহত্তম অর্থনীতির দেশের তালিকায় থাকা যুক্তরাজ্য ২০২৪ সাল নাগাদ ষষ্ঠ স্থানে চলে আসবে বলে ধারণা করছে সিইবিআর।
ব্রেক্সিটের কারণে ২০২১ সালে ব্রিটিশ অর্থনীতি ধাক্কা খেলেও ২০৩৫ সালের মধ্যে দেশটির জিডিপি ডলার মূল্যে ফ্রান্সের চেয়ে ২৩ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে।
ব্রিটিশ গবেষণা প্রতিষ্ঠানের দেওয়া পূর্বাভাস অনুযায়ী, ২০২০ সালে শীর্ষ ১০ বৈশ্বিক অর্থনীতির মধ্যে ইউরোপীয় ইউনিয়নের অবদান ছিল ১৯ শতাংশ, তবে ২০৩৫ সালের মধ্যে এটি নেমে আসবে ১২ শতাংশে। যদি ব্রিটেনের সঙ্গে ইউরোপীয় ইউনিয়নের আকস্মিক কোনো দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হয় তবে তা আরো কমবে।
করোনা মহামারির প্রভাব বিশ্ব অর্থনীতিতে হালকা নয় বরং বড় মূল্যস্ফীতির বিস্ফোরণের মাধ্যমে ঘটতে পারে বলে সতর্ক করেছে সিইবিআর।
প্রতিষ্ঠানটি জানায়, আমরা দেখছি ২০২০ সালের মাঝামাঝি নাগাদ একটি অর্থনৈতিক চক্র সুদের হারের সঙ্গে বৃদ্ধি পাচ্ছে। যেসব দেশ করোনা মহামারি ঠেকাতে বড় ধরনের ঋণ নিয়েছে সেসব দেশের সামনে তা চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
তবে, ২০৩০ সালের দিকে বিশ্ব আরো বেশি প্রযুক্তি নির্ভর হয়ে পড়বে বলে জানায় ব্রিটিশ এই গবেষণা প্রতিষ্ঠান।
ওএফ