ভোটের আগে ইমরানের গ্রেপ্তারে কি বাড়তি সুবিধা পাবে পিটিআই?

পাকিস্তানের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের নেতৃত্বে বর্তমান সরকারের বেহাল দশা। অর্থনীতির শিরদাঁড়া ভেঙে গেছে পাকিস্তানে। এমন অবস্থায় শাহবাজের সঙ্গে ইমরানের সংঘাত তুঙ্গে। শাহবাজদের সরিয়ে আরও আবারও ক্ষমতা দখল করতে মরিয়া ইমরানের দল। আর ঠিক এমন সময়েই হঠাৎ করে ইমরানকে গ্রেফতার করে নেওয়া কি পাকিস্তানের মাটিতে বাড়তি অ্যাডভান্টেজ দেবে তেহরিক-ই-ইনসাফকে (পিটিআই)?
সেখানকার রাজনৈতিক সমীকরণ বলছে, বিভিন্ন জনমত সমীক্ষায় এগিয়ে রয়েছে ইমরান খানের দল। পাকিস্তানের ২০১৮ সালের ভোটের পর থেকে এখনও পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন সংস্থা জনমত সমীক্ষা করিয়েছে। তাতে দেখা গেছে, বেশিরভাগ সংস্থার জনমত সমীক্ষাতেই এগিয়ে রয়েছে পিটিআই। কোথাও ৩৫ শতাংশ, কোথাও ৪৫ শতাংশ তো কোথাও আবার প্রায় ৫০ শতাংশ জনমত দেখাচ্ছে ইমরানের দলের সঙ্গে।
সম্প্রতি গ্যালপ সার্ভে সমীক্ষক সংস্থার তরফে পাকিস্তানের সবথেকে জনপ্রিয় নেতা কে, তা খুঁজতে একটি সমীক্ষা করা হয়েছিল। সেখানেও দেখা গেছে, সর্বাধিক মানুষ ইমরান খানকেই পছন্দের রাজনীতিক হিসেবে বেছে নিয়েছেন। ৬১ শতাংশ মানুষ ইমরানের পক্ষে ভোট দিয়েছেন। সেখানে হঠাৎ করে ইমরান খানকে গ্রেপ্তার করায় কী জনমানসে আরও বিরূপ প্রভাব পড়বে না বর্তমান সরকারের জন্য?
ইমরানের গ্রেপ্তারের পর ইতোমধ্যে পাকিস্তানজুড়ে প্রতিবাদ-বিক্ষোভ করছে পিটিআই। ইমরানকে গ্রেপ্তারের পরপরই রাজধানী ইসলামাবাদে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। পেশোয়ারসহ বিভিন্ন জায়গায় হিংসাত্মক প্রতিবাদ দেখা গেছে। করাচিতে পিটিআই সমর্থকদের সঙ্গে পুলিশের খণ্ডযুদ্ধও বেঁধে গেছে।
পুলিশকে লক্ষ্য করে পাথর ছোড়া, পুলিশের গাড়িতে আগুন জ্বালানোর মতো ঘটনা ঘটছে। উত্তাল হচ্ছে পাকিস্তানের বিভিন্ন প্রান্ত। জ্বলছে আগুন। এসবের থেকে কি আসন্ন নির্বাচনে ফায়দা তুলতে পারবে পিটিআই? কারণ, বেশিরভাগ জনমত সমীক্ষা বলছে, সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন হলে পাল্লা ভারী থাকতে পারে ইমরানের দলের দিকেই।
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞ ইমন কল্যাণ লাহিড়ী বলছেন, ‘ওখানে ভোট তো সেভাবে হবে না। ভোটের আগে ক্ষমতা প্রদর্শন হচ্ছে, যা কখনোই বাঞ্ছনীয় নয়। এটি আন্তর্জাতিক দুনিয়ায় খুব একটা সুখকর ঘটনা নয়।’ বর্তমানে পাকিস্তানে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, তাতে ভোট আসলে প্রহসনে পরিণত হবে বলেও মনে করছেন তিনি।
কেএ