জাহাজ আটকে বন্ধ সুয়েজ খাল

বৃহৎ কন্টেইনার জাহাজ আটকে বন্ধ হয়ে গেছে মিসরের সুয়েজ খাল। সরু এই খালে একদিক থেকে অন্যদিকে ঘোরানোর সময় অগভীর পানিতে আটকে যায় জাহাজটি। ভ্যাসেল ট্রাকিং সাইটের বরাত দিয়ে একথা জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, সুয়েজ খালে আটকে যাওয়া জাহাজটির নাম ‘এভার গিভেন’। ৫৯ মিটার (১৯৪ ফুট) চওড়া এই জাহাজটি টেনে বের করে নিতে কয়েকটি উদ্ধারকারী নৌকা (টাগ বোট) মোতায়েন করা হয়েছে। জাহাজাটি যানবাহন পরিবহনের কাজ করে থাকে।
মঙ্গলবার (২৩ মার্চ) সকালে জাহাজটি সুয়েজ বন্দরের উত্তরে খালের মধ্যে আটকে পড়ে। সুয়েজ খাল ভূমধ্যসাগরের সঙ্গে লোহিত সাগরের সংযোগ স্থাপন করেছে। এটি এশিয়া ও ইউরোপকে সংযুক্ত করেছে।
বিবিসি জানিয়েছে, ২০১৮ সালে এভার গিভেন জাহাজটি নির্মাণ করা হয়। পানামায় নিবন্ধনভুক্ত এবং দেশটির পতাকাবাহী এই জাহাজটি চীন থেকে নেদারল্যান্ডসসের রটারডাম বন্দরে যাচ্ছিল। সুয়েজ খাল দিয়ে ভূমধ্যসাগরে প্রবেশের সময় মঙ্গলবার সকালে জাহাজটি আটকে যায়।
সুয়েজ অঞ্চলে ভূমধ্যসাগর ও লোহিত সাগরকে যুক্ত করে ১২০ মাইল (প্রায় ১৯৩ কিলোমিটার) দীর্ঘ এই খালটি খনন করা হয়। ১৮৫৬ সালে গঠিত হয় সুয়েজ ক্যানেল কোম্পানি। প্রায় তিন বছর পর, ১৮৫৯ সালের এপ্রিল মাসে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয় খালটির খননকাজ।
১০ বছর পর ১৮৬৯ সালের ১৭ নভেম্বর নৌ-চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয় সুয়েজ খাল। এই খালের আয় দিয়েই পূরণ হয় মিসরের জাতীয় বাজেটের প্রায় ৮০ শতাংশ।
সুয়েজ খাল খনন করার আগ পর্যন্ত ইউরোপের বিভিন্ন দেশের জাহাজগুলোকে ভূমধ্যসাগর থেকে পুরো আফ্রিকা মহাদেশ ঘুরে, উত্তমাশা অন্তরীপ পাড়ি দিয়ে আরব সাগর হয়ে ভারত এবং প্রশান্ত মহাসাগরে যেতে হতো। এই যাত্রা ছিল সময়সাপেক্ষ ও বিপজ্জনক।
আফ্রিকা মহাদেশ পাড়ি দেওয়ার সময় প্রায়ই ঝড়ের কবলে পড়ে জাহাজডুবির ঘটনা ঘটতো। তবে সুয়েজ খাল খনন ও চালুর পর এশিয়া ও ইউরোপের মধ্যকার দূরত্ব বহুগুনে কমে এসেছে।
সূত্র: বিবিসি
টিএম