রাশিয়ার ভূখণ্ডে আক্রমণ করছে না ইউক্রেন, দাবি জেলেনস্কির

ইউক্রেন রাশিয়ার ভূখণ্ডে আক্রমণ করছে না বলে দাবি করেছেন ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। এমনকি রাশিয়ায় লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করার কোনও পরিকল্পনাও ইউক্রেনের নেই বলে জানিয়েছেন তিনি।
ইউক্রেনীয় এই প্রেসিডেন্ট জার্মানি সফরে গেছেন এবং সেখানেই এই মন্তব্য করেন। জেলেনস্কির এই সফরে জার্মানির কাছ থেকে নতুন করে বড় আকারের প্রতিরক্ষা সহায়তা প্যাকেজ নিশ্চিতও করেছে কিয়েভ। সোমবার (১৫ মে) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জার্মান সেনাবাহিনীর বিমানে রোববার জার্মানির রাজধানী বার্লিনে পৌঁছান প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। রাশিয়া ইউক্রেনে আগ্রাসন শুরুর পর এই প্রথম দেশটিতে গেলেন ইউক্রেনীয় এই প্রেসিডেন্ট। পরে বার্লিনে তিনি জার্মান প্রধানমন্ত্রী এবং চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎসের সঙ্গে বৈঠক করেন।

বিবিসি বলছে, বার্লিনে চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎসের সঙ্গে আলোচনার পর প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি বলেন, ‘আমরা রাশিয়ার ভূখণ্ডে হামলা করছি না। অবৈধভাবে দখল করে নেওয়া এলাকাগুলো দখলমুক্ত করার জন্য আমরা পাল্টা আক্রমণের প্রস্তুতি নিচ্ছি।’
অন্যদিকে ওলাফ শলৎস বলেছেন, যতদিন ইউক্রনের প্রয়োজন হবে, ততদিন তাদের সাহায্য করবে জার্মানি। তার ভাষায়, ‘বরাবরই ইউক্রেনের সঙ্গে জার্মানির বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে। রাশিয়া আক্রমণের পর আমাদের মধ্যে সম্পর্ক আরও ঘনিষ্ঠ হয়েছে।’
শলৎস জানিয়েছেন, জার্মানি কেবল মানবিক এবং সামরিক দিক থেকে ইউক্রেনকে সাহায্য করছে না। রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক দিক থেকেও ইউক্রেনের পাশে আছে। যতদিন প্রয়োজন হবে, ততদিন ইউক্রেনকে সাহায্য করা হবে।
বিবিসি বলছে, রাশিয়ার আগ্রাসন মোকাবিলায় ইউক্রেনকে নতুন করে ২ দশমিক ৭ বিলিয়ন পাউন্ড মূল্যের অস্ত্র সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস। প্রায় প্রতিদিনের মারাত্মক রুশ ক্ষেপণাস্ত্র এবং ড্রোন হামলা থেকে ইউক্রেনকে রক্ষা করার জন্য এই সহায়তা ঘোষণা করা হয়েছে। এছাড়া নতুন এই অস্ত্র সহায়তার মধ্যে উন্নত জার্মান লিওপার্ড ট্যাংক এবং বিমান বিধ্বংসী ব্যবস্থাও রয়েছে।
মূলত প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়ার ‘পূর্ণ-মাত্রায় আগ্রাসনের শুরুর পর থেকে সাম্প্রতিক হামলাগুলোকেই সবচেয়ে বড়’ বলে বর্ণনা করেছেন।
অন্যদিকে চলতি মাসের শুরুতে মস্কোর ক্রেমলিনে কথিত ড্রোন হামলাসহ রাশিয়ার অভ্যন্তরে বারবার লক্ষ্যবস্তুতে হামলা করার জন্য ইউক্রেনকে অভিযুক্ত করেছে মস্কো। তবে ইউক্রেন সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
একইসঙ্গে পূর্ব ইউরোপের এই দেশটি জোর দিয়ে বলেছে, বর্তমানে রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণাধীন অঞ্চলগুলো সম্পূর্ণরূপে দখলমুক্ত করার জন্য শক্তি এবং অন্যান্য উপায় ব্যবহার করার বৈধ অধিকার ইউক্রেনের রয়েছে।
রাশিয়ার দখলে থাকা এলাকাগুলোর মধ্যে দক্ষিণ এবং পূর্বের চারটি অঞ্চল এবং সেইসাথে ২০১৪ সালে দখলে নেওয়া ক্রিমিয়া উপদ্বীপও রয়েছে।
টিএম