হোটেলের পেছন দরজা দিয়ে পালিয়ে বিজেপি নেতাদের রক্ষা

নতুন কৃষি আইনের প্রতিবাদে ভারতজুড়ে চলছে বিক্ষোভ। কৃষকদের এমন বিক্ষোভের মুখে এবার পুলিশ পাহারায় হোটেলের পেছনের দরজা দিয়ে পালিয়ে রক্ষা পেলেন বিজেপির একদল নেতা। শুক্রবার পাঞ্জাবের ফাগওয়ারা এলাকায় এমন ঘটনা ঘটে। ওই হোটেলের মালিক স্থানীয় এক বিজেপি নেতা।
ভারতের গণমাধ্যম আনন্দবাজার ও ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস জানায়, শুক্রবার ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও প্রয়াত বিজেপি নেতা অটল বিহারি বাজপেয়ির জন্মবার্ষিকী উদযাপনে ফাগওয়ারার ওই হোটেলে সমবেত হন রাকেশ দুগ্গাল, পারমিত সিং, অরুণ খোসলাসহ পাঞ্জাব রাজ্য বিজেপির জেলা ও ব্লকপর্যায়ের কয়েকজন নেতা। তারা উপস্থিত হওয়ার কিছু সময়ের মধ্যেই ভারতের আন্দোলনকারী কৃষকদের অন্যতম সংগঠন- ভারতীয় কৃষাণ ইউনিয়নের (বিকেইউ) ভাইস প্রেসিডেন্ট কিরপাল সিং মুসাপুরের নেতৃত্বে সংগঠনের বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী হোটেলটি ঘেরাও করে বিক্ষোভ করতে থাকেন।
তারা সেখানে উপস্থিত সাংবাদিকদের জানান, হোটেলটির মালিক স্থানীয় এক বিজেপি নেতা। তাদের চলমান আন্দোলন বাধাগ্রস্ত করতে ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে তারা ওই হোটেলে মিলিত হয়েছেন। বিষয়টি জানতে পেরে তারা হোটেলটি ঘেরাও করেন।
কৃষকরা আরও জানান, হোটেল মালিকের গোখাদ্য ও পোলট্রি ফিড তৈরির কারখানাও রয়েছে। তারা ওই কারখানার উৎপাদিত পণ্য বর্জনের ডাকও দেন।
এদিকে পাঞ্জাব পুলিশ জানায়, আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কথা বলে পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করা হয়। এ সময় সেখানে উপস্থিত হন ফাগওয়ারা জেলা বিজেপির মহিলা শাখার সভাপতি ভারতী শর্মাসহ কয়েকজন জ্যেষ্ঠ নেতা। তবে কৃষকরা কারও সঙ্গেই কথা বলতে রাজি হননি।
একপর্যায়ে পুলিশ পাহারায় পেছনের দরজা দিয়ে এক এক করে বের হয়ে আসেন হোটেলে অবস্থানরত বিজেপি নেতারা।
ঘেরাও কর্মসূচি প্রসঙ্গে কৃষাণ ইউনিয়নের নেতা কিরপাল সিং সাংবাদিকদের জানান, বাজপেয়ির জন্মবার্ষিকী উদযাপনের আড়ালে চলমান কৃষক আন্দোলনের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করতেই বিজেপির ওই নেতারা জড়ো হয়েছিলেন। এ কারণে তারা হোটেল ঘেরাও কর্মসূচির ডাক দেন।
কর্মসূচি চলাকালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং পাঞ্জাবে বিজেপি নেতৃত্বাধীন রাজ্য সরকারের মুখ্যমন্ত্রী সোম প্রকাশের বিরুদ্ধেও স্লোগান দেন বিক্ষোভকারীরা কৃষকরা।
পেছন দরজা দিয়ে বিজেপি নেতারা পালিয়ে যাওয়ার পর হোটেলের বাইরে ভারতীয় কৃষাণ ইউনিয়নের পতাকা উত্তোলন করেন সংগঠনের নেতাকর্মীরা। পাশাপাশি হোটেলের মালিক স্থানীয় ওই বিজেপি নেতার উদ্দেশ্যে তারা হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, যদি এই পতাকা কখনও নামানো হয় এবং ষড়যন্ত্রের উদ্দেশ্যে হোটেলটিতে বিজেপির কোনো দলীয় বৈঠক ডাকা হয়, তাহলে তারা ফের ঘেরাও কর্মসূচি দেবেন।
এসএমডব্লিউ/এমএআর