ক্লিনিক থেকে ক্লিনিকে ছুটছেন ট্রুডো
করোনাভাইরাস মহামারিতে বিপর্যস্ত সারা বিশ্ব। টানা এক বছরের বেশি সময় ধরে চলছে এই মহামারি। করোনা মোকাবিলায় বিশ্বের হাতেগোনা যে কয়েকজন রাষ্ট্রনেতা প্রশংসনীয় ভূমিকা রাখছেন, তাদের মধ্যে কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো অন্যতম।
করোনাভাইরাস প্রতিরোধে চলমান টিকাদান কর্মসূচি তত্ত্বাবধানে কানাডার একের পর এক ক্লিনিকে ছুটে চলেছেন তিনি। মঙ্গলবার (৩০ মার্চ) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে একথা নিজেই জানিয়েছেন তিনি।
ফেসবুকে দেওয়া ওই পোস্টে কানাডার প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘দেশজুড়ে সকল ক্লিনিকে অনেক অনেক মানুষ করোনার টিকা নিচ্ছেন। অটোয়াতে এমন একটি ক্লিনিক আজ সকালে আমি পরিদর্শন করেছি।’
বেশিসংখ্যক মানুষের টিকা নেওয়াকে ভালো সংবাদ হিসেবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘অনেক মানুষ এখন টিকা নিচ্ছেন। এটা ভালো খবর। কারণ টিকা নেওয়ার ফলে আমাদের প্রিয় মানুষেরা এখন আরও বেশি নিরাপদ এবং মহামারি শেষ হওয়া পর্যন্ত তারা সবাই আমাদের পাশেই থাকবেন।’
In clinics across the country, including the one I visited in Ottawa this morning, more and more people are getting...
Posted by Justin Trudeau on Tuesday, March 30, 2021
এদিকে টিকা গ্রহীতাদের পাশাপাশি জাস্টিন ট্রুডো ধন্যবাদ দিয়েছেন করোনা মহামারি মোকাবিলায় সম্মুখযোদ্ধা হিসেবে কাজ করা স্বাস্থ্যকর্মীদেরও। তার ভাষায়, ‘চলমান টিকাদান কর্মসূচির সঙ্গে জড়িত সবাইকে অনেক ধন্যবাদ। দেশের সবচেয়ে বড় টিকাদান কর্মসূচি এগিয়ে নেওয়ার মাধ্যমে আপনারা মূলত গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বপালন করছেন। আপনাদের কঠোর পরিশ্রমের ব্যাপারে আমরা অবগত আছি।’
এদিকে টিকা নিয়ে রক্ত জমাট বেঁধে যাওয়ার মতো শঙ্কার কারণে ৫৫ বছরের কম বয়সীদের অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা না দেওয়ার সুপারিশ করেছেন কানাডার বিশেষজ্ঞরা। গত সোমবার কানাডার ন্যাশনাল অ্যাডভাইজারি কমিটি অন ইমিউনাইজেশন অ্যান্ড হেলথ এ সুপারিশ করে।
কমিটির উপপ্রধান ডা. শেলে ডিকসের মতে, ‘সম্ভাব্য ঝুঁকির পরিপ্রেক্ষিতে ৫৫ বছরের কম বয়সীদের অ্যাস্ট্রাজেনেকা টিকা দেওয়ার সুবিধা সম্পর্কে যথেষ্ট অনিশ্চয়তা থেকেই এই সিদ্ধান্ত।’
তিনি আরও বলেন, আগে বলা হচ্ছিল, এই টিকা নিয়ে প্রতি দশ লাখে একজনের রক্ত জমাট বাঁধার মতো ঘটনা ঘটতে পারে। কিন্তু ইউরোপে নতুন গবেষণায় দেখা যাচ্ছে, এই সংখ্যাটা লাখে একজন। তাই নতুন এই নির্দেশনা।
ইউরোপে এই টিকা নিয়ে বিরল হলেও যাদের রক্ত জমাট বাঁধার ঘটনা ঘটেছে তাদের বেশিরভাগই নারী এবং বয়স ৫৫ বছরের কম জানিয়ে তিনি বলেন, এছাড়া এর কারণে মৃত্যুর হারও এখন ৪০ শতাংশে গিয়ে ঠেকেছে।
২০১৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর চীনের হুবেই প্রদেশের উহানের একটি সামুদ্রিক খাবার বিক্রির বাজারে প্রথম করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। চীনের গণ্ডি পেরিয়ে দ্রুতগতিতে বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়া এই ভাইরাসে সংক্রমণ এবং মৃত্যুর সংখ্যা বাড়তে থাকায় পরের বছরের ১১ মার্চ করোনা প্রাদুর্ভাবকে বৈশ্বিক মহামারি ঘোষণা করেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) প্রধান ড. টেড্রস আধানম গেব্রেইয়েসুস।
জনস হপকিন্স ইউনিভার্সিটির তথ্য অনুযায়ী, উত্তর আমেরিকার দেশ কানাডায় এখন পর্যন্ত ৯ লাখ ৮০ হাজারেরও বেশি মানুষের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে মারা গেছে ২২ হাজার ৮৯২ জন।
টিএম