উপকূলের কাছে ঝড়, বিপর্যয়কারী বন্যার শঙ্কায় মেক্সিকো-যুক্তরাষ্ট্র

মেক্সিকোর বাজা ক্যালিফোর্নিয়া উপদ্বীপ এবং যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া রাজ্যের দিকে ধেয়ে যাচ্ছে ক্যাটাগরি-৪ এর শক্তিশালী হ্যারিকেন হিলারি। যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় হ্যারিকেন সেন্টার শনিবার (১৯ জুলাই) হুঁশিয়ারি দিয়েছে, এই ঝড়ের কারণে বিপর্যয়কারী বন্যার কবলে পড়তে পারে বাজা ও ক্যালিফোর্নিয়া। কাল রোববার শক্তিশালী এ হ্যারিকেনটি উপকূলে আঘাত হানার সম্ভাবনা রয়েছে।
এদিকে ঝড়টি আঘাত হানার আগেই ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটি লস অ্যাঞ্জেলসের গৃহহীনদের নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেওয়ার কাজ করছে। এছাড়া বিভিন্ন জায়গায় তৈরি করা হয়েছে অস্থায়ী আশ্রয় কেন্দ্র।
হ্যারিকেন হিলারি প্রথমে শনিবার রাতে মেক্সিকোর বাজায় প্রবেশ করতে পারে। এরপর উত্তরদিকে সরে গিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ক্যালিফোর্নিয়ার দিকে যাবে। এরমাধ্যমে গত ৮৪ বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো ক্যালিফোর্নিয়ায় কোনো গ্রীষ্মমণ্ডলীয় ঝড়ের তাণ্ডব দেখা যেতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় হ্যারিকেন সেন্টার দক্ষিণ ক্যালিফোর্নিয়ার বিস্তৃত অঞ্চল— প্রশান্ত মহাসাগরীয় উপকূল থেকে শুরু করে অভ্যন্তরীণ পাহাড়ি এলাকা এবং মরুভূমিতেও ঝড়ের সতর্কতা জারি করেছে। কর্মকর্তারা ক্যালিফোর্নিয়ার কাতালিনা দ্বীপের বাসিন্দাদের সরিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনাও করছেন।
আরও পড়ুন>>> যুক্তরাষ্ট্রে ধেয়ে যাচ্ছে ঝড়, একদিনে এক বছরের বৃষ্টির শঙ্কা
লস অ্যাঞ্জেলস কাউন্টি বোর্ড অব সুপারভাইসরসের চেয়ারম্যান জেনিস হ্যান জানিয়েছেন তাদের এখানে কেউ কখনো ভাবেননি তারা গ্রীষ্মমণ্ডলীয় ঝড় নিয়ে কথা বলবেন। কারণ কেউ কখনো এ ধরনের কিছু দেখেননি। তিনি বলেছেন, ‘আমি মনে করি না আমাদের মধ্যে কেউ— বিশেষ করে আমি— ভাবিনি এখানে দাঁড়িয়ে কোনো হ্যারিকেন বা গ্রীষ্মমণ্ডলীয় ঝড় নিয়ে কথা বলব।’
এদিকে বৃহস্পতিবার থেকে শুক্রবারের মধ্যে ঝড়টি দ্রুত শক্তি সঞ্চার করে। বর্তমানে গতি কমে এলেও এখনো এটি ক্যাটাগরি-৪ হ্যারিকেন হিসেবেই শক্তি ধরে রেখেছে। সর্বশেষ ঝড়টির বাতাসের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ২১৫ কিলোমিটার।
শনিবার সকালের দিকে ঝড়টির অবস্থান ছিল মেক্সিকোর বাজা উপদ্বীপ থেকে ৩৯০ কিলোমিটার দূরে। এটি ১৩ কিলোমিটার বেগে উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে সরে যাচ্ছিল এবং ধারণা করা হচ্ছে আরও উত্তর দিকে সরে গিয়ে শক্তি সঞ্চার করবে।
সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ঝড়টি আঘাত হানবে কম ঘনবসতিপূর্ণ বাজা উপদ্বীপে। এরপর উত্তরপূর্ব দিকে সরে যাবে এবং এর প্রভাবে প্রচণ্ড বৃষ্টিপাত হবে। যার কারণে সৃষ্টি হতে পারে বন্যা। এ ঝড়ের কারণে এখন সীমান্তবর্তী শহর তিুজুয়ানার মানুষ অনেক ঝুঁকিতে আছেন। যেখানকার বাসিন্দারা পাহাড়ের পাশে বসবাস করেন। ঝড়টি মেক্সিকো ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের জন্যও বড় চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সূত্র: এপি
এমটিআই